- Home
- World News
- International News
- প্রতি বছর সমাধী খুঁড়ে তোলা হয় প্রিয়জনদের মৃতদেহ, কেন এমনটা করে তোর্জা উপজাতি, দেখুন
প্রতি বছর সমাধী খুঁড়ে তোলা হয় প্রিয়জনদের মৃতদেহ, কেন এমনটা করে তোর্জা উপজাতি, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
মৃতের সৎকার করা নিয়ে সারা বিশ্বেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন অদ্ভূত অদ্ভূত প্রথা প্রচলিত আছে। কিন্তু, তাই বলে প্রতি বছর নিকটজনদের মৃতদেহ কবর খুঁড়ে তুলে এনে তাদের সঙ্গে ছবি তোলা, সময় কাটানো - এমন প্রথা শুধু অদ্ভূত নয়, উদ্ভট এবং গা শিরশিরেও মনে হতে পারে। কিন্তু, ইন্দোনেশিয়ার তোর্জা উপজাতির কাছে এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
দীর্ঘদীন ধরে এই প্রথা মেনে আসছেন তোর্জা সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রতি বছর বর্ষায় তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের মৃতদেহ খনন করে তুলে আনেন। সেই প্রাণহীন দেহগুলিতে নতুন পোশাক পরিয়ে তাদের সাজানো হয়।
তাদের দেওয়া হয় সিগারেট, মদ, ভালো মন্দ খাওয়ার বা সেই দেহের একসময়ের অধিকারী বেঁচে থাকাকালীন যা ভালবাসতেন, সেইরকম কোনও প্রিয় সামগ্রী। এমনকী সাজিয়ে টাজিয়ে নিয়ে দেহাবশেষগুলির সঙ্গে ছবিও তোলেন পরিবারের জীবিত সদস্যরা।
কেন এমনটা করেন তোর্জারা? তাঁদের মতে, পরিবারের মৃত সদস্যের সঙ্গে যে সুখস্মৃতি ছিল তাঁদের, তাকে নতুন করে স্মরণ করার এর তেকে ভালো উপায় আর কিছু নেই।
ইন্দোনেশিয়ার তোর্জা উপজাতির মোট জনসংখ্যা এখন প্রায় দশ লক্ষ। তাদের বেশিরভাগেরই বসবাস দক্ষিণ সুলাওসি প্রদেশে। মজার বিষয় হল, এই আধুনিক যুগেও মৃত আত্মীয়দের তাঁরা সমাধি দেন বাড়ির মধ্যে কিংবা সংলগ্ন জমিতেই।
বছরের এই সময় সেই দেহগুলিকে সাজিয়ে দিয়ে আবার সমাধী দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠান-কে বলা হয় 'মা নেনে'।
তোর্জা উপজাতির পরিবারগুলির জন্য এই অনুষ্ঠান দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। নতুন প্রজন্মদের পারিবারিক মূল্যবোধ এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই তৈরি হয় বলে মনে করা হয়।
এই সময় মাটি খুঁড়ে তুলে আনা আত্মীয়দের মৃতদেহগুলির সঙ্গেও একেবারে পরিবারের অন্যান্য জীবিত সদস্যদের মতোই আচরণ করা হয়। সপরিবারে খাওয়া দাওয়া সময়, নতুন পোশাক পরা অবস্থায় মৃতদেহরাও সেই টেবিলে উপস্থিত থাকে। এমনকী তাদের সঙ্গে কথাও বলেন জীবিত সদস্যরা।
বস্তুত, মৃত্যুর পরও তোর্জারা সঙ্গে সঙ্গেই তার সৎকার করে না। কখনও কখনও একসপ্তাহ, কখনও বা এক মাস পর্যন্ত বাড়িতেই মমি করে রেখে দেওয়া হয় মৃতদেহগুলি। পরে এক দৃষ্টিনন্দন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁদের সমাধিস্থ করা হয়।
আর দাঁত ওঠার আগেই যদি কোনও শিশুর মৃত্যু হয়, তাহলে গাছের গুঁড়িতে গর্ত করে তাদের মৃতদেহ সেখানে ভরে দেওয়া হয়। ওই শিশুদের দেহকে কান্ডের ভিতরে নিয়েই বেড়ে ওঠে গাছটি।