বিহার নির্বাচন ২০২৫-এ ২৪ অক্টোবর একটি রাজনৈতিক সুপার ডে হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চারটি জেলায় সমাবেশ করবেন। এনডিএ উন্নয়নের উপর জোর দেবে, অন্যদিকে বিরোধীরা বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আক্রমণ করবে।
বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ এখন তুঙ্গে। মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হতেই ভোটের ময়দান জমে উঠেছে এবং প্রতিটি দল ভোটারদের নিজেদের পক্ষে টানতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই রাজনৈতিক আবহের মধ্যেই ২৪ অক্টোবর বিহারের রাজনীতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন হতে চলেছে, যেদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একসঙ্গে রাজ্যের মাটিতে নামবেন।
২৪ অক্টোবর ‘ডাবল পাওয়ার ডে’: চার জেলায় সমাবেশের গর্জন
তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৪ অক্টোবর সমস্তিপুর এবং বেগুসরাইতে দুটি বড় জনসভায় ভাষণ দেবেন, অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সিওয়ান এবং বক্সারে জনগণের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। এটিকে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের একটি বড় শো-ডাউন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদীর প্রথম সভা হবে কর্পূরী ঠাকুরের মাটি সমস্তিপুরে, যা রাজনৈতিকভাবে 'সামাজিক ন্যায়' এবং 'উন্নয়ন'-এর ভারসাম্যের একটি বড় বার্তা দেয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর ফোকাসে থাকবে 'উন্নয়ন' এবং 'ডবল ইঞ্জিন সরকার'
সূত্র অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সভাগুলিতে এনডিএ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে কেন্দ্রে রাখবেন। তিনি রাস্তা, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, নারী सशക്തীকরণ এবং আইন-শৃঙ্খলার মতো বিষয় নিয়ে জনগণের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। এর পাশাপাশি, তিনি বিরোধী মহাজোটকেও আক্রমণ করতে পারেন, বিশেষ করে দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র এবং শাসনের ব্যর্থতা নিয়ে।
অমিত শাহের পশ্চিমী মিশন: সিওয়ান-বক্সারে সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাগুলি বিহারের পশ্চিমাঞ্চলে হবে, যেখানে বিজেপি রাজপুত এবং ভূমিহার অধ্যুষিত ভোট ব্যাংকের উপর নজর দিচ্ছে। শাহ এর আগেও অনেক জেলায় সমাবেশ করেছেন এবং এখন তিনি মাত্র সাত দিনের মধ্যে আবারও মাঠে নামছেন। বিজেপি সূত্রের মতে, শাহের সমাবেশগুলি এনডিএ-র ঐতিহ্যবাহী ভোটারদের মধ্যে উদ্দীপনা জাগাবে।
এনডিএ সর্বশক্তি দিয়ে নেমেছে, বুথ থেকে মঞ্চ পর্যন্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন
বিজেপি এবং জেডিইউ উভয় দলই এই সমাবেশের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মঞ্চ তৈরি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জনসমাগম করার দায়িত্ব কর্মীদের দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য পরিষ্কার, মোদী ও শাহের সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী হাওয়া পুরোপুরি এনডিএ-র পক্ষে নিয়ে আসা।
মহাজোটেরও পাল্টা জবাব তৈরি
অন্যদিকে, বিরোধী মহাজোটও পিছিয়ে নেই। ২৩ অক্টোবর পাটনায় তেজস্বী যাদব, অজিত শর্মা এবং অন্যান্য নেতাদের একটি সাংবাদিক সম্মেলন হওয়ার কথা। তেজস্বী ইতিমধ্যেই "বিহার অধিকার যাত্রা"-র মাধ্যমে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং নারী সুরক্ষার মতো বিষয় নিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করেছেন। নির্বাচনী লড়াই এখন পুরোপুরি সরাসরি হতে চলেছে, তেজস্বী বনাম মোদী-শাহ।
বিহারের রাজনীতিতে ২৪ অক্টোবর কি 'টার্নিং পয়েন্ট' হতে পারে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২৪ অক্টোবরের সমাবেশগুলি বিহার নির্বাচনের গতিপথ নির্ধারণ করতে পারে। একদিকে এনডিএ তার "ডবল ইঞ্জিন উন্নয়ন মডেল" জনগণের সামনে তুলে ধরবে, অন্যদিকে বিরোধীরা বেকারত্ব এবং বৈষম্যের মতো বিষয়গুলিতে নিজেদের মাটি শক্ত করার চেষ্টা করবে। আগামী কয়েকদিন ঠিক করে দেবে বিহারের মানুষ কার ডাকে সাড়া দেয় - 'মোদীর উন্নয়ন সমাবেশ' নাকি 'তেজস্বীর অধিকার যাত্রা'।


