সংক্ষিপ্ত

দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যেই এই রাজ্যগুলিতে বিশেষ টিম পাঠিয়েছে।

একে করোনায় রক্ষে নেই, তায় ডেঙ্গু দোসর। দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গু (Dengue) আক্রান্তের সংখ্যা। এই রাজ্যগুলি ছাড়াও ডেঙ্গু সংক্রমণের খবর মিলেছে দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল(two Union territories) থেকেও। ফলে বেশ উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যেই এই রাজ্যগুলিতে (nine states) বিশেষ টিম (high level teams) পাঠিয়েছে। কীভাবে এই ডেঙ্গুর উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, তার পদক্ষেপ করতেই টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত বলে খবর। 

দিল্লিতে পয়লা নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্যের নেতৃত্ব এই সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টিম পাঠানো হয় হরিয়ানা, কেরালা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, দিল্লি এবং জম্মু ও কাশ্মীরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে সমস্ত রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ডেঙ্গুর বেশি প্রকোপ রয়েছে, তাদের সাহায্য করার জন্য। দেশ জুড়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে মোট ১,১৬,৯৯১টি ডেঙ্গুর ঘটনা সামনে এসেছে। 

আগের বছরের এই সময়ে ডেঙ্গুর যে পরিমাণ কেস সামনে এসেছিল, তার থেকে বেশি সংখ্যায় কেস এই বছর দেখা যাচ্ছে। মোট ১৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চলতি বছরে তাদের সর্বোচ্চ ডেঙ্গুর সংক্রমণের খবর দিয়েছে। এই রাজ্যগুলি থেকেই ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত দেশের মোট ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে ৮৬ শতাংশ সংক্রমণের খবর মিলেছে। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে, NVBDCP, NCDC এবং আঞ্চলিক অফিসগুলির বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় দলগুলিকে ৯টি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে যেগুলি সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে বেশি কেস রিপোর্ট করছে। কেন্দ্রের পাঠানো দলগুলিকে ভেক্টর নিয়ন্ত্রণের অবস্থা, কিট এবং ওষুধের প্রাপ্যতা, প্রাথমিক সনাক্তকরণ, কীটনাশকের প্রাপ্যতা এবং ব্যবহার, অ্যান্টি-লার্ভাল এবং অ্যান্টি-অ্যাডাল্ট ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। 

ডেঙ্গুর লক্ষ্মণ

ডেঙ্গু সন্দেহ করা হয় যখন একজন ব্যক্তির খুব বেশি জ্বর (১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হয়। এছাড়াও অন্যান্য উপসর্গ যেমন গুরুতর মাথাব্যথা, পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, চোখের পিছনে ব্যথা এবং গ্রন্থি ফুলে যায়। যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তবে ব্যক্তি অসুস্থতা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে ডেঙ্গুর জটিল পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারে। জটিল পর্যায়টি তীব্র পেটে ব্যথা, অবিরাম বমি, মাড়ি থেকে রক্তপাত, দ্রুত শ্বাস, ক্লান্তি এবং বমিতে রক্ত ​দ্বারা চিহ্নিত করা যেতে পারে।

সেপ্টেম্বর মাসেই কেন্দ্র জানিয়েছিল করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যে এবার চোখ রাঙাচ্ছে সেরোটাইপ ২ ডেঙ্গু । ইতিমধ্যেই দেশের ১১টি রাজ্যে ছড়িয়েছে এই রোগ। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। এই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোভিড -১৯ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আলোচনা হয়। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের একটি বিবৃতি জানায়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব ১১টি রাজ্যে সেরোটাইপ -২ ডেঙ্গুর পরিস্থিতিকে তুলে ধরেন। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র নয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছে। বৈঠকে স্বাস্থ্য সচিব  রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেন যে, রোগীদের প্রাথমিক সনাক্তকরণ, জ্বর হেল্পলাইন চালু করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার কিট, লার্ভিসাইড এবং ওষুধের পর্যাপ্ত মজুত করতে হবে, দ্রুত তদন্ত এবং জ্বর চিহ্নিত করণ, কন্টাক্ট ট্রেসিং, ভেক্টর নিয়ন্ত্রণের মতো জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য দ্রুত মেডিকেল টিম তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে প্লেটলেটের পর্যাপ্ত মজুত বজায় রাখার জন্য ব্লাড ব্যাংককে সতর্ক করে দিতে হবে।