- Home
- Lifestyle
- Lifestyle Tips
- মাদার তেরেসা থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রত্যাখ্যান করেছিলেন পদ্ম সম্মান, জেনে নিন তালিকায় রয়েছেন কে কে
মাদার তেরেসা থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রত্যাখ্যান করেছিলেন পদ্ম সম্মান, জেনে নিন তালিকায় রয়েছেন কে কে
- FB
- TW
- Linkdin
প্রখ্যাত সেতার বাদক ওস্তাদ বিলায়েত খান ১৯৬৪ সালে পদ্মশ্রী এবং ১৯৬৮ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। ২০০০সালে তাকে আবার পদ্মবিভূষন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলে তিনি পুনরায় নিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন," পুরস্কার প্রদানকারীদের ক্ষমতা নেই আমার প্রতিভা মূল্যায়ন করার। সেতারের জন্য যদি কোনো বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয় তবে আমি তা অবশ্যই নেব।"
১৯৭০ সালে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী সম্মান দিতে চেয়েছিল তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার। সৌমিত্র তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তাঁর সেসময় বক্তব্য ছিল, "ভারতীয় চলচ্চিত্রের উন্নতির জন্য কিছুই করছিল না সরকার। তাই ব্যক্তি হিসেবে এই পুরস্কার আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।" পরে ২০০৪ সালে পদ্মভূষণ সম্মান গ্রহণ করেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
১৯৭৪ সালে সাংবাদিক ও জনপ্রিয় লেখক খুশবন্ত সিংকে ভারত সরকার পদ্মভূষণ দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন।পরে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে অপারেশন "ব্লু স্টারের" প্রতিবাদ স্বরূপ ১৯৮৪ সালে তিনি এই সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক রোমিলা থাপারের নাম ১৯৯২ ও ২০০৫ সালে ভারত সরকার দ্বারা পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্য ঘোষিত হয়। কিন্তু বিতর্কিত এই ঐতিহাসিক প্রতিবারই এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন।
প্রখ্যাত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ কৃষ্ণাস্বামী সুব্রহ্মনিয়ম ১৯৯৯ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।কিন্তু তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন।তিনি বলেন, "কোনো সাংবাদিক এবং আমলার এধরণের সরকারি পুরস্কার নেওয়া উচিত নয়।"
প্রবাদপ্রতিম কত্থক নৃত্যশিল্পী সিতারা দেবীকে যখন ২০০২ সালে ভারত সরকার পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন তখন তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, "আমার কাজের বিচারে এই পুরস্কার আমাকে সম্মান জানানো নয়। উলটে আমায় অপমান করা।"
বিখ্যাত সিনেমা শোলে, ডন, জঞ্জিরের মত বক্সঅফিস হিট সিনেমার চিত্রনাট্য লেখক সেলিম খান পদ্ম পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। অভিনেতা সলমান খানের পিতা সেলিম খান ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন কিন্তু তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন।তিনি বলেন, "আমার এই কর্মের স্বীকৃত এই পুরস্কার হতে পারে না।"
কর্ণাটকের বিজয়পুরের ধর্মসাধক এবং সংস্কারক সিদ্ধেশ্বর স্বামীর নাম পদ্ম সম্মানের জন্য ঘোষিত হয়। যিনি কর্ণাটকে "জীবন্ত ভগবান " নামে জনপ্রিয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে 'সিদ্ধান্ত শিরোমণি’ নামে একটি গ্রন্থ লিখে ভারতীয় আধ্যাত্ম জগতের চর্চায় চলে আসেন তিনি। তিনি পদ্ম পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "আমি সন্ন্যাসী মানুষ। আমি মানুষের জন্য কাজ করি। আমাকে আলাদা করে পুরস্কৃত করার কোনো প্রয়োজন নেই।"
৬৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে স্বামী রামদেবের নাম শোনা যায় পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায়। এরপরই স্বামী রামদেব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে একটি চিঠিতে লেখেন, "আমি তপস্বী মানুষ , তাই পদ্ম পুরস্কার গ্রহণ করতে পারছি না। আমার বদলে যেন অন্য কাউকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।"
২০১৯ সালে আমোরিকা প্রবাসী ভারতীয় লেখিকা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা গীতা মেহতা পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন। গীতা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের দিদি। তিনি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে লেখেন, "পদ্মশ্রীর জন্য আমার নাম বিবেচিত হওয়ায় আমি সরকারকে সম্মান জানাচ্ছি। তবে সামনে লোকসভা ভোট। ভোটের আগে এই সম্মান গ্রহণ করলে আমার এবং সরকারের বিড়ম্বনা বাড়তে পারে। যেটা আমার কাম্য নয়। সে কারণেই আমি এই সম্মান গ্রহণ করতে পারছি না।"
বিখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা এবং সংগঠক এএমনম্বুদিরিপাদ অস্বীকার করেন পদ্ম পুরস্কার নিতে। ভাষার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ কেরালার গঠনের তিনি অন্যতম একজন স্থপতি।১৯৩৬ সালে যে পাঁচজন কেরালায় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন ইএমনম্বুদিরিপাদ তাদের একজন ছিলেন।১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার সময় তিনিই ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক। নির্দ্বিধায় তিনি ফিরিয়েছিলেন পদ্ম পুরস্কার।
১৯৬০ এবং ৬১ সালে পদ্ম পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম ঘোষিত হলেও তিনি নেন নি পদ্ম সম্মান। ১৯৭৯ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। পুরস্কার প্রাপ্তি উপলক্ষে যে সম্মানমূলক ভোজের আযোজন করা হয় তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন এবং পুরস্কারের পুরো টাকাটিই ভারতের দরিদ্র মানুষের সাহায্যে উৎসর্গ করেন। তিনি ঝাড়ুদারদের সম্মানার্থে নীল পাড়ের সাদা শাড়ি ও স্যান্ডেল পরতেন।
এছাড়া কূটনীতিক কে এস বাজপেয়ি, আধ্যাত্মিক মাতা অমৃতআনন্দময়ীর মত কিছু মানুষজন রয়েছেন যারা প্রত্যাখ্যান করেছেন পদ্ম পুরস্কার।
৬৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে 'আর্ট অফ লিভিং'-এর কর্ণধার শ্রীশ্রী রবিশঙ্করকে পদ্ম পুরস্কার দেওয়ার কথা উঠলে তিনি পদ্ম পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। তিনি একটি টুইটে লেখেন, "পদ্ম পুরস্কারের জন্য আমার নাম বিবেচনা করায় সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু বহু যোগ্য ব্যক্তি আছেন এদেশে। আমি চাই আমার বদলে তাঁদের কাউকে এই সম্মান প্রদান করা হোক।"