সংক্ষিপ্ত

  • বাগমতীর হড়কা বানে তলিয়ে গেল তিন মাসের শিশু
  • তার নিথর দেহ মিললেও নিখোঁজ আরও দুই ভাই বোন
  • এখনো পর্যন্ত বিহারে বন্যার বলি ৬৭ জন 
  • বন্যার কবলে ১৯টি জেলার ৪৬ লক্ষ মানুষ 

হাত-পা উপরের দিকে, চোখ বন্ধ - নিথর দেহটা অগোছালে পড়ে আছে। বিহারের বন্য়ার এই ছবিই আপাতত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। মায়ের সঙ্গে তিন মাসের ছোট্ট অর্জুন গিয়েছিল বাগমতী নদীর পারে। আর সেই সময়ই আচমকা হড়কা বানে ভেসে গিয়েছিল সে। অনেক পরে মিলেছে তাঁর ছোট্ট দেহটা। আর এই ছবি সোশ্য়াল মিডিয়ায় আসতেই ভাইরাল হয়েছে। তাঁর অসহায়ভাবে পড়ে থাকা দেখে অনেকেরই মনে পড়ে গিয়েছে সিরিয়ার অ্য়ালান কুর্দির কথা।
 
বুধবার সকালে বিহারের মুজফফরপুরের শীতলপট্টি এলাকায়, চার সন্তানকে নিয়ে বাগমতি নদীতে দৈনন্দিন কাজ সারতে গিয়েছিলেন রানীদেবী। কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থাতেই নদীর জল বাড়তে থাকে। আর তারপরই স্রোতের টানে ভেসে যায় তিন মাসের অর্জুন। তাকে বাঁচাতে তৎক্ষণাৎ নদীতে ঝাঁপ দেন রানীদেবী এবং বাকি তিন সন্তান। তাদের চিৎকারে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। মা এবং এক মেয়েকে উদ্ধার করতে পারলেও অর্জুন-সহ আরও তিন শিশু বাগমতীর জলে তলিয়ে যায়। পরে ৩ মাসের অর্জুনের দেহ উদ্ধার হলেও, তার আরও দুই ভাইবোন - রাজা এবং জ্যোতি এখনও নিখোঁজ। 

বাগমতী নদীর উৎপত্তি নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকায়। তারপরে সীমান্ত পেরিয়ে বিহারের চার জেলা- সীতামারি, শেওহার, মুজফফরপুর এবং খাগরিয়া জেলার উপর দিয়ে বয়ে বাদলাঘাটের কাছে কোশী নদীতে মিশেছে বাগমতী। নেপালে অত্যধিক বৃষ্টির ফলে অস্বাভাবিক হারে জলস্তর বেড়েছে বাগমতীর। এর ফলেই হড়কা বান বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারী হিসেবে বাগমতীর হড়কা বানে এখনও পর্যন্ত ৬৭ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। এরমধ্যে সীতামারিতে ১৭জন, এবং শেওহার জেলার ৯ জন আছেন। বুধবারে পর্যন্ত ১২ টি জেলার ৯২টি ব্লকের ৮৩১টি পঞ্চায়েত এলাকা বন্যা কবলিত। চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন এইসব এলাকার প্রায় ৪৬ লক্ষ ৮৩ হাজার মানুষ। 

এই ভয়াবহ অবস্থায় সরকার নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন আর কটা অর্জুনের মৃত্যু হলে সরকারি সহায়তা মিলবে?