সংক্ষিপ্ত

রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা ঘিরে তৈরি হয়েছে অনেক বিতর্ক। কিন্তু কংগ্রেস কি এই বিশাল পদযাত্রার ভার বহন করতে পারবে। কারণ এখনও পর্যন্ত কোনও ফোকাস নেই কংগ্রেসের।

ভারত জোড়ো যাত্রা- মাত্র ১৫০ দিনে ৩ হাজার ৫৭০ কিলোমিটার পদযাত্রার লক্ষ্য নিয়ে রাস্তায় নেমেছে কংগ্রেস। এখনও পর্যন্ত যার প্রধান মুখ রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের প্রাক্তন ও বর্তমান সভাপতি সনিয়া গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে এই পদযাত্রায় উপস্থিত হলেও রাহুল গান্ধীই এখনও পর্যন্ত পদযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ। কন্যাকুমারিকা থেকে জম্মু ও কাশ্মীর পর্যন্ত হবে এই পদযাত্রা। ৭ সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ু থেকে শুরু হয়েছিল এই পদযাত্রা। তামিলনাড়ু ,কেরলে কংগ্রেসের সরকার না থাকলেও তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে পদযাত্রা যখন বিজেপি শাসিত কর্নাটকে প্রবেশ করে তখন থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

যদিও কর্নাটক রাহুল গান্ধীর জনসাভায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতারা। কিন্তু রাহুল গান্ধীর এই পদযাত্র যতই উত্তর ভারতের দিকে আসতে থাকে ততই চওড়া হতে থাকে বিতর্কের মুখ। সাভারকার থেকে মেধা পাটেকর। বিতর্কের সঙ্গী একাধিক নাম। অন্যদিকে বলিউডের প্রাক্তন অভিনেতা - অভিনেত্রীরা কংগ্রেসের এই যাত্রায় সামিল হওয়াতেও শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। বিজেপির একাংশের অভিযোগ কংগ্রেসের পদযাত্রায় রাহুল গান্ধীর পাশে হাঁটার জন্য বলিউডের অভিনেতাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। যদিও কংগ্রেস অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

যাইহোক রাহুল গান্ধীর বীরসাভারকারকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। কিন্তু তারপরেও বিতর্ক থামেনি। যদিও রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন মহাত্মা গান্ধীর প্রপ্রৌত্র তুষার গান্ধী। তিনি বলেছেন বীরসাভারকার শুধু যে ব্রিটিশদের সহযোগিতা করেছিলেন এমনটা নয়. তিনি নাথুরাম গডসেকেই পিস্তল কিনতে সহযোগিতা করেছিলেন। তবে রাহুল গান্ধীও মহারাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে বীরসাভারকারকে নিয়ে মন্তব্য করেছে। একাংশের মতে এতে মারাষ্ট্রের বাসিন্দাদের জাতীয়তাবাদী আস্মিতায় আঘাত লেগেছে। মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস- শিবসেনা জোট ভাঙার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু তারপরেও বীরসভারকার নিয়ে নিজের মন্তব্য অনড় রাহুল গান্ধী। সাংবাদিক বৈঠকে পিছেয়ে না এসে সাভারকারের লেখা প্রমাণ হিসেবে পেশ করেছেন। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যকে গুজরাট নির্বাচনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছে বিজেপি।

অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের রাহুল গান্ধীর সঙ্গী হয়েছিলেন মেধা পাটেকর। তিনি নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের নেত্রী। তাঁর আন্দোলনের কারণে ও মামলার কারণে প্রায় ৪০ বছর দেরী হয়েছিল নর্মদা বাঁধ প্রকল্পের। এই বিষয়টিতেও বিজেপি হাতিয়ার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাম করে রাহুল গান্ধী এই বিষয় নিয়ে একাধিক জনসভা থেকে আক্রমণ করেছেন। রাহুল যখন গুজরাটে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেননি তখনও তিনি গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেকটা না থেকেও থাকার মত বিষয়।

দেশের বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি-সহ একাধিক বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি কংগ্রেসের লক্ষ্য এই যাত্রার মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচার করা। আর সেই কারণে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে নিয়েই এই পদযাত্রা। এই যাত্রায় কংগ্রেস কিছুটা হলেও প্রচারের আলোয় এসেছে। কিন্তু কংগ্রেসের কোনও ফোকাস না থাকায় পদযাত্রা কতটা ভোটবাক্সে ফল দেবে তা নিয়ে কংগ্রেস নেতারাই রীতিমত সন্ধিহান। তবে এই যাত্রা রাহুল গান্ধীকে রাজনীতির ময়দানে আরও অনেক বেশি সচেতন করে দিল বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুনঃ

পাকিস্তানের ড্রোনের প্রভাব কমলেও সতর্ক রয়েছে বিএসএফ, শীতকালে তুরাষপাতের কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত সীমান্তে

'প্রধানমন্ত্রী মোদীকে খুনের ছক কষছে দাউদ', হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি বার্তা পেল মুম্বই পুলিশ

ভারত জোড়ো যাত্রা থেকে বিরতি, গুজরাটে প্রথম জনসভাতে আদিবাসী ভোটের দিকে নজর রাহুল গান্ধীর