সংক্ষিপ্ত
যখন আয়কর দফতর বিবিসি ইন্ডিয়ার অফিসে অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করেছিল, তখন সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছিল বিরোধী দলগুলি
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বা বিবিসি, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি) কে পাঠানো একটি ইমেলে তার আয়ের ৪০ কোটি টাকা কম রিপোর্ট করার কথা স্বীকার করেছে। এমনই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে একাধিক মিডিয়া রিপোর্টে।
এই তথ্যকে হাতিয়ার করতে চলেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। কারণ যখন আয়কর দফতর বিবিসি ইন্ডিয়ার অফিসে অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করেছিল, তখন সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছিল বিরোধী দলগুলি। একাধিক বিরোধী নেতা এটিকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর একটি নির্মম আক্রমণ এবং ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা শুরু হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার কথা বলে ডকুমেন্টারিটি প্রচার করার জন্য বিবিসির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার কাজ হিসাবে অভিহিত করেছিল।
আয়কর বিভাগের আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে বিবিসি ইন্ডিয়া একটি প্রতিহিংসামূলক কাজ হিসাবে আইটি বিভাগের কাজকর্মকে প্রজেক্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা করেছিল।
আয়কর আধিকারিকদের মতে, বিবিসিকে একটি সংশোধিত ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে বা আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। বিবিসি ইন্ডিয়াকে বকেয়া পরিশোধ করতে হবে এবং জরিমানা দিতে হবে, যা কয়েক কোটি টাকা হতে পারে।
জেনে রাখা ভালো আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি এবং মুম্বাইতে বিবিসি ইন্ডিয়ার অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল। বিবিসি ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা এবং ভারতের উপর একটি দুই-অংশের তথ্যচিত্র প্রচার করার কয়েক সপ্তাহ পরে এই সার্চ অপারেশন চালানো হয়। ফলে নিন্দায় সরব হয় বিরোধীরা।
আয়কর দফতরের আধিকারিকরা তখন বলেছিলেন যে মুনাফা এবং আয় দেখানো রিপোর্টে অসঙ্গতি রয়েছে। বিবিসির ভারতে অপারেশনের স্কেলের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
কংগ্রেস তখন বিবিসির অফিসে তল্লাশির নিন্দা জানিয়েছিল এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের 'স্বৈরাচারীতা ও একনায়কত্ব'-এর লক্ষণ বলে অভিহিত করেছিল। সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলি তল্লাশিকে 'আদর্শগত জরুরি অবস্থা' ঘোষণা বলে অভিহিত করেছিল।
এদিকে, জানা গিয়েছে আয়কর বিভাগ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিবিসিতে একটি কর সমীক্ষা চালিয়েছিল, যেখানে ২০১৬ সাল থেকে কম কর দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। বিবিসি এখন স্বীকার করেছে যে তারা ২০১৬ সাল থেকে কম কর পরিশোধ করেছে।
যদি মিডিয়া রিপোর্টগুলি বিশ্বাস করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে BCC শুধুমাত্র কম ট্যাক্স দেওয়ার কথা স্বীকার করেনি বরং প্রায় ছয় বছর অর্থাৎ ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তার কর ফাঁকির জন্য ৪০ কোটি টাকা খরচ করতেও সম্মত হয়েছে।