- Home
- World News
- International News
- লাদাখে উত্তেজনা বাড়তেই ফের ভারতের পাশে আমেরিকা, চিনকে 'যুদ্ধবাজ প্রতিবেশী' বলে কটাক্ষ পম্পেওর
লাদাখে উত্তেজনা বাড়তেই ফের ভারতের পাশে আমেরিকা, চিনকে 'যুদ্ধবাজ প্রতিবেশী' বলে কটাক্ষ পম্পেওর
- FB
- TW
- Linkdin
১৫ জুন গালোয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি সংঘর্ষের পর চিন ও ভারত দুই দেশ নিজেদের মধ্যে শান্তি রক্ষা করার চেষ্টা করেছ। এই অবস্থায় গত ২৯ ও ৩০ আগস্ট রাতে চিন জেনে বুঝে ইচ্ছা করে ভারতের লাদাখে দ্বিতীয়বার হামলা চালিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
মার্কিন গোয়েন্দাবাহিনী জানিয়েছে, ২৯-৩০ আগস্টের রাতে চিনের থেকে অনেক বেশি প্রস্তুত ছিল ভারতীয় সেনা। ১৫ জুনের ঘটনার পর চিনের হামলার প্যাটার্ন বুঝে নিয়ে , কার্যত সেই অস্ত্রেই চিনকে মাত দিয়েছে ভারত।
এই অবস্থায় ফের ভারতের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। বেজিংকে একহাত নিয়ে বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেও বলেন, চিন আসলে যুদ্ধবাজ প্রতিবেশি। চিনের কড়া সমালোচনা করেন পম্পেও বলেন দক্ষিণ চিন সাগরে যেভাবে দখলদারির মনোভাব নিয়ে বেজিং এগোচ্ছে, তাতে বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্ট্র ক্ষুব্ধ।
তবে পম্পেও এও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারত ও চিন শান্তিমূলক সমাধান খুঁজে পাক সীমান্ত সমস্যার। আলোচনার রাস্তা যেন দুই তরফেই খোলা থাকে। পম্পেও এদিন জানান যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেই চিন একাধিকবার মিসাইল পরীক্ষা করেছে। চিন যদি এব্যাপারে সংযত না হয়, তবে তাদের ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
এর আগেও একাধিকবার চিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য রেখেছেন মাইক পম্পেও। পম্পেও জানিয়েছেন, চিন নিজের ক্ষমতা এবং বিস্তার বাড়ানোর প্রতি ইচ্ছা রাখে তাই প্রতিনিয়ত এমন কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের ভূখন্ডে বারবার বহিরাক্রমণ থেকে তাঁদের উদ্দেশ্য প্রমাণিত হয়, এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও।
চিনের সামরিক শক্তি ও অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে পেন্টাগন। সেখানে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে লালফৌজের হাতে দুশোরও বেশি পারমাণবিক হাতিয়ার রয়েছে। কিন্তু এতেই থেমে থাকছে না কমিউনিস্ট দেশটি। আগামী এক দশকের মধ্যেই এই সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলতে তৎপর হয়েছে চিন। পাশাপাশি, তাইওয়ানের পক্ষে দাঁড়ালে কীভাবে মার্কিন ফৌজকে রুখে দিতে হবে সেই বিষয়ে রণকৌশল ঠিক করছে ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’।
মার্কিন নীতি নির্ধারকদের উদ্বেগ বাড়িয়ে পেন্টাগনের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রণতরী, জমি থেকে হামলায় সক্ষম ব্যালিস্টিক-ক্রুজ মিসাইল ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরিতে প্রযুক্তির দিক থেকে আমেরিকার থেকেও এগিয়ে গিয়েছে চিন। বর্তমানে স্থল ও সাগর থেকে বা সাবমেরিন থেকে আণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়তে পারে লাল ফৌজ। এবার বায়ু থেকেও আণবিক মিসাইল ছুঁড়র প্রযুক্তি হাতে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
পেন্টাগনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আণবিক অস্ত্রের সংখ্যায় আপাতত আমেরিকার ধারে কাছে নেই চিন। কিন্তু সেই ফারাক কমিয়ে আনতে দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে লালফৌজ। ফলে এটা স্পষ্ট, পাল্টা হামলার জন্য ন্যূনতম হাতিয়ার রাখার নীতি পাল্টে এবার আক্রমণাত্মক উদ্দেশ্যে আণবিক অস্ত্রভাণ্ডার গড়তে চাইছে দেশটি।
২০৪৯ সালের মধ্যে বিশ্বে সুপার পাওয়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া চিন। এই অবস্থায় দক্ষিণ চিন সাগর থেকে শুরু করে হংকং পর্যন্ত একাধিক ইস্যুতে আমেরিকার সঙ্গে বিবাদ রয়েছে চিনের। দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমাগত চিনের আস্ফালন ঠেকাতে এবার কোমর বেঁধে নামতে শুরু করেছে আমেরিকা। বহুদিন ধরেই এই এলাকা ঘিরে চিনের দাদাগিরি রোধে মার্কিন সমরশক্তি দাপট দেখানোর চেষ্টা করছে। করোনা পরবর্তী সময়ে চিন- মার্কিন তিক্ততার মাত্রা আরও বেড়েছে। বাণিজ্য সংঘাতের রাস্তা ধরে যে সমস্যা শুরু হয়, সেই সমস্যা এই মুহূর্তে আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
গত মাসে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সমস্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা। সংঘাত আরও বাড়িয়ে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে গিয়ে চিন অন্য কয়েকটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে। বেজিং অবশ্য পালটা তোপ দেগে বলেছে , আমেরিকার বয়ান ‘একবরেই অযৌক্তিক’।
চিনের ওপর চাপ বাড়িয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও আগেই জানিয়েছেন, গোটা বিশ্ব ধীরে ধীরে একজোট হচ্ছে চিনের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই ইওরোপ সফরে যান পম্পেও। সেখানে বহু দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে করোনার আবহেও দেখা করতে পিছপা হননি তিনি।