সংক্ষিপ্ত
অসম ও মণিপুরে আফিম চাষের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। কুকি সম্প্রদায় প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলাও করেছে। তারা অভিযোগ করছে যে আসল ড্রাগ মাফিয়াদের রেহাই দেওয়া হচ্ছে।
অসম এবং মণিপুরের সরকার একই রকম অভিযান চালাচ্ছে। আফিম চাষের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানে মণিপুরে জাতিগত হিংসার শিকার কুকি সম্প্রদায় প্রতিবাদে নেমেছে। যদিও মণিপুর ছাড়াও অসম সরকারও আফিমের অবৈধ চাষের উপর নজরদারি শুরু করেছে। অসমের গোয়ালপাড়া জেলায় অবৈধ আফিম চাষের (Illegal Poppy Cultivation) বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার পর অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma) এবং এন বীরেন সিং (N Biren Singh) একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
স্থানীয় পাবলো এসকোবার!
অসম পুলিশ জানুয়ারিতে গোয়ালপাড়া জেলার চারটি এলাকায় ১৭০ বিঘা (৫৬ একর) জুড়ে ছড়িয়ে থাকা আফিমের অবৈধ চাষ ধ্বংস করে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রবিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (X)-এ এর ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন: স্থানীয় পাবলো এসকোবার (Pablo Escobars), দুঃখিত আপনার ‘উড়তা অসম’ (Udta Assam) স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
উড়তা পাঞ্জাব ছবির সংলাপ পরিবর্তন করে মুখ্যমন্ত্রী লিখলেন
বিশ্ব শর্মা সতর্ক করে বলেছেন: অসম পুলিশ ২৭.২০ কোটি টাকার অবৈধ আফিম চাষ ধ্বংস করেছে। পরের বার ড্রাগস নিয়ে ভাবার আগে অসম পুলিশকে মনে রাখবেন। শর্মা এই বক্তব্য দিয়ে ২০১৬ সালের জনপ্রিয় বলিউড ছবি ‘উড়তা পাঞ্জাব’ (Udta Punjab)-এর দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যা পাঞ্জাবে মাদকের সমস্যা নিয়ে তৈরি হয়েছিল।
মণিপুর মুখ্যমন্ত্রী-এর সমর্থন, উত্তর-পূর্বে ‘মাদকমুক্ত সমাজ’র সংকল্প
অসম সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছেন: মাদকমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য অসম এবং মণিপুর একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি তার পোস্টে লিখেছেন: মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জীর নেতৃত্বে অসমে আফিমের অবৈধ চাষের বিরুদ্ধে নেওয়া কঠোর সিদ্ধান্তের জন্য আমি গভীর প্রশংসা করি। আমাদের সংকল্প হল উত্তর-পূর্ব (Northeast) -এর প্রতিটি যুবককে মাদকের ছায়া থেকে রক্ষা করা এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেওয়া।
মণিপুরেও ব্যবস্থা
মণিপুর সরকারও আফিমের অবৈধ চাষের উপর কড়া ব্যবস্থা নিয়ে টেঙ্গনৌপাল সাব-ডিভিশনের (Tengnoupal Subdivision) খুদাই খুলেন (Khudei Khullen) পাহাড়ি এলাকায় ২৫ একর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অবৈধ ফসল ধ্বংস করে এবং একটি এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে।
কুকি সম্প্রদায় বলছে- আসল ড্রাগ মাফিয়া ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে
মণিপুরে মে ২০২৩ থেকে চলা জাতিগত হিংসার (Ethnic Violence) মধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযান নিয়ে বিতর্কও তীব্র হচ্ছে। রাজ্যে মেইতেই (Meitei) এবং কুকি (Kuki) সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে, যার মধ্যে রয়েছে ভূমি অধিকার (Land Rights) এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব (Political Representation) -এর মতো বিষয়।
কুকি সম্প্রদায় অভিযোগ করেছে যে রাজ্য সরকার গরিব কৃষকদের টার্গেট করছে, অথচ আসল ড্রাগ মাফিয়াদের (Drug Lords) खुली छूट দেওয়া হচ্ছে। মণিপুর সরকার এই অভিযোগগুলি খারিজ করে পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে দাবি করেছে যে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ (War on Drugs) কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট করার জন্য নয়, বরং রাজ্যকে মাদকমুক্ত করার জন্য।
কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা
মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় (Kangpokpi District) শুক্রবার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল যখন অবৈধ আফিমের ফসল ধ্বংস করতে পৌঁছায়, তখন কুকি সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০ জনের ভিড় হামলা চালায় এবং পুলিশ ও সিআরপিএফ (CRPF)-এর চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে।