সংক্ষিপ্ত

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যতম হাতিয়ার মাস্ক
কিন্তু মাস্কেও আসতে পারে বিপদ
ভুল মাস্কের ব্যবহারে সমস্যা বাড়াতে পারে 
যে সাধারণ ভুলগুলি শুধরে নিন
 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক একান্ত প্রয়োজনী। যাঁরা নিত্যদিন বাড়ির বাইরে বার হন তাঁদের মাস্ক ছাড়া একদমই চলে না। সংক্রমণের প্রথম দিয়ে সবাই ভেবে ছিলেন জীবানুর হাত থেকে বাঁচতে এন ৯৫ মাস্কই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের পক্ষ থেকে জানান হয়, কাপড়ের ত্রিস্তরীয় মাস্কই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত হাত থেকে বাঁচাতে সক্ষম। সেই মাস্ক বাড়িতে তৈরি করা হলেও কোনও সমস্যা নেই। এই পরিস্থিতিতে দেশে মাস্কের আকাল অনেকটাই কমে গেছে।  বাজারেও এসেগেছে ফ্যাসানেবেল মাস্কও। দেশেই শুরু হয়েগেছে আনলক ১.০। আর্থিক কার্যকলাপ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বহু মানুষই রুজিরুটির সন্ধানে বাড়ির বাইরে বার হচ্ছেন। সকলেই মাস্ক পরছেন। কিন্তু তারপরেও সংক্রমিত হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে এই ছবি। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখেছেন মাস্ক ব্যবহার সঠিক হচ্ছে না। তাই থেকে যাচ্ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। 

সংক্রমণ এড়াতে মাস্কের ব্যবহার সকলে করছে। কিন্তু বেশ কয়েকটা ভুলও তাঁরা করছেন। এবার সময় এসেগেছে নিজেদের ভুলগুলি শুধরে নেওয়ার। 

১. মাস্ক মুখের মাপের হতে হবে

মাস্ক দেখতে সুন্দর আর এটি শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার পক্ষে উপযোগী। এই দুটি জিনিস নজরে রাখলেই চলবে না। প্রথম দেখা জরুরি আপনার মুখোশটি নাক আর চিবুক ঢেকে রেখেছে কিনা। এটি দুটি প্রান্ত আলগা বা টাইট হতেই পারে। আর যদি তাই হয় তাহলে আপনি স্বস্তি পাওয়ার জন্য অজান্তেই মুখোশে বারবার হাত দেবেন। আর তা আপনার কারে হয়ে উঠবে বিপজ্জনক। তাই মাস্ক পুরোপুরি ফিট হতেই হবে। 

২. মাস্ক সরানো ঠিক নয়

প্রবলে গরমেও মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। যাঁদের দাঁড়ি বা গোঁফ থাকে তাঁদের সংস্যা আরও বেশি। ঘামের কারনে স্বস্তি পেতে মাঝে মাঝেই তা সরিয়ে ফেলছেন আপনি।   এতে শ্বাস প্রশ্বাসে সুবিধে হচ্ছে ঠিকই কিন্তু বিপদ দাঁড়িয়ে রয়েছে দরজায়। কারণ মাস্কের ওপর দিকটি আপনার মুখের খুব কাছেই রয়েছে। আর সেখান থেকে সংক্রমিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। কারণ আপনার হাততো মাস্কে লাগছেই পাশাপাশি আপনি যদি করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন তাহলে মুখোশের ওপর দিকটা আপনার নাকের বা মুখের কাছাকাছি থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ কাপড়ের মধ্যে করোনা দীর্ঘক্ষণ জীবিত থাকতে পারে। 

৩. নাক উন্মুক্ত রাখবেন না

চোখ, নাক আর মুখ দিয়ে করোনাভাইরাস দেহের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু এখনও অনেকই আছেন যাঁরা মাস্ক ব্যবহার করছেন কিন্তু নাক উন্মুক্ত রেখে দিচ্ছেন। এটি ভুলেও করবেন না। কাপড় থেকে তো বটেই আবার কোনও করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এলেও নাথা উন্মুক্ত হওয়ার কারণে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। 

৪. কথা বলার সময় মাস্ক সরানো ঠিক নয় 

শুধু হাঁচি বা কাশি থেকে নয়। কোনও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময়ও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই অনেকেই রয়েছেন যাঁরা কথা বলার সময় মাস্ক সরিয়ে ফেলেন। করোনার বিপদ এড়াতে মুখ নাক থেকে কখনই মাস্ক সরাবেন না। অনেকেই রয়েছেন যাঁরা মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়ও মাস্ক সরিয়ে ফেলেন। আর এতে তাঁরা নিজের অজান্তেই  ডেকে আনেন করোনা বিপদ। 

৫. মাস্ক খোলার নিয়ম

মাস্কের সামনের অংশ বা যে অংশ আপনার মুখ ঢেকে থাকে সেই অংশে যতটা সম্ভব কম হাত দেওয়া বাঞ্ছনীয়। মাস্ক খোলার জন্য এই অংশে হাত দেবে না। মাস্কের যে দঁড়ি বা ট্র্যাপ আপনার কানের পাশ দিয়ে যাচ্ছে সেই জায়গায় হাত দিয়ে খুলতে পারেন মাস্ক। এটাই সঠিক উপায়। 

৬. উল্টো মাস্কেও বিপদ 


সাধারণ কাপড়ের মাস্কে এই ভুল হওয়া স্বাভাবিক। তাই মাস্ক পরার সময় সর্বদা খেয়াল রাখুন কোন দিকে আপনার মুখের সঙ্গে লেগে রয়েছে আর কোন দিকটা বাইরে থাকছে। মাস্কের যে দিকটা বাইরে থাকে সেই দিকটা যদি ভুল বসত আপনি মুখের দিকে করে পরেন তাহলে সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়া খুবই কঠিন। আর যদি নাকের সামনে ধাতব কাঠি যুক্ত মাস্ক হয় তা হলে খেয়ার রাখবেন কোন দিকটা ওপরে রয়েছে আর কোন দিকটা নিচে। 

শুধু ব্যবহার নয়। মাস্ক পরিচ্ছন্ন রাখাও খুব জরুরী বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কথায়, যদি স্বাস্থ্য বিধি মেনে মাস্ক পরা হয় তাহলে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। তাঁদের কথায় ভুল মুখোশ পরাও একটি রোগেরই সামিল।