- Home
- World News
- International News
- পঞ্জশিরে আদৌ তালিবান জিতল না পাকিস্তান - আকাশে ইসলামাবাদের ড্রোন, মাটিতে বিশেষ বাহিনী, দেখুন
পঞ্জশিরে আদৌ তালিবান জিতল না পাকিস্তান - আকাশে ইসলামাবাদের ড্রোন, মাটিতে বিশেষ বাহিনী, দেখুন
আফগানিস্তানে তালিবানদের দুর্গম গতির বিরুদ্ধে েতদিন েকমাত্র মাথা উচু করে দাড়িয়েছিল পঞ্জশির উপত্যকা। সোমবার সকালে সেই শেষ তালিবানবিরোধী দূর্গেরও পতন ঘটেছে। তালিবানরা পঞ্জশির উপত্যকা দখলের দাবি করেছে। ই প্রথম তালিবানদের হাতে গেল ই উপত্যকার দখল। তবে পাকিস্তান না থাকলে ববা বলা ভাল পাকিস্তানি সেনার ভরপুর সমর্থন না থাকলে রঞ্জশির উপত্যকা দখল সম্ভব হত না তালিবানদের পক্ষে, েমনটাই বলছেন আফগানিস্তান বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত তালিবানদের পিছনে পাকিস্তানের উন্মুক্ত সমর্থন দেখা গিয়েছে পঞ্জশিরে। তাই ই জয়কে তালিবানদের জয় না বলে পাকিস্তানেরক জয় বলাটাই ঠিক হবে বলছেন তারা।
| Published : Sep 06 2021, 07:11 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
সোমবার সকালে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ টুইট করে জানান, 'ভাড়াটে শত্রুর শেষ শক্ত ঘাঁটি' পঞ্জশির প্রদেশ তালিবানরা সম্পূর্ণভাবে জয় করেছে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে, আফগানিস্তান জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনীর এক পদস্থ কর্তাও পঞ্জশিরে তালিবানি দখলদারির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তালিবানরা উপকত্যকার সব সরকারি অফিসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, গভর্নর হাউসেও ঢুকে পড়েছে।
কিংবদন্তি মুজাহিদীন কমান্ডার আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমদ মাসুদই পঞ্জশির বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। তালিবানরা ঢুকে পড়ার পর তিনি এক নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রতিরোধ বাহিনী। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা পঞ্জশিরের আরেক বিশিষ্ট তালিবান বিরোধী নেতা আমরুল্লা সালে তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগান সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনীর জওয়ানরা, পুরোনো মুজাহিদিন বাহিনীর অভিজ্ঞ গেরিলা কমান্ডাররা এবং তালিবান বিরোধী েকাধিক উপজাতীয় শক্তির যোদ্ধারা মাসুদের আহ্বানে পঞ্জশিরে নর্দান অ্যালায়েন্সের পক্ষে েসে দাড়িয়েছিলেন। গড়ে উঠেছিল আফগানিস্তান জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী বা এনআরএফ।
তবে অত্যাধুনিক আমেরিকান অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত বিশাল তালিবান বাহিনীকে ঠেকানোর জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। মাসুদের কাছে মার্কিন কপ্টার-সহ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ ছিল। তবে আরও সরবরাহের প্রয়োজন ছিল। প্রথম তালেবানি শাসনের বিরুদ্ধে আহমদ শাহ মাসুদ যুদ্ধ করার সময়, তাজিকিস্তানে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র পেত নর্দান অ্যালায়েন্স। েবার কাবুল দখলেরও আগে আফগান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পঞ্জশির উপত্যকাকে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল তালিবানরা।
এনআরএফ নেতৃত্ব বহির্বিশ্বের কাছে সমর্থন চেয়েছিল। হামিদ সাইফির নামে প্রতিরোধ বাহিনীর েক কমান্ডার জানিয়েছিলেন আমেরিকা, ইউরোপ, চিন, রাশিয়া - কেউ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। আহমদ মাসুদ নিজে ওয়াশিংটন পোস্টে একটি নিবন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্সের কাছ থেকে অস্ত্র সহায়তা চেয়েছিলেন। তবে, গোটা বিশ্বই শুধু নীরবে দেখে গিয়েছে তালিবানি বর্বরতা।
এনআরএফ-কে কোন আন্তর্জাতিক শক্তি সাহায্য করছে না দেখেই, ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছিল পাকিস্তান। তারা যে বরাবরই তালিবানদের সহায়তা করেছে। তালিবান নেতৃত্ব মার্কিন আক্রমণের মুখে পালিয়ে পাকিস্তানেই আশ্রয় নিয়েছিল। তারা সেখানে পাক সেনার কাছ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণও পেয়েছে। েবার েকেবারে সরাসরি পঞ্জশিরে সেনা পাঠিয়ে তালিবানদের হাত শক্ত করল তারা।
রবিবারই পঞ্জশিরে তালিবানদের সঙ্গে পাক সেনার কাধে কাধ মিলিয়ে লড়াই করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে হত তালিবান পক্ষের যোদ্ধার কাছ থেকে মিলেছিল পাক সেনার পরিচয়পত্র। তারপর রবিবার রাতে পঢ্জশির দখলের জন্য পাক সেনার বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের বিমানে করে পঞ্জশির উপত্যকায় নামানো হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠল।
শুধু বিশেষ বাহিনীর সদস্যদেরই পাঠানো নয়, পাক সেনা তালিবানদের েয়ার সাপোর্টও দিয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার ভোর পর্যন্ত পাক বায়ুসেনার ড্রোন, পঞ্জশিরে লাগাতার বোমা বর্ষণ করেছে বলে খবর। আমাজ নিউজ ওই অঞ্চলের প্রাক্তন সাংসদ জিয়া আরিয়ানজাদকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পাকিস্তানি ড্রোন থেকে েদিন সকাল পর্যন্ত স্মার্ট বোমা ব্যবহার করা হয়েছে।
আর পুরো অপারেশন কাবুলে তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গেই বসে পরিচালনা করেছেন পাক গুপ্তচর সংস্থা, আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ। ফরাসি সাংবাদিক বার্নার্ড-হেনরি লেভি, টুইট করে জানিয়েছেন পঞ্জশির উপত্যকা থেকে পাকিস্থানি কমান্ডোদের সঙ্গে প্রতিরোধ বাহিনীর যোদ্ধাদের লড়াই চলছে। তবে শুধু পাকিস্তান নয়, পঞ্জশির প্রদেশ দখলে তালিবানদেরা সঙ্গেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল আল-কায়েদা জঙ্গি বাহিনীর সদস্যরাও, অভিযোগ করেছে জাতীয় প্রতিবোধ বাহিনী।
প্রথমবার, অর্থাৎ ১৯৯৯৬ থেকে ২০০১-ের মধ্যে তালিবান এবং পাকিস্তানের পঞ্জশির নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। ভারত-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ আহমদ শাহ মাসুদ এবং নর্দান অ্যালায়েন্সকে সমর্থন জানিয়েছিল। তারা না থাকলে তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার জন্য পায়ের তলায় মাটিই পেত না মার্কিন বাহিনী। তাই পঞ্জশির দখল শুধু েকটা েলাকা দখল হিসাবে নয়, বরং প্রতিরোধের প্রতীকের পতন হিসাবে পাকিস্তানের কাছে বড় কৌশলগত জয়।