- Home
- World News
- International News
- আর নিরাপদ নয় ৬ ফুটের সামাজির দূরত্ব, ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে করোনা ছড়াতে পারে এর প্রায় তিনগুণ
আর নিরাপদ নয় ৬ ফুটের সামাজির দূরত্ব, ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে করোনা ছড়াতে পারে এর প্রায় তিনগুণ
- FB
- TW
- Linkdin
এতদিন বলা হচ্ছিল হাঁচি, কাশি, নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বেরোনো ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে ছয় ফুট দূরত্ব পর্যন্ত।
এবার সামনে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন আবহাওয়ায়, ঠান্ডা গরমের তারতম্যে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে প্রায় ২০ ফুট পর্যন্ত।
ফলে সামাজিক দূরত্ব বিধির ক্ষেত্রে দু’জন মানুষের মধ্যে যে ৬ ফুটের দূরত্বের কথা বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে তা কোনও কাজে দেবে না বলেই মনে করছেন গবেষকরা।
গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, হাঁচি-কাশি বা সাধারণ কথাবার্তার সময়েও প্রায় ৪০ হাজার রেসপিরেটরি ড্রপলেট বেরোয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই ড্রপলেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে কয়েক মিটার থেকে শুরু করে প্রতি সেকেন্ডে কয়েক শো মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এই গবেষণার বিজ্ঞানীরা একটি কমপ্রিহেনসিভ গাণিতিক মডেলের সাহায্য নিয়েছেন। এরই মাধ্যমে রেসপিরেটরি ড্রপলেটের ইভাপোরেশন, হিট ট্রান্সফার এবং প্রোজেক্টাইল মোশন খতিয়ে দেখা হয়েছে বিভিন্ন তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং ভেন্টিলেশন পরিস্থিতিতে। এর থেকেই দেখা গিয়েছে কোভিড ১৯ ভাইরাসের রেসপিরেটরি ড্রপলেটের মাধ্যমে ট্রান্সমিশন পাথওয়ে শর্ট-রেঞ্জ ড্রপলেট কনট্যাক্ট এবং লং-রেঞ্জ এরোসল এক্সপোজারে বিভক্ত।
গবেষণা পত্রে জানানো হয়েছে, ‘বড় ড্রপলেট মাধ্যাকর্ষণ শক্তির জন্যে বেশি দূর পর্যন্ত যেতে পারে না, এবং বাতাসের উপরিস্তরেই থেকে যায়। অন্যদিকে ছোট ড্রপলেট দ্রুত বাষ্প হয়ে এরোসল পদার্থের রূপ নেয় এবং ভাইরাসকে বাতাসে ভাসমান রাখতে পারে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত। সেই কারণে সেন্টার ফর ডিজিজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের নির্দিষ্ট ৬ ফুটের সামাজি দূরত্ব নিরাপদ নাও হতে পারে কিছু আবহাওয়ায়। ঠান্ডা এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় ১৯.৭ ফুট পর্যন্ত ড্রপলেটের সাহায্যে ছড়াতে পারে নভেল করোনাভাইরাস।’
বিশ্বের একাধিক দেশ ‘আনলক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটু একটু করে শিথিল করছে লকডাউনের বিধিনিষেধ। এই প্রসঙ্গে 'হু'-র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস সতর্ক করেছেন, তাড়াহুড়ো করে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার চেষ্টা ডেকে আনতে পারে আরও বড় বিপর্যয়।
ঘেব্রেইসাস বলেন, “বিগত ৮ মাস ধরে আমরা এই মহামারির সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছি। এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে লড়তে মানুষ এখন ক্লান্ত হয়েছে পড়েছেন এবং তাঁরা এখন আগের মতো স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে চান। তবে কোনও দেশই এমন দাবি করতে পারে না যে, বিপর্যয়ের দিন ফুরিয়েছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল আরও বলেন, “এই ভাইরাসটি সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আমাদের সকলকেই আরও সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি জানান, যাঁদের “এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তাঁদের রক্ষা করতে হবে। এর জন্য চূড়ান্ত নজরদারি প্রয়োজন।
করোনার ওষুধ, প্রতিষেধক আসার পরেও যে করোনার প্রকোপ থেকে সহজে রেহাই মিলবে না এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেখানে তাড়াহুড়োয় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার চেষ্টায় ফলাফল যে আরও মারাত্মক হতে পারে, সে কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন হু-র ডিরেক্টর জেনারেল।