- Home
- World News
- International News
- ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ৬৭, মৃত ৭ - করোনার পর চিনে ছড়াচ্ছে বুনিয়া ভাইরাস
ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ৬৭, মৃত ৭ - করোনার পর চিনে ছড়াচ্ছে বুনিয়া ভাইরাস
সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে সারা বিশ্বে রাজ করছে করোনাভাইরাস মহামারি। ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রামিত এবং মৃত্যু হয়েছে ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষের। মহামারির ভয়ের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই যখন বিশ্বজুড়ে মানুষ বাঁচার চেষ্টা করছেন, তখনই ফের নতুন এক সংক্রামক রোগের হুমকির কথা জানালো চিন। উহান থেকে কোভিড ছড়ানোর পর এবার চিনে ক্রমে বাড়ছে এঁটেল পোকা বা এঁটুলি বাহিত এক নয়া ভাইরাসের প্রকোপ।
- FB
- TW
- Linkdin
চিনা সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, এই এঁটুলি বাহিত নয়া ভাইরাস সেই দেশের প্রায় ৬৭ জন মানুষের দেহে সংক্রামিত হয়েছে এবং অন্তত ৭ জন চিনা নাগরিকের ইতিমধ্যেই এই সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে। চিনা বিজ্ঞানী, গবেষক এবং চিকিৎসকরা মনে করছেন প্রাথমিকভাবে এই ভাইরাস এঁটুলি থেকে মানুষের দেহে সঞ্চারিত হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এখন তা মানবদেহ থেকে মানবদেহে ছড়াচ্ছে।
এই নতুন ভাইরাসটির নাম 'সিভিয়ার ফিভার উইদ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম' ভাইরাস বা সংক্ষেপে এসএফটিএস ভাইরাস। প্রথম সারির চিনা দৈনিক 'গ্লোবাল টাইমস'-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনের পূর্ব দিকের প্রদেশ জিয়াংসু-তে ইতিমধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকে ৩৭টিরও বেশি এসএফটিএস ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা দেখা গিয়েছে। এরপর চিনের পূর্ব দিকেরই আনহুই প্রদেশেও এই ভাইরাস সংক্রমন শুরু হয়েছে। এই প্রদেশে ২৩ জন নতুন করে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে এসএফটিএস কোনও নতুন রোগ নয়। ২০০৯ সালেই চিনের মধ্যাংশে এই ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। ২০১১ সালেই এই ভাইরাস-এর প্যাথোজেনটি বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা। এই প্যাথোজেনটি করোনা নয়, বুনিয়াভাইরাস পরিবারের। এই বর্গভুক্ত ভাইরাস প্যাথোজেন সাধারণত যুক্তপদী পোকামাকড় কিংবা ইঁদুড়ের মতো রোডেন্ট শ্রেণীভুক্ত প্রাণীদের দেহে দেখা যায়।
চিন ছাড়াও জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ান-এও এই ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা দেখা গিয়েছে। এই ভাইরাল সংক্রমণে মৃত্যুর হার ১২ শতাংশ। তবে কোথাও কোথাও সংক্রমণের মাত্রা বেশি হলে মৃত্যুর হার ৩০ শতাংশও হয়েছে।
চিনে বর্তমানে যে সংক্রমণ হচ্ছে, তাতে রোগীদের দেহে জ্বর এবং কাশির মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। চিকিত্সার সময় দেখা যাচ্ছে রোগীর রক্তে হুহু করে প্লেটলেট এবং লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এই ভাইরাল সংক্রমণ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে সময় লাগছে অন্তত একমাস। ডাক্তাররা জানিয়েছেন এসএফটিএস ভাইরাস সংক্রমণের অন্যান্য লক্ষণগুলি হল মাথা ব্যথা, অবসাদ এবং পেশীর ব্যথা।
২০০৯ সালে মধ্য চিনে যখন প্রথমবার এই ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল, সেই সময় এঁটেল পোকা থেকেই মানব দেহে এই ভাইরাস সঞ্চারিত হয়েছিল। তবে এইবার মানবদেহ থেকেই অন্য মানুষের দেহে সংক্রমণ হচ্ছে বলে মনে করছেন চিনের ডাক্তার গবেষকরা। তাঁদের দাবি আক্তান্ত ব্যক্তির রক্ত বা শ্লেষ্মার মাধ্যমেই এই ভাইরাস এক দেহ থেকে আরেক দেহে ছড়িয়ে পড়ছে।
তবে এঁটুলির কামড়ই এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রধান পথ। তাই মানুষ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্ক থাকলে এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেই জানাচ্ছে চিনা কর্তৃপক্ষ।