এআই আর সুপার কম্পিউটারের জোরে বিশ্ববাসীকে হবে হাতের পুতুল, চিন নিয়ে এল কড়া সতর্কতা
চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ফের মার্কিন মুলুকে প্রশংসা পেল মোদী সরকার। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ কর্তা দাবি করেছেন, এর ফলে চিনা নজরদারির ষড়যন্ত্র বড় ধাক্কা খেয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও'ব্রায়েন সম্প্রতি এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের পরই ট্রাম্প প্রশাসন টিকটক, উইচ্যাট এবং আরও কিছু চিনা অ্যাপ্লিকেশন, যার মাধ্যমে বেজিং মার্কিন নাগরিকদের উপর নজরদারি চালায় তাদের উপর 'অত্যন্ত গুরুত্ব ,সহকারে নজর দিচ্ছে।
রবার্ট ও'ব্রায়েন বলেন, ভারত ইতিমধ্যে এই অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ করেছে। ভারতের পর যদি আমেরিকাও একই পথে হাঁটে তাহলে টিকটক, উইচ্য়াটদের ইউরোপিয় বেশ কিছু দেশ থেকেও ব্যবসা গুটোতে হবে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির দূর থেকে নজরদারী, বা গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করে থাকে এই অ্যাপ্লিকেশনগুলি। তাই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে চিনের সেই পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খাবে। এই অবস্থায় ও'ব্রায়েনের পরামর্শ, টিকটক অত্যন্ত মজাদার হলেও, এর ব্যবহারকারীদের অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা উচিত।
কারণ এই অ্যাপগুলি ফেসিয়াল রেকগনিশন-এর মতো বায়োমেট্রিক পরিচয় চুরি করছে। গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য, সর্বাধিক অন্তরঙ্গ তথ্য চুরি করে নেয়। বেজিং-এ বসেই কমিউনিস্ট নেতারা বিদেশি নাগরিকদের বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব-এর সব খবরাখবর পেয়ে যায়। এইভাবে তারা প্রত্যেক বিদেশি নাগরিকের সম্পর্কের একটা বিশদ মানচিত্র তৈরি করে। যা জমা থাকে চিনের বিশাল বিশাল সুপার কম্পিউটারগুলিতে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার আরও অভিযোগ ইউচ্যাট বা টিকটকের মতো মোবাইল অ্যাপগুলির মাধ্যমে তারা এই সব ব্যক্তিগত তথ্য বিনামূল্যে সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। যদি সেভাবে তথ্য সংগ্রহ সম্ভব না হয়, তবে তারা সরাসরি তথ্যচুরির রাস্তায় হাঁটে। মেরিয়ট-এর মতো হোটেল ব্যবসায়িক সংস্থার তথ্য ভান্ডার হ্যাক করে চিন। এভাবে তারা কয়েক কোটি গ্রাহকের পাসপোর্ট নম্বর-সহ ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেছে। ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিগুলিতে হ্যাক করে। এমনকী স্বাস্থ্যসেবার ওয়েবসাইট হ্যাক করে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিশদ তথ্যও জেনে নেয়।
কাজেই টিকটকের মতো অ্যাপগুলিকে কোনও বাণিজ্যিক সংস্থা হিসাবে দেখলে চলবে না। এমনটা নয় যে, কোনও বিজ্ঞাপনদাতাই গ্রাহকের গুগলে অনুসন্ধান খুঁজে বের করে তাঁর চাহিদা বোঝার চেষ্টা করছে। এই সংস্থাগুলির এমন আচরণের পিছনে রয়েছে এমন একটি দেশ যারা গ্রাহকের প্রতিটি খুঁটিনাটি, ব্যক্তিগত তথ্য পেতে চাইছে, যাতে তার সম্পর্কে সমস্ত কিছু জেনে ফেলা যায়।
তিনি আরও সতর্ক করেছেন, চিনে বর্তমানে কম্যুনিস্ট পার্টির প্রতি নাগরিকরা কতটা অনুগত তার ভিত্তিতে তাদেরকে যেরকম নম্বর দেওয়া হয়, সেই নম্বর ব্যবস্থার আওতায় শীঘ্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের নাগরিক চলে আসবে। কারণ এই অ্যাপগুলির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সুপার কম্পিউটিং ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে চিন প্রত্যেকটি দেশকে নিয়ন্ত্রণ করবে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, 'আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এমনটা না ঘটে'।