সংক্ষিপ্ত
- বিয়ে করতে গিয়েছিলেন এক বিএসএফ কনস্টেবল
- বিয়ের আসরেই হবু শ্বশুর দিতে চাইলেন ১১ লক্ষ টাকা নগদ পণ
- বদলে বিএসএফ জওয়ান নিলেন ১১ টাকা ও একটি নারকেল
- কারণ তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ অন্য কিছু
ভারতীয় সেমাবাহিনীর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ বিভিন্ন সময়েই ভারতকে গর্বিত করেছে। কিন্তু অনেক সময়ই সীমান্তবর্তী এলাকায় নারী নির্যাতন-সহ বিভিন্ন অভিযোগে কলুষিতও হয়েছে এই বাহিনীর নাম। এবার কিন্তু বাহিনীকে দারুণ গর্ব করার সুযোগ করে দিলেন জিতেন্দ্র সিং নামে বিএসএফ-এর এক কনস্টেবল। তবে সীমান্তে সজাগ থাকার পরিচয় দিয়ে নয়, স্রেফ একটি বিয়ে করে।
ভারতে দীর্ঘদিনই নিষিদ্ধ পণ প্রথা। পণ দেওয়া ও নেওয়া দুইই আইনের চোখে ফৌজদারি অপরাধ। কিন্তু ভারতীয় সমাজে আইন আর কতটা সুরক্ষা দিতে পারে। তাই চোরা-গোপ্তা পণের আদান-প্রদান চলেই। অনেক ক্ষেত্রেই পণ না দিতে পারার জন্য শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হতে হয় মেয়েদের। কিন্তু, সমাজের এই কলুষিত অংশের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিএসএফ কনস্টেবল জিতেন্দ্র।
গত শনিবার রাজস্থানের জয়পুরের অম্বা এলাকায় বিয়ে করতে এসেছিলেন তিনি। আগে থেকে পণের কোনও কথা না হলেও বিয়ের মণ্ডপে নিজে থেকেই জিতেন্দ্রর হাতে ১১ লক্ষ টাকা নগদ তুলে দেন মেয়ের বাবা গোবিন্দ সিংহ শেখওয়াত। জিতেন্দ্র কিন্তু তা নিতে সরাসরি অস্বীকার করেন। ভারতে পণ-চিত্রের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে বরপক্ষ পণ নিচ্ছে না দেখে মেয়ের বাবা আশঙ্কা করেন তাঁরই অ্যাপ্যায়নে কোনও ত্রুটি হয়েছে। তখন তাঁকে শান্ত করতেই শেষ পর্যন্ত জিতেন্দ্র টোকেন হিসেবে হবু শ্বশুরের হাত থেকে একটি নারকেল ও মাত্র ১১ টাকা গ্রহণ করেন।
জিতেন্দ্র আপাতত কাজের খাতিরে ছত্তীসগড়ে থাকেন। মাস কয়েক আগে তাঁর সঙ্গে বিবাহ ঠিক হয় রাজস্থানের চঞ্চল শেখওয়াত-এর। জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, তখনই তিনি জেনেছিলেন তাঁর হবু বউ এলএলবি ও এলএলএম পাশ করে পিএইচডি করছে। সেই শিক্ষাটাই তাঁর ও তাঁর পরিবারের কাছে যথেষ্ট ছিল। পণ নেওয়ার কথা ভাবতেই পারেননি। বর্তমানে চঞ্চল রাজস্থান জুডিসিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, চঞ্চল ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারলে, সেটা তাঁর পরিবারের কাছে দারুণ সম্মানের হবে।
এদিকে, গোবিন্দ সিংহ শেখওয়াত জানিয়েছেন, তিনি জানেন পণ দেওয়া আইনত দণ্ডনীয়। কিন্তু সমাজে এই ব্যবস্থাই এখনও চালু। তাই জিতেন্দ্র নগত নিতে অস্বীকার করায় প্রাথমিকভাবে তিনি ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন। পরে বুঝেছেন জিতেন্দ্র ও তাঁর পরিবার পণপ্রথার ঘোর বিরোধী। বুধঝেছেন তাঁর মেয়েকে একেবারে যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দিয়েছেন। জিতেন্দ্রর এই কাজে খুশি তাঁর সহকর্মীরাও। তাঁরা জানিয়েছেন জিতেন্দ্র সিং তাঁদের কাছে অনুপ্রেরণা। তাঁকে নিয়ে গর্বিত বাহিনীও।