- Home
- World News
- International News
- নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক, চরবৃত্তির অভিযোগে একের পর এক চিনা পড়ুয়ার ভিসা বাতিল আমেরিকায়
নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক, চরবৃত্তির অভিযোগে একের পর এক চিনা পড়ুয়ার ভিসা বাতিল আমেরিকায়
চিনের বিরুদ্ধে ফের রুদ্রমূর্তিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও এক দফা কঠোর পদক্ষেপ মার্কিন প্রশাসনের৷ এবার এক ধাক্কায় ১০০০ চিনা নাগরিকের ভিসা বাতিল করে দিল ট্রাম্প প্রশাসন৷ যাঁদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। দেশের নিরাপত্তার জন্য চিনা নাগরকিরা বিপজ্জনক, এই কারণ দেখিয়েই ভিসা বাতিল করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
- FB
- TW
- Linkdin
গত ২৯ মে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, চিনের যেসব ছাত্র ও গবেষকদের ‘নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’ বলে মনে করা হবে, তাঁদের ভিসা দেওয়া হবে না। সেইমতো ১ হাজারের বেশি চিনা নাগরিকের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন প্রশাসন।
ভিসা বাতিলের তালিকায় অধিকাংশই চিনা ছাত্রছাত্রী এবং গবেষক৷ দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক, এই যুক্তি দিয়েই চিনা পড়ুয়া এবং গবেষকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে৷ আমেরিকা সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত ২৯ মে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা সরকারি ঘোষণা অনুসারেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের তরফে দাবি করা হয়েছে, গবেষণার অছিলায় এই ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে চিনের সামরিক বাহিনীর হাতে কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল তথ্যের পাচার রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কার্যনির্বাহী প্রধান চাড উলফ জানিয়েছেন, “চিনা ছাত্র বা গবেষকদের সঙ্গে যদি কোনওভাবে তাদের দেশের সেনাবাহিনীর যোগাযোগ থাকে, তাহলে তাদের ভিসা দেওয়া হয় না। তারা যাতে গবেষণা সংক্রান্ত কোনও তথ্য চুরি না করতে পারে, সেজন্যই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” উলফ অভিযোগ করেন, অনেক চিনা নাগরিক আমেরিকায় স্টুডেন্ট ভিসার অপব্যবহার করেছেন। তাঁরা করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণার ফলাফলও চুরি করতে চেয়েছিলেন।
চিনা পণ্য বয়কটের পক্ষে সওয়াল করেন উলফ। বলেন, 'চিনে দাস প্রথার মাধ্যমে যে সমস্ত পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে, আমেরিকায় সেই সমস্ত পণ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে৷ যাতে চিন প্রত্যেক মানুষকে সম্মান দিতে শেখে৷'
উলফ দাবি করেন, চিনের জিনজিয়াং অঞ্চলে মুসলিমদের উপরে যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ, তার প্রতিবাদেও পদক্ষেপ করছে আমেরিকা৷
হংকংয়ের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ২৯ মে চিনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ১০০০ চিনা পড়ুয়া ও গবেষকদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসনের দাবি৷
মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, হংকং-এ চিন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপরে আক্রমণ শানিয়েছে। তাই তাদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে আমরা কড়াকড়ি করেছি। তাঁর কথায়, “২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চিনা গণপ্রজাতন্ত্রের ১ হাজারের বেশি নাগরিকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের ১০০৪৩ নম্বর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তাঁরা ভিসা পাওয়ার অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছিলেন।”
তবে একইসঙ্গে ওই মুখপাত্র বলেন, প্রতিবছর বহু সংখ্যক চিনা নাগরিক আমেরিকায় আসেন। তাঁদের এক ক্ষুদ্র অংশকেই বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে। বাকিদের আগের মতোই আমেরিকায় স্বাগত জানানো হবে।
আমেরিকায় এখন প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার চিনা নাগরিক রয়েছেন। মার্কিন কলেজগুলির ভাল আয় হয় এই চিনা নাগরিকদের থেকে। যদিও করোনা অতিমহামারীর সময় অনেক চিনা ছাত্রই দেশে ফিরে গিয়েছেন। তাঁরা নতুন সেমিস্টারে ক্লাস শুরু করার জন্যও আসেননি।
সাম্প্রতিক সময়ে চিন ও আমেরিকার সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়ে উঠেছে। বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং করোনাভাইরাস এই তিনটি বিষয় নিয়ে তুমুল বাকযুদ্ধ চলছে বিশ্বের দুই প্রধান শক্তিশালী দেশের মধ্যে।