সংক্ষিপ্ত

  • গত ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে দেশে শুরু হয় লকডাউন
  • এই সময়ে শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র প্রতিদিন দেখেছে দেশবাসী
  • বিদেশ বিভুঁইয়ে গিয়ে গর্ণধর্ষণ ও অত্যাচারের শিকার হন ২ মহিলা
  • শেষ পর্যন্ত উপায় না থাকায় নিজেদের সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নিতে হয় জঙ্গলে

করোনা সংক্রমণ আটকাতে গত ২৪ মার্চ মাঝরাত থেকে দেশে শুরু হয় লকডাউন। আর এই লকডাউনের জাতাকলে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা দেখেছে সারা দেশ। কোথাও বাড়ি ফিরতে মাইলের পর মাইল হাঁটছেন শ্রমিকদের দল। কোথাও ট্রাকে গাদাগাদি করে ফেরার পথে পথদুর্ঘটনায় মাঝপথেই শেষ হয়ে গিয়েছে জীবন। আবার কোথাও ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম নিতে গিয়ে রেলে কাটা পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের দল। খাবা নেই, নেই কাজ এই অবস্থায় তাঁদের দুর্দশার ছবি আমাদের অনেকের মনই সিক্ত করেছে। পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে প্রচুর সংখ্যক মহিলাও পাড়ি দেন ভিনরাজ্যে। তাঁদের কষ্টের ছবি এতদিন মিডিয়ার দৌলতে শিক্ষিত সমাজের সকলের কাছেই পৌঁছেছে। সম্প্রতি কর্ণাটকে এমনই ২ মহিলা পরিযায়ী শ্রমিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, বিদেশ বিভুঁইয়ে তাঁদের দুর্দশা সকলকে বাকরুদ্ধ করে দেবে।

ঝাড়খণ্ডের দুমকা থেকে কর্ণাটকে কাজ করতে গিয়েছিলেন ২ আদিবাসী মহিলা। লকডাউনের সময় বাড়ি ফিরতে না পেরে যাঁদের ২ সন্তান নিয়ে জঙ্গলে দিনের পর দিন আশ্রয় নিতে হয়েছে। এখানেই অবশ্য থেমে থাকেনি তাঁদের জীবনযুদ্ধ।  বেঙ্গালুরু কেঙ্গরি এলাকার একটি নির্মাণ সংস্থায় কাজ করতেন তাঁরা। সেখানে দুই ব্যক্তির নিয়মিত লালসার শিকার হতে হত ওই দুই পরিযায়ী মহিলা শ্রমিককে। দিনের পর দিন কেবল গণধর্ষণ নয় বেঁধে রেখে চলত মারধর। 

আরও পড়ুন: ফুলশয্যার রাতেই নেমে এল চরম পরিণতি, কী কারণে নববধূকে নৃশংস ভাবে খুল করল স্বামী

 ওই মহিলা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক মিলত সপ্তাহের মাত্র ২০০ টাকা। দিনে কাজ করতে হত ১৫ ঘণ্টার বেশি। সেই কারণে গত জানুয়ারি মাসে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই ২ মহিলা। কিন্তু কপাল খারাপ থাকায় ধরা পড়ে যান দু'জনে। চলতে থাকে মারধর। এই অবস্থায় মার্চের মাঝামাঝি ফের একবার পালানোর সুযোগ আসে দু'জনের কাছে। এবার বেঙ্গালুরু থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে কুম্বালাগডু এলাকার এক জঙ্গেল নিজেদের সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নেন দুই মহিলা। স্থানীয় মানুষদের থেকে ভিক্ষে করে শুরু হয় দিন কাটানো। 

আরও পড়ুন: ৩০০ টাকার লোশনের বদলে ১৯ হাজারি ব্লুটুথ হেডফোন, আজব অভিজ্ঞতা অ্যামাজনের গ্রাহকের

সেখানেও অবশ্য বিপদ অপেক্ষা করে ছিল দুজনের জন্য। এক কন্ট্রাক্টর তাদের আশ্রয় দিলেও, সেখানেও শুরু হয় অত্যাচার। এদিকে সাঁওতালি অন্য কোনও ভাষা জানা ছিল না দুই মহিলার। ফলে কারও কাছে সাহায্য চেয়েও মিলছিল না সুফল। এই সময় নিকোলাস মুর্মু নামে দুমকার এক বাসিন্দার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁদের। নিকোলাস ওয়ে ওঠেন তাঁদের দেবদূত। তিনি নিজেও কর্ণাটকে গেছিলেন এক নির্মাণ সংস্থায় কাজ করতে। দুই মহিলা তাঁকে সাঁওতালি ভাষায় সব জানান। অবশেষে তাঁর দৌলতেই গত ৫ জুন শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে করে বাড়ি ফিরলেন ওই দুই পরিযায়ী মহিলা শ্রমিক। এদিকে ধর্ষণের অভিযোগে নির্মাণ সংস্থার ওই ২ ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।