- Home
- World News
- International News
- নতুন গবেষণায় মহামারী শেষের ইঙ্গিত দিচ্ছে, করোনা আক্রান্ত ৪০ শতাংশ মানুষই উপসর্গ বিহীন
নতুন গবেষণায় মহামারী শেষের ইঙ্গিত দিচ্ছে, করোনা আক্রান্ত ৪০ শতাংশ মানুষই উপসর্গ বিহীন
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান ফ্রান্সিসকোতে সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ মনিকা গান্ধী বলেছেন একসঙ্গে বেশি মানুষ একসঙ্গে সংক্রমিত হলে ব্যক্তির পক্ষেও যেমন ভালো তেমনই উপকারী সমাজের পক্ষে। কারণ তিনি মনে করছেন হার্ড ইমিউনিটির পথ দিয়ে নতুন একটি রাস্তা তৈরি করতে চলেছে যেখানে অধিকাংশ মানুষই সংক্রমিত হবেন। কিন্তু তারও মধ্যেই রোগটি তীব্রভাবে বিকাশ লাভ করবে না। আর সেই কারণে মহামারিটিও শেষ হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে। কারণ তিনি সমীক্ষা করে দেখেছেন বেশ কয়েকটি জায়গায় আক্রান্তের ৪০ শতাংশই উপসর্গবিহীন। আর তাতেই তিনি মনে করছেন ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে করোনাভাইরাস।
- FB
- TW
- Linkdin
বিশেষজ্ঞ মনিকা গান্ধীর কথায় গত সাত মাস ধরে ক্রমাগত তাণ্ডব চালিয়ে গেছে করোনাভাইরাস। বিশ্ব জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক লক্ষ পার হয়েছে। মত্যুও হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের। তারপরই গান্ধীর সমীক্ষায় ধরা পড়েছে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রীয় হতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস।
প্রথম থেকে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন মনিকা গান্ধী। তিনি দেখেছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষেকও কোনও রকম উপসর্গ নেই। বোস্টনে গৃহহীন ১৪৭ জনের মধ্যে ৮৮ শতাংশই উপসর্গবিহীন। একই ছবি টাইসন ফুডস পোলট্রি প্ল্যান্টে। সেখানে সংক্রমিত ৪৮১ জনের মধ্য ৯৫ শতাংশই উপসর্গবিহীন।
তারপরই তিনি জানতে চেষ্টা করেন উপসর্গ বিহীন ব্যক্তিদের মধ্যে কী ছিল যাঁরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আর অসুস্থতার কারণ জানতে গিয়েই হাতে পান নতুন তথ্য। তিনি লক্ষ্য করে দেখেন হার্ড ইমিউনিটি নতুন পথ তৈরি করতে চলেছে যেথানে জনগণের অধিকাংশ মৃদু উপসর্গ যুক্ত। তাই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লেও মহামারী শক্তি হারিয়ে ফেলে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের সান ফ্রান্সিসকোতে সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ মনিকা গান্ধী জানিয়েছেন উচ্চ সংক্রামক সংক্রমণ ভালো জিনিস। ব্যক্তির পক্ষেও ভালো আর সমাজের পক্ষেও ভালো।
সম্প্রতিকালে লক্ষ্য করা গেছে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা আংশিকভাবে রোগ প্রতিহত করতে সক্ষম।
কিন্তু যখন এটি প্রথম মানুষের মধ্যে দেখা গিয়েছিল তখন এই মানুষ এটি প্রতিহত করতে সক্ষম হয়নি। তাঁর কথায় গত ৩১ ডিসেস্বর থেকেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে বিশ্ব জনসংখ্যার একটি অংশের মধ্যে 'মেমোরি টি' কোষগুলি বর্তমানে অনেকটাই সক্রিয়। যা ছোট থেকেই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। পাশাপাশি হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছে।
জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউ অব হেলথ-এর ডিরেক্টর ফ্রান্সিস কলিন্স গত সপ্তাহে বলেছিলেন প্রাথমিকভাবে মনে করা যেতে পারে কিছু লোক ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই তাঁদের মধ্যে মারাত্ম অসুস্থ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে এখনও আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের হবেষর হান্স গুস্তাফ লজংগ্রেন মনে করেন, বার্সেলোনা, বোস্টন উহান ও অন্যান্য বড় শহরগুলির মানুষদের অ্যান্টিবডি রয়েছে। যা বর্তমানে রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছে। তবে টি কোষ থেকে আংশিক সুরক্ষা পাওয়া গেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয় বলেও মনে করছেন তাঁরা।
.
তবে ইতিমধ্যেই 'টি কোষ' নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানতে চাইছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কতটা কার্যকর 'টি কোষ'।
একটি গবেষণা আবার দেখাচ্ছে যে দুই বা পাঁচ বছর আগে সাত ধরেন প্রতিষেধক প্রদান করা হয়েছিল, তার সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার। নিউমোনিয়া প্রতিষেধক করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ২৮ শতাংশ হ্রাস করতে সক্ষম। আর পোলিয়র প্রতিষেধক ৪৩ শতাংশ হ্রাস করতে সক্ষম।
মনিকা গান্ধী আগে মূলত কাজ করতেন এইচআইভি নিয়ে। বর্তমানে তিনি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রচুর নথি বিশ্লেষণ করছেন। খতিয়ে দেখতে চাইছেন মুখোস বা নিরাপদ দূরত্ব করোনা সংক্রমণ রুখতে কতটা সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে।
সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্রে গান্ধী লিখেছেন মহামারীটি প্রথম থেকে যেসব এলাকায় প্রকট আকার নিয়েছিল সেখানে বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক পরেন না। তারপরেও সংক্রমিতদের মধ্যে ১৫ শতাংশ ছিল উপসর্গ বিহীন। পরবর্তীকালে যখন মানুষ মাস্কের ব্যবহার শুরু করল তখন দেখা গেল ৪০-৫০ শতাংশ মানুষ উপসর্গবিহীন।
তিনি আরও বলেন এমনটা অনুমান করা ঠিক নয় যে করোনাভাইরা নিজে থেকে সরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।