সংক্ষিপ্ত

৩৯ বছর বয়সেও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া যায়, তাও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে! অবাক করলেন বেঙ্গালুরুর এই ব্যক্তি।  

কথায় বলে স্বপ্নপূরণের কোন নির্দিষ্ট সময় হয় না। বেঙ্গালুরু এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সেই প্রবাদবাক্যই সত্যি করে দেখালেন। সমাজের বেশিরভাগ মানুষই যখন মোটামুটিভাবে ৩০ বছর বয়সে পৌঁছেই কোনও একটা নির্দিষ্ট দিকে স্থায়ীভাবে কাজ করার কথা ভাবে, সেখানে ৩৭ বছর বয়সে বেঙ্গালুরুর সতীশ কুমার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে যোগ দিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে।

ভারতীয় সেনায় য়োগ দেওয়ার স্বপ্ন অনেকেরই থাকে। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে অনেকেই কম বয়সে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে না। আর তারপর, বয়স হয়ে গিয়েছে এই চিন্তায় সেই স্বপ্নের সমাধি দিয়ে দেয়। এই সকল ব্যক্তির সামনে কিন্তু নিজেকে অনুপ্রেরণা হিসাবে তুলে ধরেছেন সতীশ কুমার। তাঁর এই অভূতপূর্ব যাত্রার কাহিনি তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন লিঙ্কেডিন-এ। 

"

সতীশ লিখেছেন, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, যুক্তি এবং ইংরেজির লিখিত পরীক্ষার বাধা টপকানোর পর তাঁর ডাক এসেছিল ইন্টারভিউ-এ। তিনি জানতেন এটা নিছকই আনুষ্ঠানিকতা। তবু, আরও যারা ইন্টারভিউ দিতে এসেছিল, তাদের দেখে আত্ম-সন্দেহ শুরু হয়েছিল সতীশের। বেশিরভাগেরই বয়স ৩০ বছরের কম। সেখানে তিনি ৩৯ বছর বয়সী। মনে প্রশ্ন জেগেছিল, স্রেফ বয়সের ভিত্তিতেই তিনি প্রত্যাখ্যাত হবেন না তো? 

ইন্টারভিউ পর্বও অবশ্য বেশ ভালই গিয়েছিল। প্যানেলে ছিলেন, একজন মেজর জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা এবং একজন মনোবিজ্ঞানী-সহ লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তা। কেন তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চান? সেনার অফিসার হয়ে তিনি কি লাভের আশা করছেন? কীভাবে তিনি কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে অবদান রাখতে পারেন? এরকম কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। 

সেই পর্ব পার করার পর ছিল পরিষেবা নির্বাচন বোর্ড বা এসএসবি-র কঠিন শারীরিক পরীক্ষা। ইন্টারভিউ-এর পরই মোট প্রার্থীর সংখ্যা ২০৭৯ থেকে কমে ৮১৬ হয়ে গিয়েছিল। এদেরকে মোট ২০০ টি ব্যাচে ভাগ করা হয়েছিল। ২১-এসএসবি ভোপালে প্রথম দিনে রিপোর্ট করেছিলেন ১৭২ জন পরীক্ষার্থী। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ধরে স্ক্রিনিং টেস্টের পর, সেই সংখ্যা কমে আসে ১৬-য়। পরবর্তী চার দিন ধরে পরীক্ষকরা এই ১৬ জনের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, দল হি,সাবে কাজ করার ক্ষমতা, যুক্তিবোধ, পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতার বিভিন্ন পরীক্ষা, গ্রুপ টাস্ক এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করেন। 

এসএসবির পঞ্চম দিনে ১৬ জন থেকে বাদ পড়েছিলেন ১২ জন। পড়েছিলেন সতীশ-সহ মাত্র চারজন। সেই প্রার্থীদের আরও মূল্যায়নের জন্য সেনা ডাক্তারদের কাছে পাঠানো হয়েচিল। তাদের কঠোর নির্দেশিকার নিক্তিতে চারজনকেই বিভিন্ন কারণে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। তবে তাঁদের নিজ নিজ পছন্দের সামরিক হাসপাতালে সেই প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সতীশ কুমার বেঙ্গালুরুর কমান্ড হাসপাতাল বেছে নিয়েছিলেন। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি মেডিকেল পরীক্ষাতেও পাস করেন। 

আরও পড়ুন - Pakistan - মহিলা টিকটকারকে নিয়ে শূন্যে লোফালুফি, ছিড়ে গেল পোশাক, কলুষিত স্বাধীনতা দিবস

আরও পড়ুন - তালিবানদের উৎখাতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে 'পাঁচ সিংহে'র উপত্যকা - জড়ো হচ্ছে নর্দান অ্যালায়েন্স

আরও পড়ুন - Afghanistan - স্বমূর্তি ধরল তালিবান, প্রকাশ্যে প্রতিবাদীদের উপর চলল নির্বিচারে গুলি, দেখুন

এরপর বিভিন্ন নথি জমা দেওয়া ও পরখ করার পর্ব ছিল। গেজেটেড অফিসার ভেরিফিকেশন, পুলিশ ভেরিফিকেশন, স্টেট ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট ভেরিফিকেশন সমস্ত কিছু শেষ হতে আরও ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ লেগেছিল। তিনি ভেবেছিলেন ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সেনা অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হয়ে যাবেন। তবে সেই চিঠি এসেছিল ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে। ১১8 পদাতিক গ্রেনেডিয়ার্স রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়নে লেফটেন্যান্ট হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে তাঁকে।
 

YouTube video player