সংক্ষিপ্ত
- ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স শক্তির দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ স্থান অধিকার করে
- ১৯৫০ সাল থেকে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে চার বার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে
- চিনের সঙ্গে একবার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে
- উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্য রয়েছে অপারেশ বিজয়, অপারেশন মেঘদূত, অপারেশ ক্যাকটাস ও অপারেশন পুমালাই
ভারতের সেনাবাহিনীর সব থেকে শক্তিশালী বিভাগ ভারতীয় বায়ুসেনা। পশ্চিমি দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতের এয়ার ফোর্স শক্তির দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ব্রিটিশ সাম্র্রাজ্যের সময়ই ভারতের বায়ুসেনার প্রতিষ্ঠা হয়। সময়টা ১৯৩২ সালের ৮ অক্টোবর। সেই সময় নাম ছিল রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। স্বাধীনতার পর এই নামের পরিবর্তন হয়।
১৯৫০ সাল থেকে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে চারটি ও চিনের সঙ্গে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি অভিযানের মধ্যে রয়েছে অপারেশ বিজয়, অপারেশন মেঘদূত, অপারেশ ক্যকটাস ও অপারেশন পুমালাই। ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের অধীনে প্রায় এক লক্ষ ৭০ হাজার কর্মী রয়েছেন।
স্বাধীনতার পরেই ভারতীয় বায়ুসেনার পরীক্ষা
স্বাধীনতার পর প্রথমদিকে ভারতীয় বায়ুসেনার নাম ছিল রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। স্বাধীনতার পরেই জম্মু ও কাশ্মীরে রয়্যাল পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পরেই জম্মু ও কাশ্মীরের দিকে পাক বাহিনী হামলা করে। জম্মুও কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা ভারতের সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা না হলেও জম্মু ও কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে সেই সময় ভারত বা পাকিস্তানের বায়ুসেনা বাহিনী মুখোমুখি কোনও লড়াইয়ে নামেনি। এরপরেই ১৯৫০ সালে ভারত সাধারণতন্ত্র রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সেই সময় রয়্যাল ইন্ডিয়ান ফোর্সের নাম পরিবর্তন করে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স হয়।
কঙ্গো ক্রাইসিস
১৯৬০ সালে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স বিশ্বের একটা উল্লেখযোগ্য বিদ্রোহের সাক্ষী হয়েছিল। বেলজিয়ামের শাসন থেকে মুক্তি পেতে কঙ্গোতে তখন বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল। রাষ্ট্রসংঘকে সমর্থন করতে কঙ্গোতে উপস্থিত হয় ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। এই বিদ্রোহ ১৯৬৬ পর্যন্ত চলেছিল।
গোয়ার স্বাধীনতা
১৯৬১ সালে পর্তুগীজ কলোনি গোয়াকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় নয়াদিল্লি। এই বিষয়ে পর্তুগালের সঙ্গে ভারত বার বার কথা বলতে গেলেও সফল হয়না। সেই সময় নয়াদিল্লি গোয়াকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। ভারত অপারেশন বিজয় শুরু করে। পর্তুগাল ও ভারতীয় এয়ার ফোর্সের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর পর্তুগাল ভারতের কাছে আত্মসমর্পন করে। গোয়া ভারতের অংশ হয়ে যায়।
ইন্দো চিন লড়াই
সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার জেরে ভারত-চিন যুদ্ধ শুরু হয়। এই সময় চিনের বায়ুসেনার মুখোমুখি হয় ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। সেই সময় ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এঁটে উঠতে না পারলেও, সেইসময় থেকেই তারা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
ভারত পাকিস্তান লড়াই, ১৯৬৫
১৯৬৫ সালে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান অপারেশন জিব্রাল্টর নিয়ে আসে। তুমুল লড়াই প্রায় অমিমাংসিতভাবে শেষ হয়ে যায়। তীয় ববায়ুসেনা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পর পর এই দুই ব্যর্থতাই ভবিষ্যতের সাফল্যের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছিল।
বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ
১৯৭১ সালে পূ্র্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা আনতে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স সাহায্য করে। এই যুদ্ধে পাকিস্তানের চুড়ান্ত পরাজয় ঘটে। মূলত ভারতীয় বায়ুসেনার সাহায্যেই পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্র হয়।
কার্গিল, ১৯৮৪-৮৮
কাশ্মীর প্রদেশের সিয়াচেন হিমবাহ নিজেদের হেফাজতে আনতে অপারেশন মেঘদূত নিয়ে আসে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। এই অপারেশনে দারুণ সাফল্য লাভ করে ভারত।
কার্গিল যুদ্ধ, ১৯৯৯
১৯৯৯ সালে কার্গিল লড়াইয়ে পাকিস্তান পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। সেই ক্ষেত্রেও ভারতীয় বায়ুসেনার বড় ভূমিকা ছিল।
বালাকোটে বিমান হামলা
পুলওয়ামার হামলার পর পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেয় বায়ুসেনা। বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়ে জইশ-ই-মহম্মদ'এর ঘাঁটি গুঁড়িুয়ে দেয় ভারত।
অভিনন্দন বর্তমান
এর পরই পাকিস্তান ভারতে একই ধরণের বিমান হানা চালাতে গিয়েছিল। কিন্তু মিগ-২১ বিমান দিয়ে সেই হামলাও রুখে দেয় ভারত। প্রবল পরাক্রম দেখিয়ে পাকিস্তানের হাতে বন্দি হন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তিনি আপাতত যুব সমাজের আদর্শ হয়ে উঠেছেন।