- Home
- World News
- International News
- বন্যপ্রাণ ধ্বংস বন্ধ না হলে বিশ্বে বাড়বে মহামারি, ছড়াবে করোনার মতো আরও মারণ রোগও
বন্যপ্রাণ ধ্বংস বন্ধ না হলে বিশ্বে বাড়বে মহামারি, ছড়াবে করোনার মতো আরও মারণ রোগও
প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে যায়—এমন জুনোটিক রোগ বাড়ছে। রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বন্য প্রাণীদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ না নিলে ও পরিবেশ রক্ষা না করলে অদূর ভবিষ্যতে এমন রোগ বাড়তেই থাকবে। কোভিড–১৯-এর মতো রোগগুলোর প্রাদুর্ভাবের জন্য তাঁরা প্রাণীজ প্রোটিনের তীব্র চাহিদা বৃদ্ধি, টেকসই নয় এমন কৃষিকাজ বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ি করেছেন।
- FB
- TW
- Linkdin
রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুনোটিক রোগকে অবহেলা করলে বছরে ২০ লক্ষ মানুষ মারা যেতে পারে।
শুধু কোভিড–১৯ নয় ইবোলা, ওয়েস্ট নাইল ও সার্সও প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসা জুনোটিক রোগ। এগুলো প্রথমে প্রাণীর শরীরে সংক্রমিত হয়। পরে সেখান থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম অ্যান্ড দ্য ইন্টারন্যাশনাল লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন বলছে, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসব রোগ এমনি এমনি আসেনি।
প্রাকৃতিক পরিবেশের অপব্যবহার—যেমন ভূমির অবক্ষয়, বন্য প্রাণীর ক্ষতি করা, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন এসবের জন্য দায়ি।
রাষ্ট্রসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘গত শতাব্দীতে আমরা কমপক্ষে ৬ টি বড় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, বিগত ২০ বছরে কোভিড–১৯ সংক্রমণের আগে প্রাণীবাহিত জুনোটিক রোগের কারণে ১০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, অঞ্চলভিত্তিক জুনোটিক রোগ (যেমন অ্যানথ্রাক্স, বোভিন টিবি ও র্যাবিস) অবহেলা করায় প্রতিবছর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় ২০ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
অ্যান্ডারসন আরও বলেন, আমিষ খাবারের জন্য প্রাণীদের ওপর বেশি নির্ভরতার কারণে জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এই কারণে গত ৫০ বছরে মাংসের উৎপাদন ২৬০ ভাগ বেড়েছে।
অ্যান্ডারসন জানান, ‘আমরা আমাদের বনভূমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করেছি, বিভিন্ন পরিকাঠামো স্থাপন করেছি। বাঁধ, সেচের কাজ, কারখানা, খামারের কাজে নিয়োজিত মানুষদের ২৫ ভাগ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। ভ্রমণ, পরিবহন ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা সীমান্তের দূরত্ব দূর করে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনও রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী।’
রাষ্ট্রসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি কৌশলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবে ভূমি ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য উন্নয়ন ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
অ্যান্ডারসন বলেন, ‘যদি আমরা বন্য প্রাণীর ক্ষতি করি, বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করি, তাহলে প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এই ধরণের রোগ আরও সংক্রমিত হবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।’