মাত্র ১০০ মিটার দূরে ছিল বাড়ি, মন্দির থেকে ফিরছিলেন... কিন্তু ভাগ্যে ছিল অন্য লিখন! অলওয়ারের শিবাজি পার্কে এক বৃদ্ধ দম্পতির জীবন কেড়ে নিল মাতাল চালকের গাড়ি। ছেলে বিদেশে, মেয়ে দূরে… আর মা-বাবা পড়ে রইলেন রাস্তায়।
Shivaji Park Accident : রাজস্থানের অলওয়ার জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। শহরের শিবাজি পার্ক এলাকায় সোমবার রাতে এক বৃদ্ধ দম্পতি পথ দুর্ঘটনার শিকার হন। সতীশ বিজয় (৬২) এবং তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি বিজয় (৫৯) মন্দির থেকে দর্শন সেরে মাত্র ১০০ মিটার দূরে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু ভাগ্যে ছিল অন্য লিখন।
মন্দির থেকে ফিরছিলেন… দ্রুতগামী গাড়ি কেড়ে নিল প্রাণ
ত্রিপোলিয়া মহাদেব মন্দির থেকে দর্শন সেরে স্কুটারে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। হঠাৎ একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাঁদের সজোরে ধাক্কা মারে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গাড়ির চালক সম্পূর্ণ মাতাল ছিলেন এবং এর আগেও একটি স্কুটিকে ধাক্কা মেরেছিলেন। দম্পতির বাইকটিকে সামনে থেকে ধাক্কা মারার পর গাড়িটি একটি খুঁটিতে ধাক্কা খেয়ে থেমে যায়। আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং গুরুতর আহত সতীশ-পিঙ্কিকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
বাড়ি মাত্র ১০০ মিটার দূরে- ছেলে রাশিয়ায়, মেয়ে গুরুগ্রামে
মৃত সতীশ বিজয় পেশায় একজন হিসাবরক্ষক ছিলেন এবং পরিবারের সাথে শিবাজি পার্কে থাকতেন। দুর্ঘটনাটি তাঁদের বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ঘটে, যা এলাকায় শোকের ছায়া নিয়ে আসে। তাঁদের এক মেয়ে গুরুগ্রামে বিবাহিত, আর ছেলে রাশিয়ায় মেডিকেলের পড়াশোনা করছে। স্বামী-স্ত্রী একাই বাড়িতে থাকতেন এবং প্রতিদিনের মতো মন্দির দর্শন করে ফিরছিলেন, কিন্তু সেই রাতটিই হয়ে উঠলো তাঁদের জীবনের শেষ রাত।
অভিযুক্ত শনাক্ত, মেডিকেল পরীক্ষায় নিশ্চিত
পুলিশ দুর্ঘটনার পরপরই গাড়ির চালককে আটক করে। অভিযুক্তের নাম অপূর্ব পুত্র দীপক, বাসিন্দা হাসান খান মেওয়াত নগর। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ (অবহেলাজনিত মৃত্যু), ২৭৯ (দ্রুত ও অবহেলায় গাড়ি চালানো) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। মেডিকেল পরীক্ষায় অভিযুক্তের মদ্যপ অবস্থায় থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
জনগণের ক্ষোভ, প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, যাতে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং শিবাজি পার্কের মতো ব্যস্ত এলাকায় স্পিড ব্রেকার বা সিসিটিভি ক্যামেরার মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।
শেষ হয়ে গেল পরিবার, দায়ী কে?
এই দুর্ঘটনা আবারও ভাবতে বাধ্য করে যে, রাস্তায় কি জীবন এত সস্তা হয়ে গেছে? এক মাতালের অবহেলার কারণে দুটি প্রাণ চলে গেল, আর হাজার কিলোমিটার দূরে বিদেশে থাকা ছেলেটি আর কখনও তার মা-বাবাকে দেখতে পাবে না।


