ধানবাদের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় মিলেছিল ঝাড়খণ্ডের বিচারক উত্তম আনন্দের দেহ। প্রথমে দুর্ঘটনা মনে করা হলেও সিসিটিভির ফুটেজ ঘুরিয়ে দিল ঘটনার মোড়, যা নিয়ে উত্তাল হল সুপ্রিম কোর্ট। 

বুধবার ধানবাদের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় মিলেছিল উত্তম আনন্দ নামে ধানবাদ জেলা আদালতের এক বিচারকের দেহ। প্রথমে দুর্ঘটনাই তাঁর তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছিল, কিন্তু, সিসিটিভির ফুটেজ একেবারে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে এই ঘটনার। যাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি টেম্পো দিয়ে তাঁকে ধাক্কা মেরে হত্যা করা হয়েছে। আর এঊই ঠান্ডা মাথায় করা হত্যা নিয়েই বৃহস্পতিবার উত্তাল হল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা বলেছেন এই বিষয়ে তিনি ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং এই মামলাটির দিকে নজর রাখছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। 

বুধবার ভোরে মর্নিং ওয়াক করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বিচারপতি উত্তম আনন্দ। সকাল ৭টা বেজে যাওযার পরও তিনি না ফেরায় তার পরিবার পুলিশে যোগাযোগ করেছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিচারপতিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল ধামবাদের এক হাসপাতালে। পুলিশ জানতে পেয়েছিল, বিতচারপতির বাড়ি থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি। এক ব্যক্তি তাঁকে ওই অবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, তার আগেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। এর থেকেই তদন্তকারীরা ভেবেছিলেন, সম্ভবত, ভোরবেলা কোনও গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে গিয়েছিল। 

ারও পড়ুন - অবৈধ বালি পাচারের পর্দা ফাঁস, কাঠগড়ায় পুরুলিয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি

আরও পড়ুন - কোভিড আবহেই রমরমিয়ে মধুচক্রের ঠেক, পুলিশের জালে ২ মহিলা পান্ডা সহ ২১

আরও পড়ুন - বিধাননগর ছিনতাইকাণ্ডে পুলিশের জালে মূল পান্ডা, ধৃতকে আজই আদালতে তুলবে পুলিশ

পুরো ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ভোর পাঁচটার দিকে নির্জন রাস্তার এক ধার দিয়ে যখ ওই বিচারক দৌড়াচ্ছিলেন, একটি টেম্পোটি হঠাৎ দিক বদল করে গতি বাড়িয়ে সরাসরি তাঁর দিকে ধেয়ে যায়। টেম্পোর ধাক্কায় বিচারক রাস্তার ধারে ছিটকে পড়লে, সেটি তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে, টেম্পোটি বিচারক উত্তম আনন্দকে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই আঘাত করেছিল। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, বিচারককে ধাক্কা মারার কয়েক ঘন্টা আগেই ওই গাড়িটি চুরি করা হয়েছিল। 

Scroll to load tweet…

সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সিসিটিভি ফুটেজের ক্লিপটি ছড়িয়ে পড়তেই এই বিষয়ে আরও তদন্তের দাবি উঠেছে। বৃস্পকতিবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চের সামনে ঘটনাটি তুলে ধরে আইনজীবী বিকাশ সিং একে 'বিচার বিভাগের উপর নির্লজ্জ আক্রমণ' বলে বর্ণনা করে ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। কারণ এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় পুলিশেরও যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ধানবাদ শহরে বেশ কয়েকটি মাফিয়া সংক্রান্ত মামলার রায় দিয়েছিলেন নিহত বিচারপতি উত্তম আনন্দ। সম্প্রতি দু'জন মাফিয়ার জামিনের আবেদনও নাকচ করে দিয়েছিলেন এই সাহসী বিচারপতি। কাজেই এই হত্যার পিছনে মাফিয়া চক্রের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

"

YouTube video player