- Home
- Sports
- Cricket
- অন্ধকার গলি থেকে স্বপ্নের রাজপথ, ১২ বছরে আইপিএল জন্ম দিয়েছে একাধিক ক্রিকেট তারকার, চিনে নিন তাদের
অন্ধকার গলি থেকে স্বপ্নের রাজপথ, ১২ বছরে আইপিএল জন্ম দিয়েছে একাধিক ক্রিকেট তারকার, চিনে নিন তাদের
- FB
- TW
- Linkdin
রবিচন্দ্রন অশ্বিন-
২০০৯ থেকে সিএসকে দলে থাকলেও আইপিএলে অশ্বিনের উত্থান ২০১০ সালে কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে। নবাগত স্পিনার হিসাবে প্রথম ম্যাচে কেকেআরের বিরুদ্ধে ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাকুলাম, ডেভিড হাসির মতো তারকাদের উইকেট তুলে নিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। সেই মরশুমে মাত্র ৬.১০ ইকোনমি রেটে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন অশ্বিন। হয়ে উঠেছিলেন রহস্য স্পিনার। তারপর জাতীয় দলে তিনটি ফরম্যাটেই ক্রিকেট খেলেছেন। অসংখ্য ওয়ান ডে ও টেস্ট ম্যাচ ভারতকে একার দলে জিতিয়েছেন। কিন্তু তাকে প্রথম জনপ্রিয়তা দিয়েছিল আইপিএলই।
রিশভ পন্থ-
অনুর্দ্ধ ১৯ বিশ্বকাপ খেলে প্রতিভা আছে প্রমান করেছিলেন। কিন্তু গত তিন মরশুমে আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ভালো পারফরম্যান্স করে নিজেকে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। আইপিএলে তার ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং দেখেই তাকে জাতীয় দলে জায়গা দেওয়া হয়, কিন্তু এখনও জাতীয় দলের হয়ে এমন কিছু ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেননি কিন্তু তার সামনে জাতীয় দলের দরজা খুলেছে আইপিএলে তার পারফরম্যান্সের দৌলতেই এবং আশা করা যায় ভবিষ্যতে তিনটি ফরম্যাটেই তিনিই হয়ে উঠবেন ভারতের এক নম্বর কিপার।
সঞ্জু স্যামসন-
২০১৩ সালের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৬৩ রানের ইনিংস তাকে রাতারাতি পাদ-প্রদীপের আলোয় নিয়ে এসেছিল। একবার আইপিএলের সেরা ইমার্জিং ক্রিকেটারের পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। আইপিএলে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে শতরান করেছেন তিনি। এইসবের পর প্রতিমুহুর্তে তিনি কড়া নাড়ছেন জাতীয় দলের দরজায়। কয়েকবার সুযোগ পেয়েও এখনও যদিও বড় কিছু করতে পারেননি তবু এই তরুণ ক্রিকেটারের হাতে এখনও রয়েছে অনেক সময় নিজেকে জাতীয় দলে নিয়মিত করে তোলার জন্য। তবে আজ তার যা খ্যাতি তার বেশিরভাগটাই আইপিএলের দৌলতে।
স্টিভ স্মিথ-
যখন আইপিএলে খেলতে এসেছিলেন স্টিভ স্মিথ তখন তিনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান হিসাবে গন্য হতেন না। তিনি তখন প্রধানত ছিলেন একজন লেগ-স্পিনার যিনি লোয়ার অর্ডারে নেমে সামান্য ব্যাটও করতে পারেন। সৌরভ গাঙ্গুলি সর্বপ্রথম তাকে ২০১২ আইপিএলে কাজে লাগান একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে এবং সৌরভের ভরসার পূর্ন মর্যাদা দিয়ে সেই টুর্নামেন্টে ১৪০ এর স্ট্রাইক রেটে সাড়ে তিনশোর-ও বেশি রান করেন তিনি। তার স্পিন খেলার ক্ষমতা দেখে তাকে ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরে জায়গা দেওয়া এবং সফরের তৃতীয় টেস্টে সুযোগ পেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ৯২ রান করে নিজেকে প্রমান করেন তিনি। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আইপিএলই তাকে প্রথম, ব্যাটসম্যান হিসাবে পরিচিত দিয়েছিল।
অক্ষর প্যাটেল-
গুজরাটের এই অলরাউন্ডার ঘরোয়া ক্রিকেটে মিশ্র পারফরম্যান্স করে যাচ্ছিলেন। প্রথমবার ক্রিকেট ভক্তদের নজরে আসেন ২০১৪ সালের আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলার সময়। সেই বছর পাঞ্জাবের ফাইনাল অবধি ওঠা দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। নিজেকে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসাবে দাবি করলেও সেই টুর্নামেন্টের তিনি বোলার হিসাবেই বেশি সফল হয়েছিলেন ১৭ ম্যাচে ১৭ উইকেট তুলে। ফলস্বরূপ ভারতীয় দলের দরজা খুলে যায় তার সামনে। যদিও এখনও নিজেকে জাতীয় দলে নিয়মিত করে তুলতে পারেননি তিনি, কিন্তু তাকে পরিচিতি দিয়েছিল আইপিএল-ই।
হার্দিক পান্ডিয়া-
