এই জলে নামলেই পাথর হয়ে যায় পাখিরা, অদ্ভুত রহস্যে মোড়া নেট্রন লেক
- FB
- TW
- Linkdin
লেক নেট্রনের কাছে গেলেই চোখে পড়বে এর পাড়ের সারি সারি পাথরের পশুপাখির মূর্তি। দেখে মনে হবে নিখুঁত ভাস্কর্য। অথচ ঠিক এক মৃত্যুপুরীর মতো থমথমে পরিবেশ সেখানে।
দেখতে সুন্দর অথচ ভয়ঙ্কর এই হ্রদটি আফ্রিকার তানজানিয়ায় অবস্থিত। লবণাক্ত হ্রদটির নাম ‘নেট্রন’। দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২২ কিলোমিটার।
বিজ্ঞানীরা বলছেন বছরের অধিকাংশ সময় এই হ্রদের জলের তাপমাত্রা ৬০° সেলসিয়াস থাকে। এর ফলে জল দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায় আর তলদেশে পড়ে থাকে জলের মতো তরল লাভা।
সোডিয়াম ও কার্বনেট এর জন্য এই হ্রদে এমন এক অণুজীব জন্ম নেয় যার জন্য এই হ্রদের জলের রং হয় লাল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পশুপাখিরা এই রঙে আকৃষ্ট হয়ে হ্রদে নামে। যার ফলে মৃত্যু হয় তাদের।
এই রহস্যময় ঘটনার কথা জানতে শুরু হয় গবেষণা। জানা যায় এই হ্রদের জলে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম কার্বনেট এবং সোডা রয়েছে। এর ফলে হ্রদের জল অস্বাভাবিক ক্ষারধর্মী, যার পিএইচ-এর মাত্রা ১০.৫। এটি চামড়াকে পুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
এই হ্রদে পাখিগুলোকে নামতে হয় না। এর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ই হ্রদের জলে পড়ে যায় তারা। কীভাবে জানেন? ওই হ্রদে জলের পরিবর্তে লাভা থাকায় সূর্যের রশ্মি হ্রদ থেকে বেশি পরিমাণ প্রতিফলিত হয়।
ফলে পাখিগুলো যখন ওপর দিয়ে উড়ে যায় তখন তাদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তীব্র আলোর ঝলকানিতে বিভ্রান্ত হয়েই হ্রদেই পড়ে যায় বাদুড় বা পাখিগুলো। পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক পাখির মৃত্যু হয়।
কেউ যদি অতি কষ্টে ডাঙায় উঠেও পড়ে, তার কষ্ট আরো বাড়ে। লেকের জলের সোডা আর লবণ লেগে যায় পাখি বা প্রাণীটির শরীরে। যা শুকোনোর সঙ্গে সঙ্গে শরীর টেনে ধরতে থাকে। আস্তে আস্তে পাথরে পরিণত হয় ওই লবণ আর সোডা। একসময় পাখিগুলোর শরীর পূর্ণাঙ্গ চুনাপাথরের মূর্তির রূপ নেয়।