- Home
- World News
- International News
- চিনে থেকে ভারতে ব্যবসা সরাতে ভর্তুকির টোপ, বেজিংকে এবার বড়সড় ঝটকা দিল জাপান
চিনে থেকে ভারতে ব্যবসা সরাতে ভর্তুকির টোপ, বেজিংকে এবার বড়সড় ঝটকা দিল জাপান
- FB
- TW
- Linkdin
একের পর এক ঝটকা খেয়েই চলেছে চিন। ভারতের পর এবার জাপানও চিনের ওপর স্ট্রাইক করার প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে।
এবার জাপানের থেকে ধাক্কা খেল বেজিং। জাপান সরকার জানিয়েছে চিন থেকে ভারতে ব্যবসা সরিয়ে নিয়ে আসলেই সেই কোম্পানিকে বিশেষ ভর্তুকি দেবে জাপান সরকার। একই ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশের জন্যও।
জাপানি উৎপাদকারী সংস্থা, যেগুলির মূল ব্যবসা চিনে রয়েছে, সেখান থেকে ভারত বা বাংলাদেশে যদি তারা ব্যবসা স্থানান্তরিত করে, তবে ভর্তুকি মিলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে জাপান। জাপানি বিভিন্ন উৎপাদকারী সংস্থার শাখার প্রসার ঘটাতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে টোকিও।
জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক জানিয়েছে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত যে কোনও দেশেই এই কোম্পানিগুলি নিজেদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারে। তবে তার জন্য চিনের মাটি ছাড়তে হবে। যদি তা করতে পারে ওই কোম্পানিগুলি তাহলে জাপান সরকার অর্থনৈতিক দিক থেকে সব রকম সাহায্য করবে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় যেসব কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে, তাদের জন্য ২০২০ সালে একটি বিকল্প বাজেট প্রস্তাব রেখেছে জাপান। যেখানে ২৩.৫ বিলিয়ন ইয়েনের ঘোষণা করা হয়েছে। জাপান চাইছে কোনও একটি বিশেষ দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে না থেকে, ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাতে। বলাই বাহুল্য এখানে চিনকেই টার্গেট করেছে টোকিও।
জাপানি কোম্পানিগুলির সাপ্লাই চেন বর্তমানে চিনের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। সেই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে চাইছে জাপান সরকার। এমনিতেও করোনা পরিস্থিতির জেরে বেশ কিছুটা সেই নির্ভরশীলতা কমেছে।
এই ভর্তুকির ঘোষণা হতেই বেশ সাড়া পড়েছে জাপানের শিল্প মহলে। আবেদন পত্র জমা পড়তে শুরু করেছে। প্রথম ধাপের আবেদন পত্র নেওয়া হয়েছে জুন মাসে।
ইতিমধ্যেই ভিয়েতনাম ও লাওসে কোম্পানি স্থানান্তরিত করার জন্য ৩০টি উৎপাদনকারী সংস্থাকে প্রজেক্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এজন্য ১০ বিলিয়ন ইয়েন ভর্তুকি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
জাপানের মন্ত্রালয় জানিয়েছে যে, তাঁরা চিন ছেড়ে ভারতে যাওয়া ম্যানুফ্যাকচারিং হাব গুলোকে আর্থিক সাহায্য করছে। মন্ত্রালয় এরজন্য ভারত আর বাংলাদেশকে বিশেষ রুপে পছন্দ করেছে।
জুন মাসেই জাপান সরকার জানিয়েছিল , চিন ছেড়ে তাঁদের কোম্পানি গুলো ভারতে গেলে তাঁদের আর্থিক সহায়তা করা হবে। চিন ছেড়ে ভারতে যাওয়া ৩০ টি কোম্পানিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করেছিল জাপান সরকার। কিন্তু এবার উদীয়মান সূর্যের দেশ চিনকে বড়সড় ঝটকা দিয়ে কোম্পানি নামের তালিকা আরও বড় করেছে।
ভারতের সঙ্গে জাপানের বরাবরই সুসম্পর্ক রয়েছে। চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে সেপ্টেম্বরেই সামরিক চুক্তি করবে এই দুই বন্ধু রাষ্ট্র বলেও জানা গিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে শুরুর দিকেই বৈঠক করার কথা রয়েছে দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের।
চিন ও ভারতের সীমান্ত বিরোধের কারণে যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে, তার দিকে নজর রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেক্ট্রেটরি অব স্টেট মাইক পম্পেও জানিয়েছেন যে, চিনের কর্মকাণ্ড মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়৷ সেই কারণে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান দক্ষিণ কোরিয়ার এবং আমেরিকা একত্রিত হচ্ছে। এরা সকলেই ভারতের পাশে থেকে চিনের বিরোধ করবে৷
এদিকে ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে ফের মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা একটা ‘ভয়ানক জায়গায়’ এসে দাঁড়িয়েছে। এবং চিন এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের নানা পদক্ষেপে যত উত্তেজনা বাড়ছে, তত কাছাকাছি আসছে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব দেশ। রফতানি ক্ষেত্রে চিনা আধিপত্য কমাতে শক্তিশালী সাপ্লাই চেন খুলতে পারে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। এ জন্য তারা একটি সাপ্লাই চেন রেসিলিয়েন্স ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।
আমেরিকা, জাপান অস্ট্রেলিয়া আর ভারত এখন কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ বা কোয়াড নামে একটি গ্রুপ খুলেছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য।
এর আগে করোনার অযুহাত দেখিয়ে শি জিনপিংয়ের জাপান সফর বাতিল করেছে টোকিও। প্রাথমিক ভাবে এপ্রিল মাসে সেই সফর হওয়ার কথা থাকলেও করোনার জেরে তা পিছিয়ে গিয়েছিল। তবে পরবর্তীতেও এই সফরের উপর প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলিয়ে রেখেছে জাপান।