- Home
- World News
- International News
- অকুতোভয় আফগান মহিলাদের রুখতে ব্যর্থ তালিবানি বন্দুকও - খোদ রাজধানীতেই বিক্ষোভ, দেখুন
অকুতোভয় আফগান মহিলাদের রুখতে ব্যর্থ তালিবানি বন্দুকও - খোদ রাজধানীতেই বিক্ষোভ, দেখুন
প্রত্যেক মুহূর্তে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। অপহরণ হতে পারে, ঘটে যেতে পারে আরও ভয়ঙ্কর কিছু। কিন্তু, তারপরেও আফগান মহিলারা যেন একটাই মন্ত্র জানেন, 'মরার আগে মরব না ভাই মরব না'। তালিবান নেতৃত্ব যখন নতুন সরকার গঠন নিয়ে শেষ মুহূর্তের কাজ সারছে, সেই সময়ই শুক্রবার রাজধানী কাবুলে নতুন সরকারে মহিলাদের সমান অধিকার এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের দাবি জানিয়ে সমাবেশ করল আফগান মহিলা অধিকার কর্মীদের একটি দল, তালিবানি বন্দুকের সামনেই।
| Published : Sep 04 2021, 01:23 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
শুক্রবার প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে কাবুলের রাস্তায় বেশ কয়েকজন আফগান মহিলা নতুন আফগান সরকারে মহিলাদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ভূমিকা দাবি করেন। বিষয়টি তালিবান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিশ্চিত করতে হবে বলে জানায় তারা। মহিলাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের দাবিও জানান তারা।
বন্দুকধারী তালিবান যোদ্ধারা এগিয়ে গিয়েছিলেন এই মহিলা বিক্ষোভকারীদের দিকে। ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তালিব যোদ্ধাদের দেখা যাচ্ছে বন্দুক উঁচিয়ে মহিলাদের স্লোগান বন্ধ করার চেষ্টা করতে। কিন্তু, স্লোগান বা প্রতিবাদ কোনওটাই ভয় দেখিয়ে বন্ধ করতে পারেনি কট্টরপন্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার, প্রায় তিন ডজন আফগান মহিলা পশ্চিম হেরাত প্রদেশের গভর্নরের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। তারা আফগান মহিলাদের শিক্ষা এবং চাকরির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান। তালিবান দখলের পর নতুন সরকারের আমলেও মহিলাদের অধিকারের অগ্রগতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তালিবান সরকারে রাজনৈতিক প্রধান দেশ সামলানোর দায়িত্ব পেলেও, তার হাতে নীতি গ্রহণের কোনও ক্ষমতা থাকবে না। তাকে নির্ভর করতে হবে শুরা অর্থাৎ ধর্মীয় পরিষদের সিদ্ধান্তের উপরে। হেরাত সমাবেশের অন্যতম আয়োজক, আফগান নারী ফ্রিবা কাবরজানি বলেছিলেন, তারা মন্ত্রিসভা ও শুরা কমিটিতে মহিলাদের উপস্থিতির দাবি জানাচ্ছেন। নতুন সরকারে মহিলাদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ চাইছেন তারা।
১৫ অগাস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছিল তালিবানরা। কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি দাবি করেছিল তারা একটি 'অন্তর্ভুক্তিমূলক' সরকার গড়তে চায়। শুরায় তালিবান সদস্যদের সংখ্যাই বেশি হলেও হক্কানি নেটওয়ার্ক-সহ অন্যান্য আফগান উপজাতি নেতাদেরও স্থান দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। শুরায় মহিলা রাজনীতিকদের স্থান হবে না বলেই জানা গিয়েছে।
মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক নিয়মকানুন জারি নিয়ে প্রথম তালিবান শাসন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল। তবে দ্বিতীয়বারে তারা ইসলামি শরিয়া আইনের অধীনে মহিলাদের সকল অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে কার্যক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হয়ে কাজ করা সামিরা হামিদি টুইটারে দাবি করেছেন, তালিবানরা ব্যাঙ্ক, অফিস এবং সংবাদমাধ্যমে কাজ করা মহিলা কর্মীদের বাড়িতেই থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়ে আলাদা আলাদা করে পড়াশোনার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। মহিলাদের নেতৃত্বাধীন এনজিওগুলি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেগুলি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে তালিবানরা। বিশিষ্ট মহিলা অধিকার কর্মীদের ফোনে, মেসেজে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রথম তালিবানি শাসনে ইসলামী আইনের কঠোর ব্যাখ্যাকে নির্মমভাবে প্রয়োগ করেছিল তালিবানরা। মহিলাদের বাড়ির বাইরে কাজ করার, স্কুলে যাওয়ার অধিকার ছিল না। সবসময় মুখ ঢেকে রাখতে হতো বোরখায়। পুরুষ আত্মীয়ের ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়ার অধিকার ছিল না। নিয়ম ভাঙ্গলে, ধর্মীয় পুলিশ প্রকাশ্যে মারধর, অপমান এবং হত্যার মতো কঠোর সাজা দেওয়া হতো।