- Home
- World News
- International News
- করোনার পাশাপাশি তাপদাহে নাভিশ্বাস বিশ্ববাসীর, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালি
করোনার পাশাপাশি তাপদাহে নাভিশ্বাস বিশ্ববাসীর, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। প্রচণ্ড গরমে সেখানে তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গত রোববার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড বলে জানা যাচ্ছে।
- FB
- TW
- Linkdin
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। গত রবিবার ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি’তে ন্যাশনাল পার্কের এক স্থানে ৫৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আমেরিকার জাতীয় আবহাওয়া দফতরের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৩টা ৪১ মিনিটে ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ডেথ ভ্যালি পার্কের সীমান্ত সংলগ্ন ফার্নেস ক্রেক স্টেশন থেকে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস এই তাপমাত্রার কথা জানিয়েছে । দেশের পশ্চিম উপকূলজুড়ে তাপপ্রবাহ চলতে থাকায় চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এই অসহনীয় গরমের বর্ণনা দিয়ে ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের এক কর্মী ব্র্যান্ডি স্টুয়ার্ট বলেন, চলতি সপ্তাহে এ অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। গরমের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, মনে হচ্ছে জ্বলন্ত চুল্লীর মধ্যে আছি। এটি খুবই অসহনীয়।
এর আগে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল এই ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কেই। ২০১৩ সালে পার্কটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২৯ দশমিক ২ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যা গত রোববার বিকেলের আগ পর্যন্ত এই গ্রহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হতো।
তবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। ১৯১৩ সালে ডেথ ভ্যালিতে একবার ৫৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো। যা রাষ্ট্রসংঘের সংগঠন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্যে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। যদিও অনেক বিজ্ঞানী ও আবহাওয়াবিদদের মতে, এই পরিমাপটি ভুল ছিলো। এমনকি খোদ মার্কিন আবহাওয়াবিদরাও তাপমাত্রার এই রেকর্ডটি মানতে নারাজ।
এদিকে গত কয়েকদিন থেকে চলমান তাপদাহের মধ্যে সোমবার নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছুঁয়েছে জাপান। এদিন দেশটির শিজুকা অঞ্চলের হামামাৎসু শহরে তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৫ দশমিক ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। জাপান আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) তথ্যমতে, সর্বশেষ ২০১৮ সালের জুলাইয়ে টোকিওর পার্শ্ববর্তী কুমাগায়া শহরে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে জাপান। এর মধ্যে বেশ কয়েকদিন দেশটির বিভিন্ন শহর ও এলাকায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
জেএমএ জানিয়েছে, ১৮৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত হামামাৎসু এলাকায় আগস্ট মাসের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৮৯৮ সালে রেকর্ড শুরুর পর থেকে গতবছর জাপানের গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল এবং সেটি ছিল স্বাভাবিক যেকোনও বছরের তুলনায় প্রায় এক ডিগ্রি বেশি।
সোমবার মধ্য ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় জাপানের নাগানো, গিফু, নারা, কচি, মিয়াজাকি এলাকাগুলোতে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়েও বেশি। এদিন রাজধানী টোকিওর লোকজন ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দগ্ধ হয়েছেন। ওসাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ১ এবং জনপ্রিয় পর্যটন শহর কিয়োটোর তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
জাপানের ভয়াবহ এই তাপদাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে জেএমএ। প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক ও গরম সম্পর্কিত অসুখ-বিসুখ এড়াতে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।