সংক্ষিপ্ত
কাবুলের এক বহুজাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত বাঙালি কন্যা সোহিনী সরকার। প্রাণ হাতে নিয়ে কার্যত ফিরলেন দেশে।
কাবুলের (Kabul) এক বহুজাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত বাঙালি (Bengali NGO Worker) কন্যা সোহিনী সরকার। প্রাণ হাতে নিয়ে কার্যত ফিরলেন দেশে। তিনি জানিয়েছেন (experience), কাবুলের পরিস্থিতি ভয়াবহ। যেভাবে তিনি ফিরেছেন, হয়তো আর একটু দেরি করলে সব শেষ হয়ে যেত। চোখের সামনে তাঁকে ছেড়ে আসতে হয়েছে প্রায় ২০০ জন সহকর্মীকে, যাঁদের ভবিষ্যত তিনি জানেন না। য়াঁদের সঙ্গে তিনি কাজ করেন, যাঁদের জন্য তিনি কাজ করেন, তাঁদের কোনও খোঁজ নেই।
১৪ই অগাষ্ট থেকেই মেসেজ আসছিল তাঁর কাছে, যে দ্রুত কাজ গোটাতে হবে। তবে তাঁর মন বিশ্বাস করতে চায়নি। তাঁরা ভেবেছিলেন, মার্কিন সেনা যতদিন রয়েছে, ততদিন তালিবান শহরে ঢুকতে পারবে না। কিন্তু বিশ্বাস ভাঙতে ১২ ঘন্টাও লাগল না। তাঁর কথায় জলের স্রোতের মতো হু হু করে তালিবানদের গাড়ি ঢুকতে শুরু করে। ১৫ই অগাষ্টের দিল্লি ফেরার টিকিট হাতে পেয়ে আর দেরী করেননি সোহিনী। প্রাণভয়ে ছুট দিয়েছিলেন কাবুল বিমান বন্দরের দিকে।
১৪ই অগাষ্ট রাত থেকেই গোটা কাবুল শহর অন্ধকার হয়ে যায়। জানা যায় পাওয়ার গ্রিড নষ্ট করে ফেলেছে তালিবানরা। রবিবার সকাল থেকেই জানা যায় তালিবান গোটা শহর ঘিরে ফেলেছে। কাবুলের কোনও ব্যাঙ্কে টাকা নেই। ১০ মিনিটের এয়ারপোর্ট পৌঁছনোর রাস্তায় সেই পরিস্থিতিতে সময় লাগল ঘন্টা দেড়েক। গোটা কাবুল এয়ারপোর্ট জুড়ে মানুষের লম্বা লাইন। প্রাণপনে সাহস নিয়ে কাজ করে চলেছেন এয়ারলাইনসের কর্মীরা। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দেখে কিছুটা সাহস মনে পেয়েছিলেন সেখানকার ভারতীয়রা, যাঁরা কোনওরকমে দেশে ফিরতে চাইছেন।
সোহিনী জানান, বিমানে উঠে বসার পর তিনি দেখেন পিছনে হাজার হাজার মানুষ, যারা সেই বিমানে উঠে পড়তে চাইছেন কোনও ভাবে। তাদের কাছে ভিসা, পাসপোর্ট, কোনও নথিই সেভাবে নেই। রয়েছে শুধু প্রাণভয় আর বাঁচার আকুল ইচ্ছা। বিমানটা ছোট্ট লাফ দিয়ে আকাশে উড়তেই কেঁদে ফেলেছিলেন বিমানের সব যাত্রী। বাঁচার আনন্দে, সহযাত্রীদের ছেড়ে আসার কষ্টে, প্রিয়জনকে পিছনে ফেলে আসার যন্ত্রণা তখন মিলেমিশে একাকার। কাবুল তখন জ্বলছে। আফগান ভূমে তখন শুধুই অস্ত্রের দাপট।