- Home
- World News
- International News
- এবার তালিবানি ধর্ষণের শিকার পুরুষও - দেশ ছাড়ার টোপ দিয়ে তৈরি ফাঁদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে
এবার তালিবানি ধর্ষণের শিকার পুরুষও - দেশ ছাড়ার টোপ দিয়ে তৈরি ফাঁদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে
- FB
- TW
- Linkdin
আফগানিস্তানের একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই তালিবান যোদ্ধা, প্রথমে ওই সমকামী পুরুষটির বন্ধু হওয়ার ভান করেছিল। সেই সময় ওই সমকামী ব্যক্তি তালিবানদের ভয়ে আত্মগোপন করে ছিল। বন্ধুর ভান করা তালিব যোদ্ধারা তাকে বলেছিল তারা তাকে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।
ওই সমকামী পুরুষটির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত কথা বলা শুরু করেছিল তালিবান যোদ্ধাদুটি। অনলাইনে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে কথা হয়েছিল দুই পক্ষে। তারপর সমকামী পুরুষটি কাবুলে তাদের সঙ্গে দেখা করতে সম্মত হয়েছিলেন।
কিন্তু, দেখা হওয়ার পরই স্বমূর্তি ধারণ করেছিল তালেবান সদস্যরা। প্রথমে তাকে বেধড়ক মারধর করে তারা। তারপর তাকে পালা করে পায়ু ধর্ষণ করে তারা। এখানেও থামেনি তারা। ওই সমকামী পুরুষটিকে তারা তার বাবার ফোন নম্বর দিতে বাধ্য করেছিল। তারপর, তার বাবাকে ফোন করে জানিয়েছিল, তার ছেলে সমকামী।
আফগান এলজিবিটিকিউ রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট তথা ওই সমকামী পুরুষটির বন্ধু আর্টেমিস আকবরি ই ঘটনাটি সামনে এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তালিবানরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষ বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে প্রোফাইল বা অ্যাকাউন্ট তৈরি করছে। তারপর এই সম্প্রদায়ের আত্মগোপনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাচ্ছে। তারপর তাদের সামনে এনে লাঞ্চিত করছে।
তালিবান দেশ দখলের পর আফগান এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে আফগানিস্তানের গোপন সমকামী সম্প্রদায়ের এক পুরুষ বলেন, তালিবান শাসনের অধীনে তারা একটি দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে কী হবে, সবসময় সেই ভয় নিয়ে রয়েছেন।
তবে আরেক আফগান এলজিবিটিকিউ অধিকার কর্মী নেমাত সাদাত দাবি করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সমকামী এবং উভকামী পুরুষদের টোপ দিয়ে ফাঁদে ফেলার অনুশীলন তালিবান আমলে নতুন শুরু হয়নি। আগের সরকারের সময়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে সমকামী পুরুষদের হেনস্থা করার প্রচলন ছিল।
সেইসময় জাতীয় নিরাপত্তা কর্তারা ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে বন্ধুত্ব পাতিয়ে দেখা করতে চাইতেন। তারপর মূলত তাদের শহরের বাইরে কোথাও নিয়ে গিয়ে হত্যা করে দেহ কোনও নির্জন জায়গায় ফেলে দেওয়া হতো। তিনি আরও বলেন, আশরাফ ঘানি এবং হামিদ কারজাইয়ের অধীনেই যদি ই অবস্থা থাকে আফগান সমকামীদের, তাহলে তালিবানি শাসনে কী হতে চলেছে, তা কল্পনা করাই যায়।
হামিদ জাহের নামে এক আফগান লেখক তথা সমকামী অধিকারকর্মীও সাদাতকে সমর্থন করে বলেছেন, বরাবরই সমকামীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলাপ হওয়া পুরুষদের সঙ্গে দেখা করার পরই ভ্যানিস হয়ে যায়। আসলে তালেবানরাও একই কৌশল ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, তালিবানরা ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ বন্ধ না করে দিলে, তারা সেগুলি সমকামী-উভকামীদের গ্রেফতারের জন্য ব্যবহার করবে।
এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালিবানরা। মহিলাদের উপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তা সকলেই জানেন। আর সমকামী হওয়ার শাস্তি ছিল সোজা মৃত্যুদণ্ড। চলতি বছরের জুলাই মাসেই, ক্ষমতায় আসার আভাস পেয়েই এক তালিবান বিচারক সমকামী পুরুষদের, হয় পাথর মেরে মেরে কিংবা নয় ফুট উচু প্রাচীরের নিচে ফেলে পিষে মারার হুমকি দিয়েছিলেন।
আর্টেমিস আকবরি, এখন তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি সেখান থেকে জানিয়েছেন, তালিবানরা গোটা বিশ্বকে যতই বলার চেষ্টা করুক না কেন, যে তারা বদলে গিয়েছে। নারীদের অধিকার বা মানবাধিকার নিয়ে তারা মধ্যপন্থা অবলম্বন করবে। তারা মিথ্যা বলছে। তালিবান বদলায়নি, কারণ তাদের মতাদর্শ বদলায়নি। আফগানিস্তানে সমকামীরা ভয় পেয়েছে, তারা জানে না ভবিষ্যতে তাদের কি হবে, তাই তারা সকলে আত্মগোপন করে আছে।