ফের জ্বলছে আমাজন, গতবারের চেয়েও ভয়াবহভাবে পুড়ছে পৃথিবীর ফুসফুস
গতবারের চেয়েও এই বছর আমাজন আরো ভয়াবহভাবে পুড়ছে। প্রকৃতি বিজ্ঞানী ও ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যম আমাজন বনাঞ্চলের দাবানল নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরছে। যদিও ব্রাজিল সরকার এমনটি স্বীকার করতে রাজি নয়। বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত পৃথিবীর ফুসফুসের ভবিষ্যত নিয়ে।
| Published : Aug 31 2020, 03:38 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
![](https://static-cf.akamaized.net/images/01djz0hj5f59hhx7pp9pw9xwy4/amazon-fire2-jpg.jpg?impolicy=All_policy&im=Resize=(690))
গত বছর এই রকম সময়ে দাউদাউ করে জ্বলছিল ব্রাজিলের আমাজন রেনফরেস্ট। টানা কয়েক মাস ধরে অসংখ্য দাবানলে জ্বলছিল গোটা অরণ্য। গাছপালা, বন সম্পদ তো বটেই, লাখে লাখে প্রাণী ঝলসে মারা গেছিল। পৃথিবীর ফুসফুস বলে পরিচিত আমাজনের বিস্তীর্ণ অংশ ঝলসে গেছিল।
বছর ঘুরতেই ফের একই চিত্র। আবারও নষ্ট হতে বসেছে পরিবেশের ভারসাম্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরের থেকে আরও বেশি খারাপ হতে চলেছে এই বছরের পরিস্থিতি।
গত বছর প্রথম এই অগ্নিকাণ্ডের কথা সামনে এনেছিল ব্রাজিলের ‘ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সি’। এ বছরও তাদের প্রকাশ করা ছবিতেই ধরা পড়েছে দাবানল। এবং দেখা যাচ্ছে, গত বছরের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি জ্বলছে আমাজন। শুধু ব্রাজিলেই ৬৮০৩টি অঞ্চল জ্বলছে আগুনে।
আশঙ্কা, এই আগুন আরও বাড়বে। হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে পরিস্থিতি। গত বছরের পরেও এবার আবার কী করে এতটা আগুন ছড়াল, তা নিয়ে ধন্দে অনেক প্রকৃতি বিজ্ঞানী। চিরহরিৎ অরণ্য আমাজনে প্রতিবছর এত আগুন কী করে লাগছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ।
উপগ্রহ চিত্র বলছে, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ব্রাজিলের অংশে পড়া আমাজনের ১৩ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি অঞ্চল পুড়ে ছাই। আমাজনের দাবানল আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।
অভিযোগ, কাঠ ব্যবসায়ীদের অবাধ ছাড়, জমি ও খনি মাফিয়াদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আমাজন পৃথিবীর প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন উৎপাদন করে। এক চতুর্থাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। তাই আমাজন অরণ্য ‘বিশ্বের ফুসফুস’।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের অগস্ট মাসে জ্বলেছিল আমাজন। কয়েক মাস ধরে চলা সেই দাবানল ঘিরে ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে প্রতিবেশি দেশগুলির কূটনৈতিক সংঘাত দেখা দেয়।
অভিযোগ ওঠে, কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে আমাজনের দুর্লভ খনিজ সম্পদ তোলার অনুমতি দিতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্রাজিলের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়।
এই বৃহত্তম বনাঞ্চল দক্ষিণ আমেরিকার ৯ টি দেশ জুড়ে বিস্তৃত। আমাজনের ৬০ শতাংশ রয়েছে ব্রাজিলে, ১৩ শতাংশ রয়েছে পেরুতে এবং বাকি অংশ কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম এবং ফ্রেঞ্চ গায়ানা জুড়ে ছড়িয়ে।
গত বছরের অগ্নিকাণ্ডের পরে গত কয়েক মাস ধরেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। আন্তর্জাতিক চাপও তৈরি হয়েছিল। তার পরেও ফের জ্বলছে আমাজন।
এবারো বলসোনারোকে নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। আমাজনে আগুন লাগার ঘটনাকে ডাহা মিথ্যা বলে রাতারাতি উড়িয়ে দিতে চাইলেন তিনি। রেন ফরেস্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনার অস্তিত্বের কথাই অস্বীকার করছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। বলছেন, যাঁরা এসব বলছেন, তাঁরা বনের ভিতর কোনও আগুন খুঁজে পাবেন না। এক সিকি হেক্টর বনও উজাড় হয়েছে বলে তাঁরা দেখাতে পারবেন না।