সংক্ষিপ্ত

প্রথমে নিজের মোবাইল ফোনটি বিক্রি করেন

সেই টাকা দিয়ে পরিবারের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন

আর তারপর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহনন

লকডাউনে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল হরিয়ানার গুরুগ্রামে

 

লকডাউনের মধ্যে এক অদ্ভূত এবং মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল হরিয়ানার গুরুগ্রামের সরস্বতীকুঞ্জ এলাকার এক বস্তিতে। নিজের টিনের ঝুপড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক হতদরিদ্র যুবক। ৩০-এর গোড়ায় তার বয়স। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার আগে তিনি তাঁর মোবাইল বিক্রি করে তার পরিবারের জন্য অন্তত কয়েকদিনের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন।

জানা গিয়েছে, ওই যুবতের নাম মুকেশ। গত শুক্রবার বিকালে তিনি প্রথমে তার সেলফোনটি বিক্রি করেন, তাতে আড়াই হাজার টাকা এসেছিল। সেই টাকায় তিনি  পরিবারের জন্য অন্তত একমাসের চাল, ময়দা এবং চিনি কেনেন। একটি টেবিল ফ্যান-ও কিনেছিলেন, বলেছিলেন স্ত্রী ও তাঁর চার সন্তান গ্রীষ্মের উত্তাপে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমোতে পারবে। বাকি যা সামান্য টাকা বেঁচেছিল, সেটা তিনি স্ত্রী পুনমের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

পুনম জিনিসপত্র সব গুছিয়ে ঘরে ফিরে এসেই দেখেছিলেন স্বামী সিলিং থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। ফোন বিক্রির টাকায় জিনিসপত্র কেনার পর যে টাকাটা ছিল, সেচা ছাড়া তাদের ঘরে আর কোনও টাকা ছিল না। প্রতিবেশিরাই তার শেষকৃত্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। মুকেশের চার সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠজনের বয়স মাত্র চার মাস। অন্য তিন সন্তান সাত বছরের সোনি, চার বছর বয়সী গোলু এবং দুই বছরের কাজল।

মুকেশের শ্বশুর, উমেশ মুখিয়া জানিয়েছেন, আগে মুকেশ ঘরবাড়ি রং করার কাজ করত। কিন্তু, গত ক'মাস ধরে সেই কাজে প্রবল মন্দা চলছিল। কাজকর্ম না পেয়ে বাধ্য হয়ে দিনমজুর হিসাবে, যা কাজ পেতেন, তাই করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু, লকডাউন-এ সেই কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। উমেশ আরও জানান, কয়েক জাগায় ঋণ নিয়েছিল মুকেশ, যা শোধ করার চাপ-ও ছিল। এইসব কারণেই আত্মহনের পথ বেছে নিয়েছে তাঁর জামাই, বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

তবে পুলিশ কমিশনার মহম্মদ আকিল-এর দাবি মুকেশ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলে তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন। মুকেশের পরিবারের একজন সদস্যই নাকি পুলিশকে জানিয়েছে, তিনি সম্প্রতি ভিক্ষা করতেন। তার আয়ের কোনও নিয়মিত উৎস ছিল না। আর্থিক চাপেই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল।