- Home
- World News
- International News
- আমেরিকায় টিকটক-উইচ্যাট নিষিদ্ধ হতেই দাঁত নখ বার করল চিন, পাল্টা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি জিনপিংয়ের
আমেরিকায় টিকটক-উইচ্যাট নিষিদ্ধ হতেই দাঁত নখ বার করল চিন, পাল্টা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি জিনপিংয়ের
- FB
- TW
- Linkdin
নিরাপত্তার কথা ভেবে ভারত সরকার নিষিদ্ধ করেছিল টিকটক। তার পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে একাধিক চিনা অ্যাপকে। ভারতের এই পদক্ষেপের পরেই একাধিক দেশ তচিনা অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে।
দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে এই অভিযোগে এবার জনপ্রিয় ভিডিয়ো অ্যাপ টিকটক ডাউনলোড করা নিষিদ্ধ হয়েছে আমেরিকায়। নিষিদ্ধ হয়েছে চিনা সুপার অ্যাপ উইচ্যাটের ব্যবহারও।
প্রশাসন ঘোষণা করে আমেরিকানরা আর টিকটক এবং উইচ্যাট ডাউনলোড ও ব্যবহার করতে পারবেন না। ইতিমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশ মেনে আমেরিকার সমস্ত প্লে স্টোর থেকে নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে এই অ্যাপ দুটি। আমেরিকায় টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০ মিলিয়ন। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পুআমেরিকায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে টিকটক এবং উইচ্যাট।
আমেরিকায় টিকটকের একটি বড় অংশ ছিল বাইটডান্সের অধীনে। পাশাপাশি ক্লাউড মেজর ওব়্যাকেলেরও কিছুটা শেয়ার ছিল চিনা সংস্থা টিকটকের সঙ্গে। ওব়্যাকেলের পাশাপাশি ওয়ালমার্টেরও একটি অংশীদারিত্ব ছিল টিকটকের সঙ্গে। গত বুধবারই ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন টিকটক এবং বাইটডান্টে গাঁটছড়া একেবারেই পছন্দ নয় তাঁর।
গত অগাস্টে একটি চুক্তিতেও সাক্ষর করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টিকটককে আমেরিকার কোনও সংস্থার কাছে বিক্রির জন্যও আর্জি জানিয়েছিল ট্রাম্প সরকার। আর এই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দিন ধার্য করেছিল ট্রাম্প সরকার। কিন্তু এরমধ্যে টিকটকের তরফে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য আমেরিকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল জনপ্রিয় ভিডিয়ো অ্যাপটিকে। পাশাপাশি উইচ্যাটের মাধ্যমেও আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আমেরিকায়।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নির্দেশে বেজায় চটেছে চিন। তাদের দাবি, দাদাগিরি চালাচ্ছে আমেরিকা। কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। এমনকি ট্রাম্প সরকারকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে বেজিং।
চিনের বাণিজ্যমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “চিন আমেরিকার কাছে আর্জি জানাচ্ছে, দাদাগিরি থেকে সরে আসুন। আন্তর্জাতিক নিয়ম ও নির্দেশিকা সুষ্ঠুভাবে পালন করুন।”
শুধু তাই নয়, আমেরিকার এই কাজের জন্য রীতিমতো হুঁশিয়ারিও দিয়েছে চিন। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “যদি আমেরিকা এভাবেই চলতে থাকে তাহলে চিনা কোম্পানিদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষার জন্য যা করণীয় তা করবে বেজিং।”
চিনের বাণিজ্যমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমেরিকাকে হুমকি দেওয়া বন্ধ করার আর্জি জানাচ্ছে চিন। আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, যাবতীয় অনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ করুক ওয়াশিংটন। আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনের স্বচ্ছ্বতা বজায় রাখুক।’’
করোনা পরিস্থিতি ও হংকং নিয়ে বেজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে দু’দেশের সম্পর্ক ফের তিক্ত হয়ে উঠেছে। এই আবহেই বেশ কয়েকটি চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ আমেরিকায় নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারই সঙ্গে আমেরিকার এবং চিনের মধ্যে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। বিশেষত করোনা পরবর্তী সময়ে চিনের উপরে রীতিমত রেগে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অভিযোগ উঠেছে টিকটকের মতো ভিডিও অ্যাপের সাহায্য নিয়ে আমেরিকার উপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে বেজিং। মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি ও অর্থনীতির উপরেও নজর রাখছে টিকটক। ব্যবহারকারীদের লোকেশন ডেটা, ব্রাউজিং ও সার্চ হিস্ট্রি সহ যা যা জেনে ফেলা সম্ভব, টিকটক ইতিমধ্যেই আমেরিকায় থাকা ব্যবহারকারীদের সেই সব তথ্য জেনে নিয়েছে। ব্যক্তিগত ও গোপন নথি তারা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির হাতেও তুলে দিয়েছে। এমনকি আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে বলেও দাবি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নজরদারির অভিযোগ এবং আমেরিকায় টিকটক নিষিদ্ধ করা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন বাইটড্যান্সের সিইও কেভিন মায়ের। তাঁর বক্তব্য, এমন হঠকারি সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করা হচ্ছে। টিকটক চ্যালেঞ্জ করতে পারে যে এই অ্যাপ কখনওই ব্যক্তিগত তথ্যে নজরদারি করেনি।
চিনের বাণিজ্যমন্ত্রক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে ‘‘আমেরিকা যদি এই সব চালিয়ে যাওয়ার গোঁ ধরে বসে থাকে তা হলে চিনা সংস্থাগুলির স্বার্থ ও আইনি অধিকার রক্ষায় বেজিংও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না।’’