- Home
- World News
- International News
- 'রাম ছিলেন নেপালি', ভারতের তিন এলাকা দখলের পর এবার অযোধ্যার দাবিও তুলল নেপাল
'রাম ছিলেন নেপালি', ভারতের তিন এলাকা দখলের পর এবার অযোধ্যার দাবিও তুলল নেপাল
ভারত ও নেপালের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক এই মুহূর্তে নষ্টের মুখে। এর আগেই কালাপানি-সহ তিনটি বিরতর্কিত এলাকা জুড়ে সরকারি মানচিত্র প্রকাশ করেছিল কে পি শর্মা ওলি সরকার। তাই নিয়ে দিল্লি ও কাঠমান্ডুর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। তারমধ্যেই এবার রাম-কে 'নেপালি' বলে দাবি করে অযোধ্যার দাবি তুললেন নেপালি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।
- FB
- TW
- Linkdin
চলতি বছরে প্রবাদপ্রতীম নেপালি কবি ভানুভক্ত আচার্যের ২০৬তম জন্মবার্ষিকি। ভানুভক্ত নেপালি ভাষায় বাল্মীকি রামায়ণ-এর অনুবাদ করেছিলেন। নিজ বাসভবনে ভানু জয়ন্তী উপলক্ষে এক বক্তব্য রাখতে গিয়ে সোমবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে রাম এসে সীতাকে বিয়ে করেছিলেন, এই ধারণাটি ভ্রান্ত। কারণ রাম ভারতীয় ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন নেপালি।
তবে এখানেই শেষ নয়, অযোধ্যা, অর্থাৎ যেখানে রামের জন্ম বলে বর্ণনা করা হয়েছে বাল্মীকি রামায়নে, সেই অযোধ্যাও উত্তরপ্রদেশে নয়, নেপালেই অবসস্থিত বলে দাবি করেছেন কে পি শর্মা ওলি। তিনি বলেন, ভারতের দাবি অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা থেকে নেপালের জনকপুরে সীতাকে বিয়ে করতে এসেছিলেন রাম। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মানুষ কীভাবে একদূরে বিয়ে করতে এসেছিল? সেই সময় তো ফোন ছিল না তারা কীভাবে যোগাযোগ করত - বলে ব্যঙ্গও করেছেন তিনি। এরপরই তিনি বলেছেন, সেই সময়ে শুধুমাত্র নিকটবর্তী রাজ্যগুলির মধ্য়েই এই ধরণের বিবাহ হত। বিয়ে করার জন্য কেউ এতদূর ভ্রমণ করতেন না।
তাঁর দাবি, রাম-রাজ্য অযোধ্যা আসলে ছিল নেপালের জনকপুরের পশ্চিমে এক বাল্মিকি আশ্রমের কাছে। জায়গাটি এখন নেপালের বীরগঞ্জের থোরি নামে পরিচিত। তিনি আরও দাবি করেছেন, ওই বাল্মীকি আশ্রম ছিল ঋষি ঋষ্যশৃঙ্গের। এই ঋষিই রামের পিতা দশরথের অনুরোধে পুত্রেষ্টী যজ্ঞ করেছিলেন। বর্তমানে বিহারের পশ্চিম চম্পারন জেলায় বাল্মিকিনগর নামে এখনও একটি জায়গা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এই বাল্মিকীনগরের কিছু অংশ নেপালেও রয়েছে।
এরপরই তিনি ভারতের বিরুদ্ধে 'ভুয়ো অযোধ্যা তৈরি'র অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, ভারত নেপালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দখল করেছে। নেপালি প্রধানমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ভারতের 'অযোধ্যা' ঘিরে বিরাট বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু, থোরি গ্রামে তাঁদের অযোধ্যা নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা নেই।
স্বাভাবিকভাবেই কেপি শর্মা ওলির এই বিবৃতি ভারত-নেপালের সম্পর্কের উত্তেজনাকে আরও বাড়াবে। বস্তুত কাঠমান্ডুরই রাজনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্র থেকে নেপালি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা শুরু হয়েছে। ওলি-বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী উত্তেজনা কমানোর বদলে নেপাল-ভারত সম্পর্ক আরও নষ্ট করতে চাইছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের 'ভিত্তিহীন' বিবৃতি অপ্রত্যাশিত বলে মত শিক্ষাবিদদের।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি এখন তার দল নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যেই দারুণ চাপে রয়েছেন। প্রচন্ড-সহ তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতারা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে একজোট হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ওলির সাম্প্রতিক ভারতবিরোধী মন্তব্য 'রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয় এবং কূটনৈতিকভাবেও অনুপযুক্ত'। অন্যদিকে চিনের প্রশ্রয়ে কে পি শর্মা ওলি পাল্টা অভিযোগ করেছেন, দিল্লির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলের কিছু নেতা তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।