- Home
- World News
- International News
- সাম্প্রতিককালের ৭টি বড় বিমান দুর্ঘটনা, একটি ভারতের - কী ঘটেছিল, দেখুন ছবিতে ছবিতে
সাম্প্রতিককালের ৭টি বড় বিমান দুর্ঘটনা, একটি ভারতের - কী ঘটেছিল, দেখুন ছবিতে ছবিতে
- FB
- TW
- Linkdin
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর লায়ন এয়ারের ফ্লাইট ৬১০ (Lion Air 610) ভেঙে পড়েছিল জাভা সাগরে (Java Sea)। ইন্দোনেশিয়ার (Indonesia) জাকার্তার সোয়েকার্নো-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Soekarno-Hatta International Airport in Jakarta) থেকে ওড়ার ১৩ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়েছিল বিমানটি। মৃত্যু হয় বিমানে থাকা ১৮৯ জনেরই। দুর্ঘটনার প্রায় এক বছর পর তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, বিমানের 'ম্যানুভরিং ক্যারেক্টেরিস্টিকস অগমেন্টেশন সিস্টেম (MCAS)' সফ্টওয়্যারটি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পাইলটদের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে সেটি বিমানের নাককে নিচের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। পাইলট এবং ক্রুরাও বিমানটি টেক-অফের আগে এবং টেক-অফের পরে, সেই ত্রুটি উপলব্ধি করতে পারেননি। এটি ছিল বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স (Boeing 737 Max Aircraft) বিমানের সঙ্গে জড়িত প্রথম দুর্ঘটনা।
২০১৯ সালের ১০ মার্চ ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা (Addis Ababa, Ethiopia) থেকে ওড়ার ছয় মিনিটের মধ্যে ভেঙে পড়েছিল ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩০২ (Ethiopian Airlines Flight 302)। বিমানটি প্রায় ৭০০ মাইল প্রতি ঘন্টা বেগে বিমানবন্দর থেকে ৪০ মাইল দূরে আছড়ে পড়ে। বিমানে থাকা ১৫৭ জনের সবাই নিহত হন। এটিও ছিল বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান। এরপরই এই বিশেষ মডেলের সব বিমানগুলি বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ত্রুটি সংশোধনের জন্য। এই ক্ষেত্রেও পাইলটদের অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে এমসিএএস ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমের (MCAS flight control system) ত্রুটির বিষয়টি উঠে এসেছিল।
উড়ানের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে রহস্যময় দুর্ঘটনা। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩৭০ (Malaysia Airlines Flight 370)। সেই সময় বিমানটিতে ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই ভারত মহাসাগরে (Indian Ocean) অবস্থিত ফরাসি দ্বীপ রেইউনিয়নের (French island of Reunion) একটি সৈকতে এই বিমানের ধ্বংসাবশেষের প্রথম টুকরোটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। তারপর থেকে, দুই ডজনেরও বেশি ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে, মালয়েশিয়া সরকার এই বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জারি করে বলেছিল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই সম্ভাবত বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। তবে বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার সঠিক কারণ তারা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি। এই নিয়ে একটা রহস্য রয়েই গিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছিল, কেউ আবার বলেন পাইলট মাঝপথে আত্মঘাতী হয়েছিলেন।
২০১৪ সালের ১৪ জুলাই পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) ভেঙে পড়েছিল মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৭ (Malaysia Airlines Flight 17)। বিমানে থাকা ২৯৮ জনেরই মৃত্যু হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) বাসিন্দা। ডাচ তদন্তকারীদের দাবি ছিল, বিমানটিকে পূর্ব ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার (Russia) তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছিল। ২০১৬ সালে আরেকটি তদন্তে বলা হয়েছিল, ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছিল রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ওই বথরই ইউক্রেনের ক্রিমিয়া (Crimea) নিজেদের দেশের মানচিত্রে সংযুক্ত করেছিল রাশিয়া। আর বর্তমাবে গোটা ইউক্রেনই কব্জা করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
২০১০ সালের ২২ মে, একটি এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস (Air India Express) বিমান ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরের (Mangalore Airport) রানওয়ে থেকে পিছলে একটি খাদে পড়ে গিয়েছিল। তৎক্ষণাৎ বিমানটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। মোট ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রাণ বেঁচেছিল মাত্র ৮ জন যাত্রীর। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষ কারণ হিসাবে ক্যাপ্টেনে ও ফার্স্ট অফিসারের কিছু গাফিলতির কথা উঠে এলেও, পরে দেখা গিয়েছিল, ম্যাঙ্গালোরের রানওয়ে 'টেবলটপ' প্রকৃতির হওয়ার কারণই মূলত বিমানটিকে দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
গত এক দশকে চিনে কোনও বড় বিমান দুর্ঘটনা না ঘটলেও, তার আগে চিনেও কয়েকটি বড় মাপের বিমান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৯৪ সালে, চায়না নর্থওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ২৩০৩ (China Northwest Airlines Flight 2303) জিয়ান (Xi'an) থেকে গুয়াংজু (Guangzhou) যাওয়ার পথে ভেঙে পড়েছিল। জিয়ান থেকে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়েছিল টুপোলেভ ১৪৫এম (Tupolev 154M) বিমানটি। ওড়ার মাত্র ২৪ সেকেন্ড পরই পাইলটরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এরপরই বিমানটি হঠাৎ বাম দিকে হেলে গিয়ে নিচে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন যাত্রী এবং ১৪ জন ক্রু সদস্য - মোট ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১০ সালে, চিনের হেনান এয়ারলাইন্সের একটি এমব্রেয়ার ই-১৯০ (Henan Airlines Embraer E-190) আঞ্চলিক জেটবিমান, কম দৃশ্যমানতার কারণে ইচুন বিমানবন্দরের (Echun Airport) নামার ঠিক আগে ভেঙে পড়েছিল। দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ৯৬ জনের মধ্যে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সোমবারের আগে এটাই ছিল চিনের শেষ প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা।