পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাস হামলার পর, ভারত সরকার বিভিন্ন কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে পারে। জেনে নিন কোন ১০ কাজ করতে পারে ভারত সরকার
Pahalgaon Teror attack: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাস হামলার প্রতিক্রিয়ায়, ভারত সরকার অন্যান্য ব্যবস্থার পাশাপাশি কূটনৈতিক দিকে কী আঘাত হানাবে। গতকাল সন্ধ্যায়, পহেলগাঁওয়ে বেড়াতে যাওয়া ২৮ জনকে জঙ্গিরা হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে নৌবাহিনী ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পর্যটক গাইড এবং সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি ছিল। ২০১৯ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অপসারণের পর এটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি সহ কয়েক ডজন বিশ্ব নেতা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ভারতের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এদিকে, এই হামলার ঘটনায় ভারতে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রথমত - সিন্ধু জল চুক্তি (IWT) স্থগিত করা – ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি অর্থাৎ IWT সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করতে পারে। ভারত এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করতে পারে, বেশ কয়েকটি আইনি নোটিশ সত্ত্বেও পাকিস্তানের অব্যাহত সহযোগিতার অভাব।
দ্বিতীয়ত - আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করা: ভারত নয়াদিল্লির কূটনৈতিক বাহিনী এবং পি৫ দেশগুলিকে (জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য) পহেলগাম হামলায় পাকিস্তানের কথিত ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করতে পারে। এর গভীর কূটনৈতিক প্রভাবও পড়বে।
তৃতীয়ত – কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন বা অবনমিত করে - ভারত সরকার নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে কূটনীতিক হিসেবে নিযুক্ত পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করতে পারে। এছাড়াও, পাকিস্তানি হাইকমিশনকে বরাদ্দকৃত জমি ফেরত নেওয়া যেতে পারে।
চতুর্থ - কূটনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাহার - ভারত ইসলামাবাদ থেকে তার কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করতে পারে। যদি এটি ঘটে তবে এটি একটি বড় ঘটনা হবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ কেবল ইমেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
পঞ্চম – ভারতীয়দের পাকিস্তান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা – ভারত পাকিস্তানি ভিসা প্রার্থী ভারতীয় নাগরিকদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এনওসি নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে পারে। এর ফলে নিরাপত্তা মান পুনর্বিবেচনা করা সম্ভব হবে।
ষষ্ঠত – সকল বাণিজ্য বন্ধ করা: ভারত সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের সাথে সকল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বাণিজ্য বন্ধ করতে পারে।
সপ্তম – বিদেশী দূতদের কাছে প্রমাণ দেখান: ভারত পহেলগাঁওয়ের বৈসারণে সন্ত্রাসী হামলার স্থানে বিদেশী দূতদের পরিদর্শনের আয়োজন করতে পারে। এছাড়াও, সাধারণ মানুষের কষ্ট প্রকাশের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে বৈঠকের আয়োজন করা যেতে পারে।
অষ্টম – কর্তারপুর করিডোর বন্ধ – ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কর্তারপুর করিডোরের কার্যক্রম স্থগিত করতে পারে।
নবম – ভিসা প্রদান বন্ধ করা – ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা প্রদান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে পারে। যদি এটি ঘটে, তাহলে ভারত দুই দেশের জনগণের সাথে জনগণের যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এছাড়াও, এটি পাকিস্তানের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে।
দশম – সীমান্ত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি: ভারত হুসেনওয়ালা এবং আরএস পুরা সীমান্তে ওয়াঘা সীমান্তের পতাকা অনুষ্ঠান, বিটিং রিট্রিট এবং অনুরূপ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারে। যদি এটি ঘটে তবে এটি একটি অত্যন্ত ঐতিহাসিক ঘটনাও হবে।


