সংক্ষিপ্ত

  • উত্তর প্রদেশে যোগী সরকারের নতুন অস্বস্তি
  • সরকারের বিরুদ্ধে ধরনায় দলেরই বিধায়ক
  • উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার মধ্যেই ধরনায়
  • বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে সমর্থন দলের আরও কিছু বিধায়েকের
     

এমনিতেই নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে লখনউতেও বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে। তার মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথের অস্বস্তি বাড়িয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই ধরনায় বসলেন দলের এক বিধায়ক। তবে নিজের দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ওই বিধায়কের ক্ষোভের পিছনে নাগরিকত্ব আইনের কোনও সম্পর্ক নেই। নন্দকিশোর গুরজার নামে ওই বিধায়কের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি শাসিত সরকারই বিধানসভার মধ্যে তাঁকে হেনস্থা করছে।

লোনি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক নন্দকিশোর গুরজার সোমবার বিধানসভা চলাকালীন গাজিয়াবাদের জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে অধিবেশন চলাকালীন বক্তব্য রাখতে যান। তখনই পরিষদীয় মন্ত্রী সুরেশ খন্না তাঁকে বসে পড়তে বলেন। এতেই রেগে যান ওই বিধায়ক। সুযোগ বুঝে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক এবং বিরোধী দলনেতা রাম গোবিন্দ চৌধুরী ওই বিজেপি বিধায়ককে সমর্থন জানান। নন্দকিশোর গুজারকে যাঁতে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয়, সেই দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা। অন্যান্য বিরোধী বিধায়করাও একই দাবি জানাতে থাকেন। 

যদিও অধ্যক্ষ হৃদয় নারায়ণ দীক্ষিত বিক্ষুব্ধ ওই বিজেপি বিধায়ককে বক্তব্য রাখার অনুমতি দেননি। এর পরই হইহট্টগোলের মধ্যে অধিবেশন মুলতবি করে দেওয়া হয়। 

ঘটনার প্রতিবাদে অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই ধরনায় বসেন বিজেপি বিধায়ক নন্দকিশোর গুরজার। সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে বিজেপি-রই আরও বেশ কিছু বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। বিরোধী দলের বিধায়করাও বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে একজোট হন। বিধানসভার মধ্যে 'বিধায়ক একতা জিন্দাবাদ' বলে স্লোগান ওঠে। সবমিলিয়ে একশোরও বেশি বিধায়ক এই বিক্ষোভে সামিল হন বলে খবর। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাজির হন উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা। তিনি দলের বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাঁরা উপ মুখ্যমন্ত্রীর কথাও শোনেননি। বাধ্য সেখান থেকে ফিরে যান দীনেশ শর্মা। 
এর পর নন্দকিশোর গুরজার- সহ অন্যান্য বিধায়করা বিধানসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁরা দাবি করেন, গাজিয়াবাদের যে সরকারি আধিকারিকরা নন্দকিশোর গুরজার এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা করেছেন, তাঁদেরকে বিধানসভায় ডেকে পাঠিয়ে পদক্ষেপ করা হোক। শেষ পর্যন্ত অধ্যক্ষের মৌখিক আশ্বাসে ধরনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন বিধায়করা। তবে অভিযুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে খবর। তিনি এখন ঝাড়খণ্ডে ভোট প্রচারে ব্যস্ত। 

নন্দকিশোর গুরজারের অভিযোগ, একজন ফুড সেফটি ইন্সপেক্টর-কে হেনস্থা করার অভিযোগে তিনি এবং তাঁর কয়েকজন অনুগামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে গাজিয়াবাদ পুলিশ। তাঁর এক অনুগামীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এর পর গত ২৯ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখে গুরজার অভিযোগ করেন, তাঁর দলের নেতারাই চক্রান্ত করে তাঁর বদনাম করতে চাইছেন। প্রাণনাশের আশঙ্কা করে তাঁকে জেল পাঠানোর জন্যও মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন ওই বিজেপি বিধায়ক, যাতে জেলে গিয়ে তিনি নিরাপদ বোধ করেন। এই চিঠি লেখার পরেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে শো কজ করে।