সংক্ষিপ্ত

তাঁকে লক্ষ্য করেন বলিউড অভিনেতা অনুপম খেরও। তিনি এরপর গ্লোবাল কাশ্মীরি পন্ডিত সংস্থাকে নিহত সঞ্জয় শর্মার মেয়ে দীক্ষার পড়াশোনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন।

গত রবিবার জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন কাশ্মীরি পন্ডিত সঞ্জয় শর্মা। এরপর তার মরদেহ বাড়িতে রাখা হয়। কবে জঙ্গিদের খপ্পর থেকে মুক্ত হবেন কাশ্মীরের হিন্দুরা তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত ছিলেন। তবে এসবের চেয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে বসে থাকা সাত বছরের ছোট্ট মেয়ে দীক্ষার চেহারা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মেয়েটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সে আর কেউ নয়। গুলিবিদ্ধ সঞ্জয় শর্মার মেয়ে। উদ্বিগ্ন মুখে, তাকে হতবাক হয়ে তাকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। চোখে জলের রেখা শুকিয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। সারা মুখের অভিব্যক্তিতে ছিল আতঙ্ক ও চিন্তার ছাপ।

গোটা ঘটনায় এতটাই হতবাক ছিল সে, যে মায়ের পাশে গিয়ে বসতেও যেন ভুলে গিয়েছিল। তার ছবি অনেকের নজরে আসে, অনেকেই দুঃখপ্রকাশ করেন, তবে এটি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তাঁকে লক্ষ্য করেন বলিউড অভিনেতা অনুপম খেরও। তিনি এরপর গ্লোবাল কাশ্মীরি পন্ডিত সংস্থাকে নিহত সঞ্জয় শর্মার মেয়ে দীক্ষার পড়াশোনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি চিঠিতে বলেন দীক্ষা যত খুশি পড়াশুনা করুক এবং আমি এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক।

এটিএম প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন সঞ্জয় শর্মা। বয়স ৪৫। রবিবার সকালে পাশের বাজার থেকে স্ত্রীর সঙ্গে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এরপর জঙ্গিদের হাতে নিহত হন তিনি। তিরিশ বছর আগে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা জঙ্গি কর্মকাণ্ডের কারণে কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যায়। মাত্র কয়েকজন এখনও উপত্যকায় বাস করে। তবে তাঁদেরও নিরাপত্তা এখন শিকেয়।

জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডে সঞ্জয় শর্মার স্ত্রী ও দুই সন্তান আজ অভিভাবকহীন। দীক্ষার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেককে চমকে দিয়েছে। অনেকেই পরিবারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বিশ্ব কাশ্মীর পন্ডিত সংস্থার প্রধান সুরিন্দর কৌল সঞ্জয় শর্মার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি সাহায্য করতে চান।

এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ মঙ্গলবার সকালে একটি এনকাউন্টারে সঞ্জয় শর্মাকে গুলি করা জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে। গুলিবিদ্ধ জঙ্গি এর আগে হিজবুল মুজাহিদিনের সাথে যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা প্রতিনিয়ত জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। খোদ পুলওয়ামাতেই সঞ্জয় শর্মা নামে এক কাশ্মীরি পণ্ডিতকে লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করে জঙ্গিরা। এই ঘটনা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মনে জঙ্গিদের হামলার ভয়কে আরও দৃঢ় করেছে। নব্বইয়ের দশকে উপত্যকা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া পণ্ডিতদের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় এই টার্গেট কিলিং মোদী সরকারের জন্য একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।