সংক্ষিপ্ত

  • বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে রইল অটল টালেন
  • বাজপেয়ীর হাতে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন
  • সোনিয়া গান্ধীর উদ্যোগে কাজ শুরু 
  • উদ্বোধন করবেন নরেন্দ্র মোদী 

বন্ধুত্বের প্রকীত অটল টানেল। কিন্তু এই টানেল মানালি আর লে-র বাসিন্দাদের স্বপ্ন কতটা পুরণ করবে তাই এখন দেখার অপেক্ষায়। কারণ হিমালের মত লাদাখই মূলত পর্যটন নির্ভর। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে চলতি বছর লাদাখের পাশাপাশি হিমাচলেও ট্যুরিজিমে খরা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি চিনের সঙ্গে চলমান বিবাদের কারণে লাদাখে আগামী বছর পর্যটন শিল্প কতটা জমবে তাই নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবুই আগামী দিনে অটল টানেল ঘিরে পর্যটন শিল্প বাড়বে বলেই আশা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সালটা ছিল ২০০৩। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। হিমাচল ছিল তাঁর অত্যান্ত প্রিয় রাজ্য। তখনই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে রোটাং টানেল তৈরি আর্জি জানিয়েছিলেন তাসি দাওয়া ওরফে অর্জুন গোপাল। যিনি ১৯৪২ সাল থেকেই ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ীর বন্ধু। স্বাধীনতার আগে গুজরাতের বরোদায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একটি শিবিরে অটলবিহারীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল লাহাল উপত্যকার বাসিন্দা পেশায় কৃষক তাসি দাওয়া বা অর্জুন গোপালেপ। পরবর্তীকালেই অটুট থেকে যায় তাঁদের বন্ধুত্ব। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অটলবিহারী যখন মানালির প্রিনিতে তাঁর বাংলোয় আসতেন তখন তিনি ডেকে পাঠানের অর্জুন গোপালকে। আর সেই সময়ই গল্পের ছলেই বন্ধুর কাছে টানেল তৈরির আর্জি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন বছরের অধিকাংশ সময়ই গোটা এলাকা বরফে ঢেকে থাকে। এই অবস্থায় লাহাল স্পিতি উপত্যাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গোটা দেশ থেকে। তাই টানেল তৈরি হলে সারা বছর যোগাযোগ বজায় থাকবে। 

বন্ধুর আর্জি মেটাতে তৎপর হয় তৎকালীর প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। ২০০২ সালে এই প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়া। কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে মনোমহন জমানায়। টানেল তৈরি হতে প্রায় ১০ বছর লাগেছে। আর ২০২০ সালে ৩ অক্টোবর এই টানেলের উদ্বোধন হবে নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক কারণের একাধিকবার কাজে বাধা পড়েছে। অবশেষে সব বাধা অতিক্রম করে চলতি বছর টানেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। টানেল তৈরির কাজ শেষ হওয়ায় দাওয়ার স্বপ্ন পুরণ হয়েছে বলেও জানিয়েছে লাহাল স্পিতির বিজেপি বিধায়ক রামলাল মার্কান্দা। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় এই টানেল চালু হলে লে থেকে মানালি পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা। সারা বছর ধরেই লে-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে। পাশাপিশ উপকৃত হবেন স্থানীয় কৃষক, শিল্পী আর ব্যবসায়ীরা। তাঁরা তাঁদের তৈরি জিনিস যেকোনও সময় যোকোনও জায়গায় পৌঁছে দিতে পারবেন। কারণ অত্যাধিক তুষারপাতের কারণে নভেম্বর মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যার রোটাংপাস হয়ে লাহাল স্পিতি  যাওয়ার রাস্তা। একই অবস্থায় জম্মু ও কাশ্মীর থেকে লে যাওয়ার রাস্তা। আগে শীতলাকে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর গাড়িগুলিই চলাচল করত। তাও বিশেষ প্রয়োজনে। আর এই টানেল চালু হলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। পাশাপাশি চিনের সঙ্গে চলা বিবাদের কারণেও এই টানেল খুবই প্রয়োজনীয়। যেকোনও সময় সমতল থেকে সেনার রসদ পাঠাতে শীতকালে এই টানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই আশা করা হচ্ছে।