সংক্ষিপ্ত
- দিল্লিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে, খুলছে দোকানপাট
- সক্রিয় পুলিশ, ১২৩ জনের নামে এফআইআর দায়ের
- ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহে ফরেনসিক দল
- তদন্তের ভার অপরাধ দমন শাখার ওপর
পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার শুরু হল এফআইআর। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার সংঘর্ষের পরে দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে অবশেষে নড়েচড়ে বসল দিল্লি পুলিশ। অপরাধ দমন শাখার ওপর তুলে দেওয়া হল তদন্তের ভার। এফআইআর করা হল ১২৩ জনের নামে।
সিএএ-পন্থী ও বিরোধীদের মধ্য়ে জাফরাবাদ থেকে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল দিনকয়েক আগে, তার মাশুল দিতে হয়েছে ৪২টি প্রাণের বিনিময়ে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে গোষ্ঠী সংঘর্ষের শিকার হয়েছেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়েছে সাম্প্রদায়িক এই সংঘর্ষের খবর পৌঁছিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। দিল্লি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় সবর হয়েছে গোটা দেশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ওপর ভরসা না-রাখতে পেরেই কার্যত অজিত ডোভালকে নিয়ে আসা দিল্লিতে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঙ্গাবিধ্বস্ত মানুষকে ভরসা দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। কিন্তু এতসবের পরেও দোষীদের বিরুদ্ধে কেন কোনও এফআইআর দায়ের করেনি দিল্লি পুলিশ, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল আদালতও। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক মুরলীধরন দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন, এত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য়ের পরও কেন কাউর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়নি।
অবশেষে ১২৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ। সেইসঙ্গে গ্রেফতার করা হল ৬২৩জনকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করল ফরেনসিক দল। দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ওপর তদন্তের ভার তুলে দিল দিল্লি পুলিশ। যদিও এই পরিস্থিতিতে, এখনও অধরা বন্দুক হাতে গুলি ছুড়তে থাকা সেই ভাইরাল হওয়া যুবক শাহরুখ। মুসলিম নামের আড়ালে যিনি আদতে একজন হিন্দু।
উত্তর-পূর্ব দিল্লির এই সংঘর্ষে শুধু সাধারণ মানুষই নন, নিহতদের মধ্য়ে রয়েছেন এক হেড কনস্টেবল, আইবি-র এক অফিসার ও বিএসএফের এক জওয়ান। অন্য়দিকে দাঙ্গায় অভিযুক্ত আম আদমি পার্টির কাউনসিলর তাহির হোসেন। দিল্লির চাঁদবাগে আইবি অফিসার অঙ্কিত শর্মার হত্য়ায় অন্য়তম অভিযুক্ত এই কাউনসিলরের বাড়ি থেকে ক-দিন আগেই উদ্ধার হয়েছিল বোমা।
এমতাবস্থায়, একটু -একটু করে হলেও উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকায় ঝাঁপ পড়ে যাওয়া দোকানপাট খুলছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। এদিন নতুন করে ফরেনসিক দল গিয়ে পৌঁছেছে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে। চলছে নমুনা সংগ্রহের কাজ। সংঘর্ষে নিহতদের মধ্য়ে ২৬ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে পুলিশ। বাকিদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। নিজেদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য় শুধু হাইকোর্টেই নয়, দেশজুড়েই সমালোচনা মুখে পড়তে হয়েছিল দিল্লি পুলিশকে। এফআইআর করতে আদালত চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিল পুলিশকে। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এমন স্পর্শকাতর সময়ে কাউর বিরুদ্ধে এফআইআর না-করাই উচিত। যদিও চার সপ্তাহের আগেই ১২৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। তবে প্রশ্ন উঠেছে, গুলি মার দো বলে এই সংঘর্ষে যাঁরা সরাসরি ইন্ধন যুগিয়েছিলেন, সেই কপিল শর্মা বা অনুরাগ ঠাকুরদের মতো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও কেন কোনও এফআইআর দায়ের করেনি দিল্লি পুলিশ।