সংক্ষিপ্ত
- বিয়েতে আপত্তি করতে পারেন বাড়ির লোকেরা
- আশঙ্কাতেই আত্মহত্যা করল কিশোর ও কিশোরী
- চলন্ত ট্রেনের সামনের ঝাঁপ দু'জনের
- চাঞ্চল্য হাওড়ার উলুবেড়িয়াতে
একে অপরে ভালোবাসত তারা। কিন্তু বিয়ে হলে পরিবারের লোকেরা মেনে নেবে তো? স্রেফ এই আশঙ্কাতেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল এক কিশোর ও এক কিশোরী। আত্মহত্যার আগে আবার রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে প্রেমিকার মাথায় সিঁদুরও পরিয়ে দিল প্রেমিক! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার স্টেশনের কাছে নতিবপুরে।
দু'জনের বাড়িই উলুবেড়িয়াতে। এক রাজাপুর থানার চক ভগবতীপুরের বাসিন্দা, আর একজন বানীবন চকবৃন্দাপুরের। ওই কিশোর ও কিশোরী বাগনানের একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ত বলে জানা গিয়েছে। একই স্কুলে পড়ার সুবাদে বন্ধুত্ব হয় দু'জনের। ঘনিষ্টতা বাড়ে এবং শেষপর্যন্ত একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে তারা। কিন্তু প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি যে এমন মর্মান্তিক হবে, তা কে জানত!
জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতেই ছিল ওই কিশোর ও কিশোরী। রাতে তারা দু'জন একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু কেউই আর বাড়ি ফেরেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা উলুবেড়িয়া স্টেশনের কাছে নতিবপুর এলাকার রেললাইনের ধারে চলে যায় ওই প্রেমিক যুগল। রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেয় প্রেমিক। সেই ছবিও আপলোড করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে ততক্ষণে ওই এলাকার কাছাকাছি চলে এসেছে আপ পাঁশকুড়া লোকাল। চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয় দু'জনই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাদের।
জানা গিয়েছে, ওই কিশোরটি মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। কিশোরীটি অবশ্য বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত। তার বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। দু'জনে মিলে যে এমন ঘটনা ঘটাবে, তা একেবারেই আঁচ করতে পারেননি পরিবারের লোকেরা। তবে আত্মহত্যার করার আগে কাকিমাকে ফোন করে প্রেমিককে বিয়ে করার কথা জানিয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বস্তুত, সে যে আর বাড়ি ফিরবে না, জানিয়েছিল সেকথাও। গভীর রাতে রেলের এক সিভিক ভলান্টিয়ার মারফত প্রথমে ঘটনার কথা জানতে পারেন ওই কিশোরীর মামা। বৃহস্পতিবার সকালে দুঃসংবাদ আসে কিশোরীর বাড়িতেও। এলাকায় শোকের ছায়া।
কিন্তু হঠাৎ আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত কেন নিল ওই প্রেমিক যুগল? তা কিন্তু স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই কিশোর ও কিশোরীর মনে হয়তো আশঙ্কা জেগেছিল, যে তাদের বিয়ে হলে পরিবারের লোকেরা মেনে নেবেন না। তাই নিজেদেরই শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। গোটা ঘটনাটিই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।