সংক্ষিপ্ত

ছেলেরাও যে যৌন নিগ্রহের শিকার হতে পারে তা অনেকেই মানতে চান না

কিন্তু, কেরলে এক সাম্প্রতিক সমীক্ষার ফল সেই ধারণা পাল্টে দিতে পারে

তবে এই পরিসংখ্যানও সম্পূর্ণ চিত্রের একটা অংশ মাত্র

কারণ অনেক ছেলেই এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায় না

 

ছেলেদের আবার যৌন নিগ্রহ, তাও হয় নাকি! অনেকেই মনে করেন শিশু বয়সে ছেলেদের যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঘটনা নেহাতই আকাশ কুসুম কল্পনা। কিন্তু, এক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরলে পুত্রশিশুরাই ১৭ শতাংশ ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নাবালকদের উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে মহিলারা।

২০১৫ থেকে ২০১৯ - এই ৫ বছরে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে কেরলে এই ৫ বছরে পকসো আইন (শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে সুরক্ষা আইন)-এর আওতায় মোট ১৩,১৮৪ টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২,২২৩ ক্ষেত্রে আক্রান্ত কোনও শিশুকন্যা নয়, শিশুপুত্র। তথ্য বলছে, ৫ বছরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২,২৫০ জন নাবালক। এদের মধ্যে ১৭ শতাংশের বয়স ৯ বছরের নিচে। আর ২৫ শতাংশ নাবালক ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী এবং বাকিদের বয়স ১৩ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল 'পেনিট্রেটিভ অ্যাসল্ট' অর্থাৎ পায়ু ধর্ষণের শিকার বেশি হয়েছে ৯ বছরের কম বয়সী ছেলেরাই। সমীক্ষা অনুসারে, অধিকংশ ক্ষেত্রেই ছেলেরা এই ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছে হয় নিজেদের বাড়িতে নয়তো নির্যাতন যে করেছে তার বাড়িতে। অর্থাৎ অপরাধীরা তাদের পূর্বপরিচিত ছিল।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে এই পরিসংখ্যান সম্পূর্ণ চিত্রের একটা অংশমাত্র। কারণ কলঙ্কের ভয়ে এবং বিশ্বাসী লোকের অভাবে অধিকাংশ ছেলেরাই যৌন নিগ্রহের বিষয়ে মুখ খোলে না। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছেলেরা মনে করে বাবা-মা'কে এই বিষয়ে জানালে তাঁরা তাদেরকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করতে পারেন, কিংবা বিষয়টিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারেন। এই আশঙ্কাতেই তারা বাবা-মা'কে কিছু বলতে চায় না। এই চেপে যাওয়া থেকে কিন্তু বড় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এর থেকে ভবিষ্যতে 'হাইপার-সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার' অর্থাৎ 'অতিরিক্ত যৌনাচার' বা যৌন হতাশার মতো রোগে ভুগতে পারে তারা।