অনলাইন ক্লাস করে খুশি নয় শিশুরা, দেখুন তাদের কী কী সমস্যা হচ্ছে
- FB
- TW
- Linkdin
আগে সকাল থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য শিশুদের একটা তাড়া থাকত। একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলত তারা। যদি কারও স্কুল সকাল ৭টায় হয় তাহলে আগে তাকে উঠতে হত সাড়ে ৫টায়। তারপর রেডি হয়েই দৌড় দিত স্কুলে। যা এখন একেবারেই অতীত। ৭টায় স্কুল হলে কোনওরকমে সাড়ে ৬টায় উঠে রেডি হয়ে যায় তারা। কোনও তাড়া নেই। শুধু যা হোক করে কয়েকটা ক্লাস শেষ করলেই হল।
এই পরিস্থিতিতে বন্ধুদের খুবই মিস করে বাচ্চারা। কারণ বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলো করা, একসঙ্গে টিফিন করা, কার্টুনের চরিত্রগুলিকে নিয়ে কাটাছেঁড়া করা কিছুই সম্ভব হয় না। ফলে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে তাদের জীবন। যা তাদের বিকাশের ক্ষেত্রে খুবই প্রভাব ফেলছে।
আগে একটা ক্লাসের মধ্যে অনেক পড়ুয়া একসঙ্গে বসে ক্লাস করত। আর তাদের সামনেই থাকতেন শিক্ষকরা। ফলে পড়ুয়াদের কোনও বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে তখনই তাঁরা দেখিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু, অনলাইনে ক্লাস হওয়ার ফলে সেই সুবিধা এখন আর পাওয়া যায় না। ফলে অভিভাবকদের উপর অনেকটাই চাপ বেড়ে গিয়েছে। আর যে সব বাবা-মা দু'জনেই অফিসে যান তাঁরা সন্তানদের দেখতে পাচ্ছেন না। ফলে নিয়মিত ক্লাসে খারাপ ফল করছে তারা। যা তাদের আত্মবিশ্বাস একটু একটু করে কমিয়ে দিচ্ছে। বাড়ছে হতাশা, একাকিত্ব।
স্কুলে হলেও আগে বাচ্চাদের খেলার একটি সুযোগ ছিল। বাইরে দু'জন মানুষের সঙ্গে তারা মিশতে পারত। কিন্তু, এখন চার দেওয়ালের মধ্যে থাকার ফলে তারা কারও সঙ্গে মেশার সুযোগ পাচ্ছে না। এর ফলে তাদের কাজ করার ইচ্ছেটাই চলে যাচ্ছে। এমনকী, দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকার ফলে বাইরে বের হতেই তাদের ভয় করছে। সমাজ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে তারা। তাদের গতিও অনেকটাই ধীর হয়ে যাচ্ছে।
বাড়ির মধ্যে দীর্ঘদিন থাকার ফলে বাচ্চাদের মেদ বাড়ছে। স্কুল অনলাইনে হওয়ার পর নয় টিভি নয় কম্পিউটার নয়তো বসে বসে পড়াশোনা করা। প্রায় সারাক্ষণ কাটছে বসে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চকোলেট ও ফাস্ট ফুড খাওয়া। যার কারণে গত ১ বছরে তাদের মেদ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
এছাড়া এভাবে স্কুল করতে অভ্যস্ত না হওয়ায় রীতিমতো হতাশায় ভুগছে বেশ কিছু বাচ্চা। স্কুলে নতুন ক্লাসে ওঠা মানে বাচ্চাদের কাছে সেটা একটা উৎসব। নতুন বই খাতা, শিক্ষক, নতুন ঘর। সব নতুন। কিন্তু, বাড়িতে বসে বসে ক্লাসে উঠে যাওয়ার ফলে তাদের অনেকেরই মনে হচ্ছে যে সত্যিই ক্লাসে উঠেছি তো? নাকি স্কুল খুললে আবার পুরোনো ক্লাসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে হীনমন্যতাবোধ জন্মাচ্ছে বাচ্চাদের মনে।