সংক্ষিপ্ত

এই বছর জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১৩৮ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এরই সঙ্গে  সাধারণ নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাধারণ নাগরিক ও অ-কাশ্মীরিদের ওপর হামলার পরিমাণ জম্মু কাশ্মীরে (Jammu And Kashmir) বাড়ছে। এই তথ্য একদিকে যেমন ভয় ধরাচ্ছে, তেমনই সুখবর দিল ভারতীয় সেনা ও সিআরপিএফ (Indian Army and CRPF)। সিকিওরিটি ফোর্সের তরফে জানানো হয়েছে জম্মু কাশ্মীর জুড়ে যেভাবে তল্লাশি অভিযানের হার বাড়িয়েছে সিআরপিএফ, তাতে সাফল্য এসেছে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া খতিয়ান জানাচ্ছে এই বছরে ১৩৮ জন জঙ্গিকে নিকেশ (138 terrorists killed) করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। 

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই বছর জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১৩৮ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এরই সঙ্গে  সাধারণ নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বছরের শুরু থেকে উপত্যকায় প্রায় ৭০০ওভারগ্রাউন্ড কর্মীকে আটকে রেখেছে। সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন সিআরপিএফ উপত্যকায় আরও ৫৫০০ জওয়ান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

অক্টোবর মাস থেকেই উপত্যকায় সিআরপিএফের ২৫টি অতিরিক্ত কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে বলে বিশেষ সূত্রের খবর। বেশ কয়েক মাস ধরেই জম্মু ও কাশ্মীর জুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে জঙ্গিরা। তাঁদের নিশানায় বরাবারই থাকছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ বা ভিন রাজ্য থেকে রুজির টানে যাওয়া প্রবাসী শ্রমিকরা। এছাড়াও জঙ্গিদের অন্যতম নিশানা কাশ্মীরি পন্ডিতরা। স্থানীয় প্রশানের কথায় জঙ্গিরা উপক্যতায় আতঙ্ক ছড়াতেই এজাতীয় হামলা চালাচ্ছে। হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষকেই টার্গেট করছে জঙ্গিরা।

Global Warming-২০৩০ সালের মধ্যে জলের তলায় ডুববে কলকাতা, তালিকায় বড় বড় শহরের নামও

Modi in Approval ratings-বিশ্বনেতাদের ব়্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর, জনপ্রিয়তার শীর্ষে মোদী

পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরাও তাদের অন্যতম টার্গেট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া হাতে জঙ্গি দমন অভিযান চলছে গোটা উপত্যকা জুড়ে। বেশ কয়েক জন জঙ্গিকে নিশেকও করা হয়ে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। জঙ্গিদের কড়া বার্তা দিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমমন্ত্রী জম্মু ও কাশ্মীর সফর করেছেন। 

আটই নভেম্বর কাশ্মীরি পণ্ডিতের দোকানের মুসলমান কর্মীকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। রবিবার সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে নিহত হয়েছিল এক পুলিশ কর্মী। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই এটাই জম্মু ও কাশ্মীরে  ছিল জঙ্গিদের দ্বিতীয় হামলা। 

জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন জানিয়েছে সোমবার রাত ৮টার দিকে শ্রীনগরের প্রাণ কেন্দ্র বলে পরিচিত বোহির কোজাল এলাকায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। পেটে গুলি লাগে মোহম্মদ ইব্রাহিমের। গুলি বিদ্ধ অবস্থায় দোকান কর্মী মহম্মদ ইব্রাহিমকে  হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নিহত ব্যক্তি দীর্ঘ দিন করেই এই দোকানে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি বন্দিপোরা জেলায়। প্রায় ২৯ বছর বন্ধ থাকার পর দোকানের মালিক ২০১৯ সালে নতুন করে দোকানটি খুলেছিলেন। এটি একটি ওষুধের দোকান। সেই ফার্মেসিতেই বিক্রেতা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন মহম্মদ ইব্রাহিম। 

এই সব ঘটনার কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা বাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে চেকিং জোরদার করেছে। জওয়ানরা প্রতিদিন প্রায় ৮০০০ গাড়িতে ভ্রমণকারী সহ ১৫ হাজার লোকের তল্লাশি চালাচ্ছে। লস্কর ই তৈয়বা (এলইটি) এবং ইউনাইটেড লিবারেশনস ফ্রন্ট (ইউএলএফ) উপত্যকায় অকাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে হামলার দায় স্বীকার করেছে। সম্প্রতি, ULF একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে যে সমস্ত অ-স্থানীয়দের কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে যেতে বা 'তাদের যা প্রাপ্য তার জন্য প্রস্তুত হও'।