সংক্ষিপ্ত

বাবরি ধ্বংস ঠেকাতে অবিচ্ছিন্ন পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি

সেই সময়ের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন মাধব গড়বোলে

তাঁর সুপারিশ অবশ্য মানেননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী

কেন সিবিআই আদালতের রায় 'অবিশ্বাস্য' বলছেন তিনি

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন মাধব গড়বোলে। শুধু তাই নয়, বাবরি মসজিদ ধ্বংস ঠেকাতে ১৯৯২ সালে একটি অবিচ্ছিন্ন পরিকল্পনাও তৈরি করেছিলেন তিনি। তারপরও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আটকাতে পারেননি। বুধবার লখনউ-এর এক বিশেষ সিবিআই আদালত বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় ঘোষণা করার পর বলেছেন, ওইদিনের ঘটনার পিছনে কোনও 'অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ছিল না', এটা তাঁর কাছে 'অবিশ্বাস্য' বলে মনে হচ্ছে।

এখানে জানিয়ে রাখা ভারলো, এদিন সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার ৩২ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধ্বংসযজ্ঞ পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। যড়যন্ত্রের পক্ষে এর আগে আদালতে যেসব প্রমাণ পেশ করা হয়েছিল, সেইসব যথেষ্ট মজবুত নয় বলে মন্তব্য করেন বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব।

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব গড়বোলে অবশ্য দাবি করেছেন, য়ে বিপুল করসেবক ধ্বংসযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল, সেই আকারের একটি বিশাল জনতা সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে একত্রিত হতে পারে এটি বিশ্বাস করা যায় না। কোনও পরিকল্পনা ছাড়া, কোনও প্রস্তুতি ছাড়া মাত্র পাঁচ ঘন্টায় ওই বিশালাকার মসজিদটি ভেঙে দেওয়া যায় তাও বিশ্বাস করা অসম্ভব। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্ট-ও এর আগে মসজিদ ধ্বংস করার বিষয়টি অপরাধমূলক কাজ বলে ঘোষণা করেছিল। বাবরি ধ্বংসের মাত্র কয়েকদিন পরই তিনি নিজে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত এলাকায় গিয়েছিলেন। সেই সফরের অভিজ্ঞতা অনুযায়ীও, ওই ঘটনার পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না, তা বিশ্বাস করা তাঁর পক্ষে খুব কঠিন। তাই আদালত ষড়যন্ত্রের কোনও প্রমাণ পাইনি এটা তার একেবারেই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।

অবসরের পর গোড়বোলের লেখা বই থেকে জানা যায়, তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাওকে স্বরাষ্ট্র সচিব হিসাবে তিনি সংবিধানের ৩৫6 ধারা প্রয়োগ করে কাঠামোটি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করে সেটি রক্ষার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু নরসিমা রাও সেই মানেননি।

তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীও এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন বলে মনে করেন তিনি? নিউজ ১৮-কে দেওযা এক সাক্ষাতকারে গোড়বোলে জানিয়েছেন, নরসিমা রাও সম্ভবত এই বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তখনও প্রস্তুত ছিলেন না। ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের প্রস্তাব সম্ভবত তাঁর কাছে রাজনৈতিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। 'এর বাইরে আর কিছু' তিনি বলতে পারবেন না বলে ধোঁয়াশা তৈরি করেছেন এই প্রাক্তন আইএএস অফিসার।