- Home
- World News
- International News
- নিষেধ মুখেই, করোনার পরও চিনে সাড়ম্বরে চলছে মধ্যযুগীয় বর্বর কুকুর-মাংসের উৎসব, দেখুন
নিষেধ মুখেই, করোনার পরও চিনে সাড়ম্বরে চলছে মধ্যযুগীয় বর্বর কুকুর-মাংসের উৎসব, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
সারা পৃথিবীতেই কুকুরকে বলা হয় মানুষের খুব কাছের বন্ধু। ব্যতিক্রম চিন। সেখানেও বহু মানুষ কুকুরকে পোষ্য হিসাবে দেখলেও, চিনের অনেক অংশেই এতদিন কুকুর ও বিড়ালকে গরু-ছাগল-মুরগির মতোই প্রাণীসম্পদ হিসাবে ধরা হত। অর্থাৎ, কুকুর-বিড়ালের মাংস বাণিজ্যযোগ্য ছিল। খাওয়া হত সেই মাংস। ভারতের নাগাল্যান্ডেও এই প্রথা একসময় ছিল, কয়েক বছর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উহানের ওয়েট মার্কেট থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সারা পৃথিবীতে মহামারি রূপে ছড়িয়ে পড়ার পর, এই বছর এপ্রিল মাসের শুরুতে চিন জানিয়েছিল, 'মানব সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কুকুর মানুষের বিশেষ সহযোগী প্রাণী হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিকভাবে কুকুরকে লাইভস্টক হিসাবে গন্য করা হয় না। চিনেও প্রাণিসম্পদ হিসাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ছিল। কিন্ত, এখন থেকে তা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হল।'
সেই ঘোষণার পর পশু অধিকার রক্ষাকর্মীরা আশা করেছিলেন, এই বছর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে ইউলিনের কুখ্যাত কুকুরের মাংসের উৎসব। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তা হল না।
উৎসব শুরুর দিন কয়েক আগে থেকেই ভারতে যেভাবে মুরগি নিয়ে যাওয়া হয় কাটার জন্য সেইরকম কুৎসিতভাবে কুকুরদের নিয়ে যাওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পশু অধিকার রক্ষা কর্মীরা, এই উত্সবটি বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। উত্তরায়ণ অর্থাৎ ২০ জুন থেকে চিনের ইউলিন-এ এই কুকুর মাংসের উৎসবের শুরু হয়। দশ দিন ধরে চলে এই উৎসব।
এই বছর অবশ্য উৎসবের আগে অনেক জায়গা থেকেই খাঁচায় বন্দি করে রাখা কুকুরদের উদ্ধার করেছেন চিনের পশু অধিকার রক্ষা কর্মীরা। অনলাইনে এই উৎসব বন্ধের দাবিতে সাক্ষর সংগ্রহও হয়েছে।
তারপরেও থামেনি বর্বরতা। অন্তত হাজার দশেক কুকুরকে এই ১০ দিনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বলে শোনা যায়।
কখনও জীবন্ত কুকুরকে সিদ্ধকরে ছাল ছাড়িয়ে কেটে কেটে বিক্রি করা হয়।
কোথাও জীবন্ত অবস্থায় ঝলসে বিক্রি করা হয় কুকুরের মাংস।
১০ দিন ধরে রক্তে ভেসে যায় ইউলিনের রাস্তাঘাট।
ইউলিন কিন্তু কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম নয়। একেবারে আধুনিক ঝাঁ চকচকে শহর। সেখানেই উৎসবের নামে চলে এই মধ্যযুগীয় নৃশংসতা।
শহরের নামি-দামি রেস্তোরাঁ-ও সামিল হয় বর্বরতায়।
রাস্তার অস্থায়ী দোকানেও বিক্রি করা হয় কুকুরের মাংস।
উৎসবের মূল প্যাভিলিয়নে নিজের নিজের কুকুরের মাংস সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। ভিড় করে কিনতে আসেন সাধারণ মানুষ।
রোস্ট অর্থাৎ ঝলসানো কুকুরের মাংস কেনার সুযোগ আছে।
চাইলে গোটা একটা কুকুর সিদ্ধ করিয়েও নিতে পারেন।
আবার একেবারে রান্না করা কারি অবস্থাতেও পাওয়া যায়।
ভারতে অনেকে যেমন জ্যান্ত মুরগি বেছে নিয়ে কাটতে দেন, তেমন জ্যান্ত কুকুর ছানা বেছে নিয়ে কাটিয়ে নেওয়ায়ও যায়।
চিন সরকারের ঘোষণার পর এই বছর এই বর্বরতায় সমাপ্তি ঘটবে বলে ভেবেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ইউলিনের ছবিটা বদলায়নি।
শুধু কুকুর নয়, এই শহরে বিড়ালের মাংসের উৎসব-ও রয়েছে।