সংক্ষিপ্ত

গোদাবরী অঞ্চলের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী উপজাতীয় গোষ্ঠী কোন্ডা রেড্ডি সম্প্রদায় এই গাছ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল। এই উপজাতির মানুষ প্রায় এক শতাব্দী ধরে এর বাকল কেটে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে।

পৃথিবীর অসীম রহস্যের মধ্যে গাছ এবং প্রাণীজগতের রহস্য সবচেয়ে আশ্চর্যজনক। আমরা তাদের সম্পর্কে যতই তথ্য জানি বলে দাবি করি না কেন, কখনও কখনও তাদের অজানা বৈশিষ্ট্য আমাদের অবাক করা দেয়। অন্ধ্রপ্রদেশের এএসআর জেলার পাপিকোন্ডা ন্যাশনাল পার্কে যখন বন কর্মকর্তারা ইন্ডিয়ান লরেন্স নামের একটি গাছের ছাল কেটে ফেলেন, তখন সেখান থেকে ফিনকি দিয়ে ঝরঝরিয়ে জলের স্রোত বের হতে থাকে।

একে ইন্ডিয়ান লরেল ট্রি বলা হয়, যেটি গ্রীষ্মকালে নিজের ভিতরে জল জমা করে রাখে। বৌদ্ধ ধর্মের লোকেরাও এই গাছটিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। বিশেষ করে গোদাবরী অঞ্চলের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী উপজাতীয় গোষ্ঠী কোন্ডা রেড্ডি সম্প্রদায় এই গাছ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল। এই উপজাতির মানুষ প্রায় এক শতাব্দী ধরে এর বাকল কেটে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে।

শনিবার (৩০ মার্চ), অন্ধ্র প্রদেশ বন বিভাগের কর্মকর্তারা আলুরি সীতারামা রাজু জেলার রাম্পা এজেন্সির পাপিকোন্ডা জাতীয় উদ্যানে পাওয়া একটি ভারতীয় লরেল গাছের (টার্মিনালিয়া টোমেনটোসা) বাকল কেটে দেখেন যে গাছটিতে জল আছে কীনা। যে ভিডিওটি সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ছাল কাটার সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে জলের স্রোত বেরোতে শুরু করেছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি.জি. নরেন্দ্রন বন বিভাগের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

 

 

কর্মকর্তারা কী বলছেন?

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নরেন্দ্রন বলেছেন, “যখন আমরা জাতীয় উদ্যানে ভারতীয় লরেল গাছের ছাল কেটে ফেলি, তখন সেখান থেকে জল বেরিয়ে আসে। কোন্ডা রেড্ডি উপজাতি গাছটি সম্পর্কে তাদের আদিবাসী জ্ঞান কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ছিল। গ্রীষ্মকালে, ভারতীয় লরেল গাছে জল জমে যা তীব্র গন্ধযুক্ত এবং টক স্বাদযুক্ত। তবে এই আবিষ্কারের ফলে ভারতীয় বনের গাছগুলিতে একটি আশ্চর্যজনক অভিযোজন দেখা গেছে।

গাছের কাঠ দামে বিক্রি হয়

ভারতীয় লরেলের কাঠ, যা ভারতীয় সিলভার ওক নামেও পরিচিত, এর উচ্চ বাণিজ্যিক মূল্য রয়েছে। যে কারণে বন কর্মকর্তারা এসব গাছের প্রজাতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হিসেবে গাছগুলোর সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেননি। সহজ ভাষায় একে কুমিরের ছাল গাছও বলা হয়। এই গাছের উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট লম্বা হতে পারে এবং এটি বেশিরভাগ শুষ্ক ও আর্দ্র বনাঞ্চলে পাওয়া যায়।

এই গাছের সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হল এর কাণ্ড জলে ভরা, যেখানে অন্যান্য গাছের তুলনায় এর কাণ্ড ফায়ার প্রুফ। এই গাছের অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা একে বোধিবৃক্ষ নামেও ডাকে। বিশ্বাস করা হয় যে এই গাছের নীচে তপস্যা করার সময় বোধিসত্ত্ব জ্ঞান লাভ করেছিলেন।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।