- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- বঙ্গ ভোটে পদ্ম হাতে ৯ মুসলমান, বিজেপি কি সত্যিই সংখ্যালঘু-বিরোধী - কী বলছেন প্রার্থীরা
বঙ্গ ভোটে পদ্ম হাতে ৯ মুসলমান, বিজেপি কি সত্যিই সংখ্যালঘু-বিরোধী - কী বলছেন প্রার্থীরা
আসন্ন বাংলার ভোটে মোট নয়জন মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রার্থী করেছে। মুর্শিদাবাদ থেকে পাঁচজন, মালদা থেকে দু'জন এবং উত্তর দিনাজপুর থেকে দু'জন। 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান এবং পুরোপুরি হিন্দুত্বের ভাষ্যকে সামনে রেখেই বঙ্গভোটে নামছেবিজেপি, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি মনে করা হচ্ছে এইবারের নির্বাচন পুরোপুরি মেরুকরণের নির্বাচন। তাহলে, পদ্ম হাতে কেন ভোট লড়তেযাচ্ছেন এই ৯ জন? সত্যিই কী বিজেপি সংখ্যালঘু বিরোধী? কী বলছেন তাঁরা?
| Published : Mar 23 2021, 10:20 PM IST / Updated: Mar 25 2021, 03:06 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
পদ্ম হাতে তৃণমূল ও কংগ্রেসের গড়ে
তিনটি জেলাই মুসলিম অধ্যূষিত - মুর্শিদাবাদে জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ, মালদায় জনসংখ্যার অর্ধেক, উত্তর দিনাজপুরে অর্ধেকের থেকে কিছু কম। তাই সেখান থেকে মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করানো স্বাভাবিক। তবে গত কয়েকটি নির্বাচনের ফল অনুযায়ী তিনটি জেলাই তৃণমূল এবং কংগ্রেসের দুর্গ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
জেতার সম্ভাবনা খুবই কম
নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলে প্রমাণ করতে এবং এলাকাগুলির সম্প্রদায়গত গঠনের বাধ্যবাধকতার কারণেই বিজেপি এই ৯ মুসলমান প্রার্থীকে ভোট ময়দানে নামিয়েছে। মুসলিম অধ্যূষিত আসনে বিজেপির হিন্দুত্বের মেরুকরণের কৌশল কার্যকর হবে না। কিন্তু, বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুসলিম তুষ্টিকরণের রাজনীতি নিয়ে যেভাবে কড়া প্রচার চালাচ্ছে যে এই প্রার্থীদের পক্ষে জেতাটা খুবই কঠিন।
মানছেন না প্রার্থীরা
তবে, ভোট বিশেষজ্ঞদের অনুমানকে পাত্তা দিচ্ছেন না আসন্ন নির্বাচনের জন্য বঙ্গ বিজেপির মুসলমান প্রার্থীরা। বিভিন্ন কারণেই তাঁরা মনে করছেন মুসলমান হয়ে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে কোনও অসুবিধায় পড়তে হবে না। জিতবেনও তাঁরা।
কর্মসংস্থান
এই প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ, সিপিএম থেকে বিজেপি-তে আসা এবং মুর্শিাবাদের সাহরদিঘির প্রার্থী মাহফুজা খাতুন বলেছেন, তাঁর জেলায় প্রচুর প্রবাসী শ্রমিক আছেন। তাদের জীবনের মানোন্নয়ন প্রয়োজন। সেই কাজে তৃণমূল ব্যর্থ। রাজ্যে কাজ না পেয়েই তাদের ভিনরাজ্যে যেতে হয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে দরিদ্র বিড়ি শ্রমিকদের সমস্যা। এইকারণে বিজেপিকেই বিকল্প বলে মনে করছে মানুষ।
হিংসা বিরোধী
গোলাপোখোরের প্রার্থী গোলাম সারওয়ার সরাসরি লড়ছেন তাঁর দাদা তথা তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাদার নির্দেশেই তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছিল বলে তাঁর অভিযোগ। আর তার জবাব দিতেই রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। তাঁর মতে বাংলাতেও মব লিঞ্চিং অর্থাৎ গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তবে সেই ঘটনা সম্পর্কে বাইরের কেউ জানতেও পারে না।
উন্নয়ন
১৯৯৮ সালে কাজের জন্য গুজরাতের জামনগরে গিয়ে বিজেপির উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন ভগবানগোলার প্রার্থী বিজেপি প্রার্থী মেহবুব আলম। এবার, মুর্শিদাবাদে ফিরে এসে, বিজেপির হাত ধরে তিনি সেই কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বপ্নই দেখছেন।
মুসলমান বিরোধী নয় বিজেপি
বিজেপি মুসলমান বিরোধী, এই কথাটা ৯ প্রার্থীর কেউই মানছেন না। মাহফুজা খাতুনের মতে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত করতেই গেরুয়া দলকে 'সংখ্যালঘু-বিরোধী বলে চিহ্নিত করেছে। গোলাম সারওয়ার-এর দাবি, প্রার্থী তালিকায় ৯ জন সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েই বিজেপি দল ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখেছে। আর মেহবুব আলম যুক্তি দিয়েছেন, বিজেপি গোমাংস নিষিদ্ধ করবে বলে প্রচার করা হয়। গোয়ায় কি তা হয়েছে? এনআরসি হলেও যারা অবৈধ নাগরিক নয়, তাদের কোনও ভয় নেই। এই আইন মোটেই সংখ্যালঘু বিরোধী নয়।
মুসলমান বলে প্রার্থী নন
বিজেপি-র দাবি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই প্রার্থীরা কেউই সংখ্যালঘু হিসাবে টিকিট পাননি। দলের সংখ্যালঘু শাখার রাজ্য প্রধান আলি হোসেন বলেছেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়, বিজেরি উন্নয়নের দল। এই প্রার্থীদের প্রত্যেকেই ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে গ্রামে গ্রামে বিজেপির ভোট-ভিত্তি তৈরি করেছেন।