সংক্ষিপ্ত
দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এর (Kashmir Files) বিষয়ে বলতে গিয়ে অনুপম খেরের (Anupam Kher) মা দুলারির (Dulari) চোখে এল জল। বিবেক অগ্নিহোত্রীকে (Vivek Agnihotri) ধন্যবাদ জানিয়ে কী বললেন তিনি?
বক্স অফিসে দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এর (Kashmir Files) জয়যাত্রা অব্যাহত। আগামী সোমবারের মধ্য়েই সিনেমাটি ১৭৫ কোটি টাকার ক্লাবে ঢুকে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এরমধ্যে, সিনেমাটির অন্যতম অভিনেতা অনুপম খের (Anupam Kher) তাঁর মা দুলারির (Dulari) কাছ থেকে ছবিটির বিষয়ে মতামত নিলেন। সেই ভিডিও তিনি সোশ্য়াল মিডিয়াতেও শেয়ার করেছেন অনুপম। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে কাশ্মীর উপত্যকা (Kashmir Valley) থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের (Exodus of Kashmiri Pandits) উপর ভিত্তি করে তৈরি এই সিনেমা। দুলারি, নিজেও একজন কাশ্মীরি পণ্ডিত। তিন দশক আগে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার চাপে, তাঁর ভাইকেও মাতৃভূমি ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। আর সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন অনুপম খেরের মা।
প্রায়শই দুলারিকে অনুপম খেরের তৈরি সোশ্য়াল মিডিয়া ভিডিওতে দেখা যায়। এদিনও, ইনস্টাগ্রামে এই ভিডিওটি শেয়ার করে, অনুপম লিখেছেন, একটু হালকা চালেই তিনি তাঁর মাকে দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এর বক্স অফিস সাফল্যের কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেই রকম মেজাজে ছিলেন না। অনুপম আরও জানান, তাঁর ছোট ভাই মতিলাল কাক-সহ (Moti Lal Kak) কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তাঁর মা অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছেন।
অনুপম খেরের শেয়ার করা ভিডিওতে, দুলারিকে এই ছবি নির্মাণের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা বিবেক অগ্নিহোত্রীকে (Vivek Agnihotri) কৃতজ্ঞতা জানাতে দেখা গিয়েছে। অনুপম তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, চলচ্চিত্রটি ঠিক কী কারণে চারদিক থেকে ভালোবাসা পাচ্ছে? তাঁর মা বলেন, কারণ 'ফিল্মটিতে ঠিক যা ঘটেছে, তাই দেখানো হয়েছে'। এরপরই অর্ধেক হিন্দি এবং অর্ধেক কাশ্মীরিতে তিনি তিন দশক আগের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা বর্ণনা করেন।
দুলারি জানান, তাঁর ভাই থাকতেন রামবাগে (Rambagh)। এক সন্ধ্যায় বাড়ি এসে তিনি দেখেছিলেন, বাড়ির দোরগোড়ায় একটি চিঠি রাখা। তাতে লেখা ছিল, 'আজ তোমার পালা'। অথচ, সেই বছরই মতিলাল কাক ওই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। বাড়ির ও অন্যান্য সম্পত্তির নথিপত্র বা ব্যাঙ্কের পাসবুকও সংগ্রহ করার সময় পাননি তিনি, প্রাণ বাঁচাতে অবিলম্বে পালাতে হয়েছিল।
দুলারি আরও জানিয়েছেন, তাঁর ভাইয়ের মতো বহু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা ছেড়ে যেতে হয়েছিল। কাউকে কাউতে চলে আসতে হয়েছিল, তাঁদের স্ত্রী এবং সন্তানদের পিছনে ফেলে। কাশ্মীর ছেড়ে তাদের দিল্লি (Delhi), মুম্বই (Mumbai) বা অন্য শহরে পালাতে হয়েছিল। ভিটে-মাটি ছেড়ে এসে তাদের মাথা গোঁজারও একটা জায়গা ছিল না। তাঁদের আশ্রয় নিতে হয়েছিল তাঁবু বা আশ্রয় শিবিরে। তার ভাইও মতিলাল কাকও এরকমই একটি তাঁবুতে ছিলেন। দুলারি বলেছেন, সেই অবস্থা তিনি তাঁর চরম শত্রুদের জন্যও কামনা করেন না। পরবর্তীকালে, যে বাড়ি তিনি তৈরি করেছিলেন, সেই বাড়ি থেকে দূরে থাকার যন্ত্রনার কারণেই ভগ্ন হৃদয়ে মারা যান মতিলাল।
ভিডিওর অন্য অংশে, দুলারি জানিয়েছেন, এখন সরকারের উচিত, উপত্যকা থেকে পালানো সব কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একটি করে বাড়ি দেওয়া। তিনি জানিয়েছেন, তিনি নিজেও কাশ্মীরে ফিরতে চান। করণ নগরে (Karan Nagar) একটি বাড়ি কিনতে চান, কারণ সেখানেই তাঁর শৈশব কেটেছে। তাঁর এখন নিজের বাড়ি থাকলেও, তিনি শেষ জীবনটা শৈশবের সেই পাড়াতেই থাকতে চান।