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের মতো অন্যতম হার্দিক পান্ডিয়া। ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ১০ বলে ২৮ রানের একটি ক্যামিও তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তুলেছিল। এছাড়া মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে মারকুটে ইনিংসের পাশাপাশি বল হাতে প্রয়োজনে পারফর্ম করাও জাতীয় দলে পেসার অলরাউন্ডার হিসাবে তার জায়গা পাকা করতে সাহায্য করেছে। দীর্ঘদিন পর চোট সরিয়ে ক্রিকেট ফিরছেন তিনি আইপিএলের মাধ্যমে। আবার তার কাছে থেকে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস আশা করে বসে আছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ভক্তরা।
রশিদ খান-
প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে এসেছিলেন আফগানিস্তানের স্পিনার। এসে নিজের স্পিনের ভেলকিতে ঘায়েল করেছেন একাধিক নামজাদা ব্যাটসম্যানকে। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে মার খেলেও কিভাবে সাহসী বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের পাল্টা জবাব দিতে হয় তা বুঝতে আইপিএলের অভিজ্ঞতা রশিদ খান-কে অনেক সাহায্য করেছে, একথা তিনি নিজেও স্বীকার করেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ডেথ ওভারে তার ক্যামিও ইনিংস খেলার ক্ষমতা গুলিও আইপিএলের অভিজ্ঞতার ফসল।
কে এল রাহুল-
ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে জাতীয় টেস্ট এবং ওয়ান ডে দলে জায়গা করেছিলেন রাহুল। কিন্তু জাতীয় টি টোয়েন্টি দলে তার উত্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে আইপিএলের। শেষ দুই মরশুমে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে ১২৫২ রান। আর এই মুহুর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে টি টোয়েন্টি হোক বা ওয়ান ডে, সবথেকে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান রাহুল। আগের চেয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে থাকেন তিনি, যার পেছনে অনেকটাই অবদান আইপিএলের।
মোহিত শর্মা-
২০১২-১৩ রঞ্জি মরশুমে ভালো পারফরম্যান্স তাকে আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সুযোগ করে দেয়। আর সেখানে ১৫ ম্যাচে ২০ গোল তার সামনে জাতীয় দলের দরজা খুলে দেয়। ২০১৪ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবং ২০১৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে খেলে অফফর্মের জন্য বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে। কিন্তু জাতীয় দলে তাকে সুযোগ করে দিয়েছিল আইপিএলই।
জসপ্রীত বুমরা-
আইপিএলের অন্যতম ফসল জসপ্রীত বুমরা। ২০১৩ সালে আইপিএলে ডেভিউ করলেও তেমন কোনও প্রভাব ফেলতে পারেননি তখন। কিন্তু ডেথ বোলিংয়ের সম্রাট লাসিথ মালিঙ্গার সাথে ড্রেসিংরুম ভাগ করে তার পরামর্শ শুনে নিজেকে ক্রমে করে তুলেছেন আজকের পৃথিবীর সেরা বোলার। আইপিএলের অভিজ্ঞতার দরুনই এত অল্প সময়ে এত পরিণত ও নিখুঁত হয়ে উঠতে পেরেছেন বুমরা।
ভুবনেশ্বর কুমার-
ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স করার পাশাপাশি আইপিএলে পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়ার হয়ে তার পারফরম্যান্স জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে তার জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল। বহুবার এমন হয়েছে আইপিএলে যে দলের বাকি বোলাররা প্রচুর রান বিলিয়েছেন কিন্তু তিনি নিজের ৪ ওভারে রাশ আলগা করেননি। ফলস্বরূপ পাকিস্তানের ২০১২ সালের ভারত সফরে সুযোগ পেয়ে প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত। তারপরে ভুবির সাফল্যের গল্প সকলেরই জানা কিন্তু তার প্রতিভা
প্রজ্ঞান ওঝা-
ঘরোয়া ক্রিকেটে সফল হওয়ার পর আইপিএলে ডেকান চার্জাস তাকে দলে নিয়েছিল। সেই দলের হয়ে ১৩ ম্যাচে ১১ উইকেট নেওয়ার পর জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি। এশিয়া কাপে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। পরে যদিও টেস্ট বোলার হয়ে উঠেছিলেন। ২০১১-১২ মরশুমে ৯ বারেরও বেশি টেস্টে ৫ উইকেট নিয়েছেন। আইপিএলই তাকে প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চের যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল