Bharat Bandh Today: সারা দেশব্যাপী ভারত বনধের প্রভাব পড়ল কলকাতায়। শিল্পাঞ্চল বাদ দিয়েও মেট্রো সিটিগুলির অবস্থা ঠিক কীরকম ছিল?
Bharat Bandh Today: গোটা দেশব্যাপী ভারত বনধ। একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখেই বামেদের ট্রেড ইউনিয়ন সিআইটিইউ (CITU) এবং কংগ্রেসের ট্রেড ইউনিয়ন আইএনটিইউসি (INTUC) সহ মোট ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ডাকে বুধবার, ৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় (bharat bandh 9 july 2025)।
আর সর্বভারতীয় এই ধর্মঘটের জেরে, এদিন কলকাতার রাস্তায় বন্ধ ছিল প্রায় ৬,০০০ ক্যাব। CITU এবং ছাড়াও INTUC ছাড়াও অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (AITUC), হিন্দ মজদুর সভা (HMS), অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার (AIUTUC), ট্রেড ইউনিয়ন কোঅর্ডিশন সেন্টার (TUCC) ও সেলফ এমপ্লয়েড ওমেনস অ্যাসোসিয়েশন (SEWA) যোগ দেয় এই ধর্মঘটে।
জানা যাচ্ছে, বুধবার সকালে কলকাতার রাস্তা থেকে প্রায় ৬,০০০ ক্যাব কার্যত উধাও। সিটু সমর্থিত ওলা-উবের অ্যাপ ক্যাব অপারেটর্স ইউনিয়নের সচিব মহম্মদ মনু জানিয়েছেন, “আজ প্রায় ৫০০০-৬০০০ অ্যাপ ক্যাব রাস্তায় নেই। সবাই ধর্মঘটে।"

গ্রামের কৃষক, ক্ষেতমজুর এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এই ধর্মঘট
তবে শুধু কলকাতায় নয়। রাজ্যের নানা প্রান্তে এবং দেশেরও একাধিক প্রান্তে ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা গেল। যাদবপুরে যেমন সকালে মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা এবং সেখানে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন তারা। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন ধর্মঘটীরা। বেলঘরিয়াতে রেল অবরোধও করা হয়। কলেজস্ট্রিটে রীতিমতো পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় আন্দোলনকারীদের। কার্যত পুলিশ ভ্যান ঘিরে ধরে প্রতিবাদ চলে।
ওদিকে গড়িয়াতে SFI-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য বাম নেতারা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে SFI-এর তরফ থেকে পিকেটিং করা হয়।
দেশের নানা প্রান্তে ধর্মঘটের প্রভাব

তামিলনাড়ুতে ভেল প্ল্যান্টে ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, চণ্ডীগড়েও ধর্মঘটের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। কেরালাতে রীতিমতো ব্যাপক আকার নেয় এদিনের ভারত বনধ। গোটা দেশজুড়ে বিভন্ন ক্ষেত্র মিলিয়ে এই ধর্মঘটে প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ এই ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, প্রায় ২৭ লক্ষেরও বেশি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী অংশ নেন এই ধর্মঘটে।
এছাড়াও গুজরাতের জামনগর থেকে শুরু করে কর্ণাটকের কয়লা খনি কিংবা পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত ফারাক্কার সিমেন্ট কারখানা থেকে শুরু করে হায়দ্রাবাদের চারমিনার কারখানা, বহু জায়গায় এদিন ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ধর্মঘটের। এমনকি, ব্যাঙ্ক কর্মীদের বড় অংশ এই ধর্মঘটে শামিল হন। তুতিকোড়িন বন্দরে রীতিমতো স্লোগান দিতে দিতে বনধ পালন করেন শ্রমিকরা।

এদিন ধর্মঘটের মারাত্মক প্রভাব পড়ে দেশের কয়লা খনিগুলিতে। বিভিন্ন রাজ্যের পরিবহণ শিল্পের ক্ষেত্রেও বনধের প্রভাব ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর সামনে এসেছে। দেশের সম্পদ বাঁচানোর দাবিকে সামনে রেখে তারা এই ধর্মঘটের ডাক দেন। তাছাড়া রেল, ব্যাঙ্ক, বীমা, খনি এবং বন্দর বিক্রি করার বিরোধিতা জানিয়েও এই বনধে তারা শামিল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা। প্রত্যেকটি ট্রেড ইউনিয়নের দাবি, কোনওভাবেই কাজের সময় ৮ ঘণ্টার বেশি করা যাবে না এবং সরাসরি তারা শ্রম কোড লাগু করার বিরোধিতা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী পদে নিয়োগের দাবি এবং সরকারি সমস্ত শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করার দাবিও উঠে এসেছে। এই সবকিছুকে সামনে রেখেই ধর্মঘট হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, গিগ কর্মীদের অ্যাক্সিডেন্টাল বেনিফিট সহ একাধিক দাবিকে সামনে রেখে এই ভারত বনধের ডাক দেইয়া হয়। সেইসঙ্গে, বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজের নিরাপত্তা সহ একাধিক দাবি ছিল তাদের ধর্মঘটের লিফলেটে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
